ট্যাক্সির দেখা নেই। পায়ে প্লাস্টার নিয়ে এ ভাবেই অটোয় উঠতে হল এক বৃদ্ধাকে। বুধবার, শিয়ালদহ স্টেশনে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
ফের ট্যাক্সি ধর্মঘটে নাকাল শহরের নিত্যযাত্রীরা। তবে এআইটিইউসি ছাড়া বাকি বিরোধী শ্রমিক সংগঠনগুলি সমর্থন না করায় বুধবারের এই ধর্মঘট তেমন সর্বাত্মক হল না। কোথাও ধর্মঘটীদের সঙ্গে পথে নামা ট্যাক্সিচালকদের অশান্তি বাধল। আর যেখানে ট্যাক্সি চলল, সেখানে ধর্মঘটের সুযোগ নিয়ে যেমন খুশি ভাড়া হাঁকলেন চালকেরা। সব দেখেও মুখ বুজে রইল প্রশাসন।
‘পুলিশি জুলুমের’ বিরুদ্ধে এবং ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে এ দিন এআইটিইউসি ধর্মঘট ডেকেছিল। আর তা ব্যর্থ করতে পথে নামে ‘বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’, ‘প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সিমেন্স অ্যাসোসিয়েশন’-সহ একাধিক সংগঠন। প্রশাসনও সম্পূর্ণ নিরাপত্তার আশ্বাস দেয়। যদিও বাস্তবে শাসক দলের ট্যাক্সি-সংগঠনের নেতারা অভিযোগ করেছেন, ধর্মঘটী চালকেরা গুণ্ডামি করায় ট্যাক্সি রাস্তায় নামিয়েও তুলে নিতে হয়েছে। সংগঠনের নেতা শম্ভুনাথ গুহর দাবি, “আমরা ট্যাক্সি নামিয়েছিলাম। কিন্তু ধর্মঘটীরা ভাঙচুর শুরু করায় ট্যাক্সি কমে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও ধর্মঘট সফল হয়নি।” যদিও লালবাজারের দাবি, পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থাই করা হয়েছিল। কোথাও কোনও ঝামেলার খবর মেলেনি।
এ দিন হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে ট্যাক্সি পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল বলেই দাবি প্রশাসনের। তাদের দাবি, এ দিন ১২০টি সরকারি বাস চলেছে। সকাল ১১টার পর থেকে অবশ্য কিছু জায়গায় ট্যাক্সি বার করা নিয়ে গোলমাল শুরু হয়। শিয়ালদহে একটি ট্যাক্সি ভাঙচুরও হয় বলে অভিযোগ। তার পরেই আর অধিকাংশ চালক ট্যাক্সি নিয়ে রাস্তায় বেরোননি। দুপুরে শিয়ালদহ স্টেশনে দেখা যায়, মাত্র গোটা তিনেক ট্যাক্সি দাঁড়িয়ে। চালকেরা জানান, তাঁরা ট্যাক্সি চালাবেন না। এক চালক বলেন, “আগে জানলে বার হতাম না।” ট্যাক্সি যেতে না চাওয়ায় দুপুরের পর থেকে নিত্যযাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। অনেকেই দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে অটোয় যেতে বাধ্য হন।
বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিমল গুহ বলেন, “ওরা কারও সঙ্গে আলোচনা না করেই ধর্মঘট ডেকেছে।” সিটু-র এক নেতার বক্তব্য, “দাবি-দাওয়া নিয়ে সার্বিক যে ঐক্য তৈরি হয়েছিল, এআইটিইউসি এ ভাবে ধর্মঘটে যাওয়ায় সেটাই ভেঙে গেল।”এআইটিইউসি-র সম্পাদক নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, “এ নিয়ে কিছু বলব না। ধর্মঘট সফল।”