AITC

Kunal Ghosh vs Firhad Hakim: আমি মন্ত্রী হওয়ার জন্য হ্যাংলা নই, পার্থ সম্পর্কে ঠিকই বলেছি, ববিকে তোপ কুণালের

এসএসসি বির্তক নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে বিবৃতি পাল্টা বিবৃতির লড়াইয় নতুন সংযোজন কুণালের ফেসবুক লাইভ। রবিবার তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লাইভে এসে রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদকে আক্রমণ করেন। সেই সঙ্গে শিক্ষাক্ষেত্রের বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে তিনি আগে যে মন্তব্য করেছিলেন সেটা সঠিক ছিল বলেও দাবি করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২২ ১৭:৪২
Share:

ফিরহাদ হাকিমকে জবাব দিলেন কুণাল ঘোষ। ফাইল চিত্র

কুণাল ঘোষ মন্ত্রিসভার কেউ নন বলে শনিবার মন্তব্য করেছিলেন ফিরহাদ হাকিম। তার জবাবে কুণাল ফেসবুক লাইভে দাবি করলেন, তিনি মন্ত্রিত্বের হ্যাংলা নন।

Advertisement

এসএসসি বির্তক নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে বিবৃতি পাল্টা বিবৃতির লড়াইয় নতুন সংযোজন কুণালের ফেসবুক লাইভ। রবিবার তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লাইভে এসে রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদকে আক্রমণ করেন। সেই সঙ্গে শিক্ষাক্ষেত্রের বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে তিনি আগে যে মন্তব্য করেছিলেন সেটা সঠিক ছিল বলেও দাবি করেন।

ফেসবুক লাইভের শুরুতে কুণাল অবশ্যআসানসোল ও বালিগঞ্জের উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীদের হয়ে ভোট চান। সেখানেই তিনি জবাব দেন ফিরহাদ হাকিমকে। কুণাল বলেন, ‘‘২০২১ সালের ভোটে আমি একদিকে সমন পেয়েছি। আরেক দিকে কাঁথিতে দাঁড়িয়ে অধিকারী সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে বক্তৃতা করে গিয়েছি। আমি আমার লড়াই করেছি। আমাকে স্মরণ করাতে হবে না আমি মন্ত্রী নই। আমার কোনও হ্যাংলামি নই। মন্ত্রী হতে না পারলে, যাদের জীবন অসম্পূর্ণ, এসব তাদের দেখাবেন। এসব মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ দেখাবেন না। আমাকে জীবন যা দেখিয়েছে, আমি তাঁর উর্ধে আছি। আমি আনুগত্য দেখিয়েছি। জেলে বসে আমি যেমন লড়াই করেছি, তেমনই আমি মাসে দশ হাজার টাকা চাঁদা দলকে দিয়েছি। ব্যাঙ্ককে নির্দেশ দিইনি চাঁদা দেবেন না। জেল থেকে বেরোনোর পর কেন্দ্রীয় সরকার আমাকে একটি কমিটির চেয়ারম্যান করতে চেয়ে চিঠি দিয়েছিল। সাংসদ হিসেবে চেয়ারম্যান হলে অসুবিধা ছিল না। কিন্তু সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলাম।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে ওঠা যে কোনও অভিযোগের জবাব আমি দেব। যেদিন দেখব আমাকে অতিথি শিল্পী বা ভাড়াটে বক্তা দিয়ে আমাকে ডিফেন্ড করতে হচ্ছে। তার থেকে থুথু ফেলে ডুবে মরা ভাল।’’

