সৌরবিদ্যুতের ভাসমান কেন্দ্র শহরে

দেশের মধ্যে প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলায় পথিকৃৎ হতে চলেছে কলকাতা। এমনটাই দাবি এখানকার সৌরবিজ্ঞানীদের। শহরের উপকণ্ঠে নিউ টাউনের স্মৃতি বন উদ্যানের জলাশয়ে বসেছে সূর্য ধরার কল। জলের উপরে উৎপন্ন সৌরবিদ্যুতেই আলো জ্বলছে পার্কে। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘সোলার ভিশন’ পরিকল্পনার হাত ধরেই শুরু হয়েছে এর তোড়জোড়। আগামী সোমবার রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্তের হাতে এই সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হওয়ার কথা।

Advertisement

ঋজু বসু

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:০০
Share:

নিউ টাউনের জলাশয়ে বসেছে সৌরবিদ্যুতের সরঞ্জাম।

দেশের মধ্যে প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলায় পথিকৃৎ হতে চলেছে কলকাতা। এমনটাই দাবি এখানকার সৌরবিজ্ঞানীদের। শহরের উপকণ্ঠে নিউ টাউনের স্মৃতি বন উদ্যানের জলাশয়ে বসেছে সূর্য ধরার কল। জলের উপরে উৎপন্ন সৌরবিদ্যুতেই আলো জ্বলছে পার্কে। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘সোলার ভিশন’ পরিকল্পনার হাত ধরেই শুরু হয়েছে এর তোড়জোড়। আগামী সোমবার রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্তের হাতে এই সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হওয়ার কথা।

Advertisement

পরিবেশ বাঁচাতে বিকল্প বিদ্যুতের সংস্থান করতে সৌরশক্তির উৎপাদনে বেশ কয়েক বছর ধরেই জোর দিচ্ছে কেন্দ্র। মোদী সরকারের জমানায় ঘোষিত লক্ষ্য হল, ২০২২ সালের মধ্যে ৩৪ হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ সৃষ্টি। ২০৩০ সালের মধ্যে এক লক্ষ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনও করতে হবে। কিন্তু এর জন্য জমি দরকার অন্তত পাঁচ লক্ষ একর।

কোথায় মিলবে এত জমি? এ রাজ্য তথা গোটা দেশে জমির আকালের কথা মাথায় রাখলে জলেই রয়েছে মুশকিল-আসান। সৌরবিজ্ঞানীদের মতে, জলের সংস্পর্শে তাপমাত্রা কম থাকায় সৌরবিদ্যুৎ তৈরিতে সুবিধা হয়। এই প্রকল্প হলে গ্রীষ্মে জলাশয়ের রুখা-সুখা হয়ে ওঠা রুখতে বা সার্বিক রক্ষণাবেক্ষণেও সুবিধে। এ রাজ্যের ‘গ্রিন এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’র কর্তা শান্তিপদ গণচৌধুরীর দাবি, “নিউ টাউনের প্রকল্পটিই দেশের প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র। শীতের দেশে জল বরফ হয়ে যায়, সেখানে এমন প্রকল্প সম্ভব নয়। এর আগে শুধু জাপান ও অস্ট্রেলিয়ায় এমন কাজ হয়েছে।” একটা চ্যালেঞ্জ ছিল, জলের ঝাঁকুনির মধ্যে সৌরবিদ্যুৎ তৈরির সরঞ্জাম থিতু করে বসানো। তাই জাহাজ বা লঞ্চের নোঙরের মতো ব্যবস্থাও হয়েছে। ‘ক্যানাল টপ সোলার পাওয়ার প্রোজেক্ট’-এর কিছু প্রয়াস অবশ্য এ রাজ্যেও দেখা যাচ্ছে। নিউ টাউনে স্থানীয় প্রশাসন ইকো-ট্যুরিজম পার্কের কাছের জলাশয়ে স্থানীয় খালটি ঢেকে প্রকল্প গড়ে তুলছে। চারপাশে খুঁটি পুঁতে খালের মাথায় সৌরবিদ্যুৎ তৈরির সরঞ্জাম বসেছে। সরকারি সূত্রের খবর, সৌরবিদ্যুতের ভাসমান আঁতুড়ঘরটি অনেক কম খরচে ১৩ লক্ষ টাকায় হচ্ছে। আগামী ২৫ বছর ধরে ফি-বছরে উৎপন্ন হবে এক লক্ষ ২৫ হাজার টাকার বিদ্যুৎ। পরিবেশবন্ধু শক্তি বা গ্রিন এনার্জি প্রকল্পে কিছু করছাড়ও মেলে। তাতে আগামী ছ’বছরেই পুরো খরচ উঠে আসবে।

Advertisement

রাজ্যের নগরোন্নয়ন সচিব দেবাশিস সেনের কথায়, “নিউ টাউনকে পরিবেশবন্ধু সৌরনগরী হিসেবে আমরা দেখতে চাই। এই উদ্যোগে আমরাও হাত বাড়িয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন