ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো নিয়ে নিজেদের বক্তব্যে অনড়ই থাকল রাজ্য সরকার। ফলে এই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ আপাতত বিশ বাঁও জলে।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের থমকে যাওয়া কাজ শুরু করার জন্য সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া। হাওড়া ময়দান থেকে মহাকরণ পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে রাজ্য সরকার-সহ সব পক্ষকে ১৯ ডিসেম্বর বৈঠকে মিলিত হওয়ার কথা বলেছিলেন তিনি। সেই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতেই শুক্রবার ওই বৈঠক হয়। কিন্তু সেখানে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ শুরু করা নিয়ে কোনও রকম সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসেনি।
হাইকোর্টের নির্দেশে কলকাতা মেট্রোরেল কর্পোরেশন, ওই প্রকল্পের ঠিকাদার সংস্থা, বন্দর-কর্তৃপক্ষ, সিইএসসি এবং কলকাতা পুরসভার প্রতিনিধিরা এ দিনের বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু মেট্রোরেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে রাজ্য সরকারের তরফে কর্তারা নিজেদের দেওয়া বিকল্প রুটের প্রস্তাব নিয়েই গোঁ ধরে বসেছিলেন। তাঁদের মতে, ব্রেবোর্ন রোড সংলগ্ন যে এলাকায় মেট্রোর কাজ হওয়ার কথা বলা আছে, সেখানে ৬ মাস ধরে যান চলাচল বন্ধ করে রাখা যাবে না। আবার মেট্রোর তরফে পাল্টা জানানো হয়, রাজ্য সরকার বিকল্প হিসেবে বন্দর-কর্তৃপক্ষের যে জমির কথা বলছে, তা-ও খুব একটা কার্যকর হবে না। কারণ, শুধুমাত্র গঙ্গার তলাটুকুতে কাজ হলে আপাতত মেট্রোর লাইনের কাজে কিছুই সুবিধা হবে না।
দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ থাকার পরে হাওড়া ময়দান থেকে হুগলি নদীর তলা দিয়ে মহাকরণ লাগোয়া এলাকা পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল মেট্রোরেল কর্পোরেশন ও তার ঠিকাদার সংস্থা। কিন্তু তখনও ব্রেবোর্ন রোডে যানজট, হকার সমস্যা-সহ নানা অসুবিধার কথা জানিয়ে আপত্তি তুলেছিল রাজ্য সরকার। তার পরেই বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প রূপায়ণে ব্যক্তিগত স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে সব পক্ষকে এগিয়ে এসে সমস্যার সমাধান করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু এ দিনের বৈঠকেও কাজ শুরুর ব্যাপারে কোনও আশার আলো দেখা যায়নি।
হাওড়া ময়দান থেকে মহাকরণ পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ রূপায়ণে যে জট তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে এর আগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের নির্দেশেও এ ধরনের বৈঠকে অংশ নিয়েছিল সব পক্ষ। জট কাটেনি সেখানেও।