Advertisement

সম্প্রতি শিক্ষাক্ষেত্রে কয়েকটি দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তভার গিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। আদালতের এমন নির্দেশ প্রসঙ্গে শুক্রবার তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর পাশে থাকলেও তাঁর কথা থেকে অনেকেই মনে করেছিলেন কুণাল যেন দায় ঠেলে দেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থর দিকে। কুণাল তখন বলেছিলেন, ‘‘দলের মহাসচিব তথা তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিস্তারিত বুঝিয়ে বলতে পারবেন।’’ এর পরেশনিবার ফিরহাদ বলেন, ‘‘কুণাল মন্ত্রিসভার সদস্য নন। আমাদের সব দায়িত্ব যৌথ। আমি সেই মন্ত্রিসভার সদস্য। পার্থদাও মন্ত্রিসভার সদস্য। তাই বিষয়টা পার্থদার একার নয়।’’ ফিরহাদের সেই বক্তব্যেরই জবাব দিতে গিয়ে পাল্টা আক্রমণ শানালেন কুণাল।

ফিরহাদের বক্তব্য প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কুণাল বলেন ‘‘মাননীয় ববি হাকিম, ববিদা একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। তিনি বলেন, কুণাল মন্ত্রিসভার তো কেউ নয়। ফলে কোনও মন্ত্রীর পক্ষে তাঁর দফতরে কী হচ্ছে তা জানা সম্ভব নয়। তিনি পার্থদার পাশে আছেন। আমি ববিদার বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছি। আমি তো বলেছি মন্ত্রিসভার কেউ নই। সরকারের কেউ নই। সেই কারণেই তো আমি বলেছি, রাজনীতির কিছু প্রশ্নের উত্তর আমি দিতে পারি। কিন্তু যেহেতু প্রশাসনিক খুঁটিনাটি রয়েছে তাই পার্থদাই পদ্ধতিগত বিষয়টি নিয়ে বলতে পারবেন। এতে আমি কী দোষ করলাম?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি প্রথমদিন কী বলেছিলাম? এসএসসি নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠছিল, তখন আমি বলেছিলাম, বিষয়টি দলের মহাসচিব তথা তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঠিকঠাক গুছিয়ে বলতে পারবেন। আমি কী ভুল বলেছি? আমি তো সরকারের কেউ নই। দলের তরফ থেকে তো আমি বলছি। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর ভাল কাজ হয়েছে। শিক্ষকরা এক তারিখে বেতন পাচ্ছেন। সব ঠিকঠাক হয়েছে। ৯৮-৯৯ শতাংশ ঠিকঠাক কাজ হচ্ছে। এক দুই শতাংশ কোথাও ভুল, কুৎসা, অপপ্রচার থাকলে তা তিনি সংশোধন করে বলে দেবেন।’’

তিনি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে দোষারপ করেননি দাবি করে কুণাল আরও বলেন, ‘‘আমি পার্থদাকে দোষারোপ করিনি। যে সাংবাদিক বন্ধুরা আমাকে এসএসসি নিয়ে প্রশ্ন করছিলেন তাঁদের বলেছিলাম তিনিই গুছিয়ে বলে দিতে পারবেন। আমি মনে করি, আমি কোনও ভুল কথা বলিনি। এরপর পার্থদা আমায় ফোন করেছিলেন। পার্থদার সঙ্গে আমার কিছু কথা হয়। ঠিক হয় আমি গতকাল পার্থদার বাড়িতে যাব। আমি গিয়েছি। পার্থদা আমার নেতা। বহুদিনের সম্পর্ক তাঁর সঙ্গে। গিয়ে জানতে পারি, পার্থদার এক আত্মীয়ের মৃত্যু হয়েছে। তিনি অন্য একটি বাড়িতে রয়েছেন। আমি পার্থদাকে ফোন করলে তিনি ফোনও ধরেন। জানান আত্মীয়দের সঙ্গে রয়েছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমে দেখলাম আমি নাকি মান ভাঙাতে পার্থদাকে ফোন করেছিলাম। তিনি আমার সঙ্গে দেখা করেননি। সেটা ঠিক নয়। কথা বলে সময় ঠিক হয়েছিল বলেই আমি উত্তর কলকাতা থেকে দক্ষিণ কলকাতায় ঠেঙিয়ে গিয়েছিলাম। নইলে আমার খেয়ে দেয়ে কাজ পড়েনি বাঁশদ্রোনী যাওয়ার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন