পর পর চার বছর বিধানসভায় গিলোটিনে যাচ্ছে ভূমি দফতরের বাজেট। ক্ষমতায় আসার পর থেকে ওই দফতরের মন্ত্রী স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বামফ্রন্ট সরকারের পতন এবং রাজ্যে পরিবর্তন ঘটিয়ে তৃণমূলের ক্ষমতায় আসা— এই ঘটনাপ্রবাহে জমি আন্দোলনের গুরুত্ব ছিল বিরাট। কিন্তু জমি আন্দোলনে ভর করে ক্ষমতায় আসার পরেও মমতার সরকার কেন বারবার ভূমি দফতরের বাজেট আলোচনা এড়িয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে বহু বার সরব হয়েছে বিরোধীরা। এ বারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে!
বিধানসভার দফাওয়াড়ি বাজেট অধিবেশন শেষ হচ্ছে ১৮ জুন। আগামী সপ্তাহে বিভিন্ন দফতরের বাজেট আলোচনার যে সূচি বুধবার বিধানসভায় বিলি করা হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ভূমি ও ভূমি সংস্কার-সহ ১৬টি দফতরের ব্যয়বরাদ্দ নিয়ে এ বারের অধিবেশনে কোনও বিতর্ক হবে না। পরিভাষায় যাকে বলে ‘গিলোটিনে’ যাওয়া। ভূমি ও ভূমি সংস্কার ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকা আরও দু’টি দফতর— পার্বত্য বিষয়ক এবং তথ্য ও সংস্কৃতি নিয়েও আলোচনা হবে না। বিতর্ক ছাড়াই গিলোটিনে যাচ্ছে পরিবহণ ও ক্রীড়া দফতরের বাজেটও। ওই দুই দফতরের পূর্ণমন্ত্রী মদন মিত্র এখন জেলে। তাঁর দফতরের কাজ দেখভালের দায়িত্ব ফিরহাদ হাকিম ও অরূপ বিশ্বাসের হাতে। তবে তা নেহাতই তাৎক্ষণিক।
রাজ্যে শিল্পের জমি সংস্থানের প্রশ্নে সরকারের অবস্থান কী, তা নিয়ে মঙ্গলবারও শিল্প বাজেটের আলোচনায় সরব হন বিরোধীরা। প্রশ্ন, মদন তামাঙ্গ হত্যা মামলায় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতাদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ায় পাহাড়ে পরিস্থিতি ঘোরালো হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাহাড় নিয়ে আলোচনার সুযোগ ছিল বিধানসভায়। কিন্তু পার্বত্য বিষয়ক দফতরের বাজেট গিলোটিনে যাওয়ায় হবে না।
সরকারি মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, ‘‘প্রতি বারই সময়াভাবে কিছু দফতরের বাজেট গিলোটিনে যায়। এর মধ্যে অন্য উদ্দেশ্য নেই।’’ মুখ্যমন্ত্রীর হাতে-থাকা আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দফতর স্বাস্থ্যের বাজেট নিয়ে ১৭ জুন আলোচনার কথা বিধানসভার সূচিতে জানানো হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য নিয়ে বাজেট-বিতর্কের জবাব মুখ্যমন্ত্রী দেবেন, নাকি প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা স্পষ্ট নয়।