ট্রেনে উঠে সংরক্ষিত আসনে বসতে গিয়ে তরুণী দেখেন সেখানে চার যুবক বসে। উঠতে বললে ওই যুবকেরা তরুণীকে যৌন হেনস্তা করেন বলে অভিযোগ। বাধা দিতে গেলে কামরার বাকি যাত্রীদেরও মারধর করা হয়। শুক্রবার রাতে আপ তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেসের ঘটনা। এই ঘটনায় রেল পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের কুমেদপুর স্টেশনে বিক্ষোভ দেখান একদল যাত্রী। ফলে প্রায় ৩০ মিনিট সেখানে আটকে থাকে ট্রেনটি। পরে রেল পুলিশ ও কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। শনিবার সকালে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে অভিযোগ দায়ের করেন ওই তরুণী, তাঁর সঙ্গী যুবক ও এক আক্রান্ত যাত্রী।
রাত সওয়া দশটা নাগাদ মালদহ টাউন স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার পর, এস-৪ কামরায় ওঠেন পুরাতন মালদহের কোর্ট স্টেশনের বাসিন্দা আক্রান্ত ওই তরুণী এবং তাঁর সঙ্গী যুবক। তাঁরা শিলিগুড়িতে চাকরির পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিলেন। তরুণীর অভিযোগ, “আমি ওই যুবকদের উঠে যেতে বললে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও মারধরও করা হয়।’’ তরুণীর সঙ্গী যুবক ও মালদহের আরও এক যাত্রী প্রতিবাদ করলে তাঁদেরও মারধর করা হয়।
প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিট এই হেনস্তা চলার পর, রাত ১১টা নাগাদ ভালুকা স্টেশনে ট্রেনটি পৌঁছলে, স্টেশন থেকে প্রায় ১৫-২০ জনের একটি দল ইট পাথর ছুড়ে ওই কামরায় হামলা চালায়। তার পরেই ওই চার যুবক স্টেশনে নেমে পালায়। ওই ট্রেনে মোট ছ’জন রেল পুলিশকর্মী ছিলেন। তরুণীর অভিযোগ, তাঁদের জানানো হলেও তাঁরা কেউ উপস্থিত হননি।
রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ট্রেনটি কুমেদপুর স্টেশনে পৌঁছতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন আক্রান্ত যাত্রীরা। কর্তব্যরত রেল পুলিশ ও টিকিট পরীক্ষকদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এর জেরে প্রায় ৩০ মিনিট ওই স্টেশনে আটকে থাকে ট্রেনটি। তরুণীর সঙ্গী যুবক বলেন, “কর্তব্যরত রেল পুলিশ সময় মতো ঘটনাস্থলে এলে এ ভাবে দুষ্কৃতীরা হামলা চালাতে পারত না। আমরা চাই ওই দুষ্কৃতী ও রেল পুলিশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হোক।”
কর্তব্যরত টিকিট পরীক্ষক অরবিন্দ কুমার বলেন, “আসনে বসা নিয়ে গোলমাল হয়েছিল। আমি জানতে পেরেই রেল পুলিশকে জানিয়েছি।” রেল পুলিশ সুপার আনাপ্পা ই বলেন, “সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” এ দিন ভালুকা স্টেশনে তদন্ত শুরু করেছেন রেল পুলিশের কর্তারা।