উল্টে যাওয়া সেই বাস। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
রেষারেষি শুরু হয়েছিল তপসিয়ার পঞ্চান্নগ্রাম থেকে। সায়েন্স সিটি পেরোনোর পরে গতি আরও বেড়ে যায়। এর পরেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অজ্ঞাতপরিচয় এক সাইকেল-আরোহীকে পিষে দেয় ওই বাস। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ ই এম বাইপাসের মাঠপুকুর মোড়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানায়, আহত ১৮ জন যাত্রীর মধ্যে তিন জনকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল ও ১৫ জনকে এনআরএসে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিত্সার পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, পঞ্চান্নগ্রাম থেকে শুরু হওয়া রেষারেষি কেন ট্রাফিক পুলিশের নজরে পড়ল না? পরমা আইল্যান্ড, উত্তর পঞ্চান্নগ্রাম এবং পঞ্চান্নগ্রামে ট্রাফিক পুলিশ থাকে। পরমা আইল্যান্ডে কাজ চলছে বলে রাস্তা বন্ধ। ফলে সেখানে গাড়ির গতি বেশি হওয়া সম্ভব নয়। পাশাপাশি, ভিআইপি-দের আসা-যাওয়া থাকায় ওই এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বরাবরই আঁটোসাটো বলে দাবি পুলিশের।
পুলিশ জানায়, বারুইপুর-বারাসত রুটের একটি বাস বারাসত যাওয়ার সময়ে একই রুটের অন্য একটি বাসের সঙ্গে রেষারেষি শুরু করে। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি এক সাইকেল-আরোহীর উপরে উল্টে যায়। দরজা চাপা পড়ে ৫০ জন যাত্রী আটকে পড়েন। পুলিশ ১৫ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে কাচ ভেঙে তাঁদের উদ্ধার করে। বাসচালক ও খালাসি পলাতক। বাসের এক যাত্রী অনিমেষ মাইতি জানান, রুবি থেকেই বাসটি রেষারেষি করছিল। সায়েন্স সিটি পেরোনোর পরে আচমকা গতি বাড়িয়ে দেয়।
অনিমেষবাবুর দাবি, বাইপাসে উঠেই বাসটি প্রথমে একটি ছোট গাড়িকে ধাক্কা মারে। এর পরেই সামনের বাসটিকে টপকাতে গিয়ে বেসামাল হয়ে রাস্তার পাশের রেলিংয়ে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। মায়ের সঙ্গে ওই বাসে ছিল সাত বছরের আনারুল বৈদ্য। তার মা আনোয়ারা বেগমের চোখে কাচ ফুটে যায়। পরে অস্ত্রোপচার করে তা বার করা হয়। কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক) ভি সলোমন নিসাকুমার বলেন, “রেষারেষির খবর পাইনি। তদন্ত হচ্ছে। প্রয়োজনে অম্বেডকর সেতু, আইটিসি-র সামনে এবং ভিআইপি বাজারের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে।”