লাইনে ‘ঝাঁপ’ বন্ধ করতে তথ্যচিত্র তৈরির পথে মেট্রো

এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশনে ট্রেনের জন্য বহুক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছেন এক তরুণী। প্ল্যাটফর্মের চেয়ারে বসে রয়েছেন আরও কয়েক জন যুবক। কিন্তু তরুণীর হাবভাব দেখে তাঁদের কিছু একটা মনে হচ্ছিল। নজর রাখছিলেন তাঁরা। আচমকাই দমদমমুখী ট্রেন ঢুকছে বুঝতে পেরে চেয়ার থেকে উঠে পড়লেন ওই তরুণী।

Advertisement

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৪ ০৫:০৫
Share:

চলছে শ্যুটিং। রবিবার, মেট্রোর প্ল্যাটফর্মে। —নিজস্ব চিত্র।

এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশনে ট্রেনের জন্য বহুক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছেন এক তরুণী। প্ল্যাটফর্মের চেয়ারে বসে রয়েছেন আরও কয়েক জন যুবক। কিন্তু তরুণীর হাবভাব দেখে তাঁদের কিছু একটা মনে হচ্ছিল। নজর রাখছিলেন তাঁরা। আচমকাই দমদমমুখী ট্রেন ঢুকছে বুঝতে পেরে চেয়ার থেকে উঠে পড়লেন ওই তরুণী। তার পরে এক দৌড়ে ছুটে গেলেন প্ল্যাটফর্মের ধারে। ওই যুবকদের এক জন সেটা বুঝতে পেরে দৌড়ে গিয়ে তরুণীটিকে ধরে কোনও মতে টেনে সরিয়ে আনলেন। ছুটে এল আরপিএফ ও মেট্রো রেলের পুলিশ। তার পরে তরুণীকে নিয়ে যাওয়া হল হাসপাতালে।

Advertisement

এই ঘটনা রবিবার ঘটেনি। তা হলে? এটা হল একটি তথ্যচিত্রের দৃশ্য। রবিবার সকালে তারই শ্যুটিং হল মেট্রো স্টেশনে। মেট্রোতে যে হারে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে, তা মাথায় রেখে মেট্রোর তরফে যাত্রীদের সচেতন করার জন্য এই তথ্যচিত্রটি তৈরি করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহ থেকে প্রতিটি স্টেশনে মেট্রোর টিভিতে এই ছবি দেখানো হবে। মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, ছবিটি পরিচালনা করছেন প্রতীপ রায়।

শুধু আত্মহত্যা নয়, শ্লীলতাহানি, সিগারেট খাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়েও ছোট ছোট এক-দু’মিনিটের ছবির শ্যুটিং করা হয়েছে। সবই দেখানো হবে মেট্রো স্টেশনগুলিতে। বিভিন্ন বৈদ্যুতিন মাধ্যমেও যাত্রীদের সচেতনতা বাড়াতে দেখানো হবে এই ছবিগুলি। এ দিন শু্যটিং হয়েছে দমদম, এসপ্ল্যানেড ও কবি সুভাষ স্টেশনে। এমনকী, সুড়ঙ্গে ট্রেন আটকে গেলে যাত্রীদের মধ্যে যে আতঙ্ক তৈরি হয়, তা কমাতেও তৈরি হয়েছে একটি গল্প। তাতে দেখানো হয়েছে, সুড়ঙ্গে ট্রেন আটকে গেলে মেট্রো কর্তৃপক্ষ কী ভাবে সহজে ও নিরাপদে যাত্রীদের উদ্ধার করতে পারেন।

Advertisement

মেট্রো সূত্রে খবর, মেট্রোর শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ২৬০ জন যাত্রী লাইনে ঝাঁপ দিয়েছেন। তার মধ্যে ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। উদ্ধার করা গিয়েছে ১২৭ জনকে। মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “আরপিএফ, মেট্রো পুলিশের তৎপরতা ও প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে এখন ঝাঁপ দেওয়ার পরে মৃত্যু কমানো গিয়েছে। তবুও ঝাঁপ দেওয়া বন্ধ করা যাচ্ছে না।” বস্তুত, আত্মহত্যার এই চেষ্টাকেই এ বার বন্ধ করতে চাইছে মেট্রো। তাই এ বার এই ধরনের ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। মেট্রো সূত্রে বলা হয়েছে, লাইনে ঝাঁপ দিয়েও যাঁরা বেঁচে যেতেন, এত দিন মানবিকতার খাতিরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হত। কিন্তু এ বার থেকে রেলওয়ে ধারা অনুযায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। তাতে প্রচুর টাকা জরিমানার কথাও বলা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement