হাজতে থম মেরে রইলেন তৃণমূলের ‘দাদা’ হিম্মত

আদালত থেকে ফিরে লকআপে ঢুকে প্রথম রাতে দাঁতে কিছুই কাটলেন না হিম্মত সিংহ। পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার এনজেপির হাজতে ঢুকে কিছুক্ষণ দেওয়ালে হেলান দিয়ে থম মেরে বসেছিলেন ধৃত জয়প্রকাশ চৌহান ওরফে হিম্মত।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৮ ০২:৪৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

আদালত থেকে ফিরে লকআপে ঢুকে প্রথম রাতে দাঁতে কিছুই কাটলেন না হিম্মত সিংহ। পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার এনজেপির হাজতে ঢুকে কিছুক্ষণ দেওয়ালে হেলান দিয়ে থম মেরে বসেছিলেন ধৃত জয়প্রকাশ চৌহান ওরফে হিম্মত। যিনি তৃণমূলের টিকিটে গত পুরভোটে ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে লড়েছিলেন। ইতিমধ্যে জমি সহ নানা ব্যবসার রমরমার সুবাদে ‘হিম্মত’ হয়ে উঠেছেন অনেকের ‘হিম্মতদা’। সেই ভাইদের কয়েকজন এনজেপি থানার কাছেপিঠে ঘোরাঘুরি ফাঁকে জানালেন, ‘দাদা বরাবর এসিতে থাকতে অভ্যস্ত বলে হয়তো সমস্যা হচ্ছে।’ যদিও এনজেপি থানা সূত্রের দাবি, হিম্মত রাতে না খেলেও তেমন কিছু দাবি করেননি। সোমবার দুপুরে ডাল-ভাত-তরকারি খেয়েছেনই। কয়েক দফায় ওষুধ খেয়েছেন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, লকআপে থাকা অন্য কয়েদিদের সঙ্গে কথা বলেননি হিম্মত। এ দিন সকাল থেকে গরমে শরীর খারাপ লাগছে বলে কয়েকবার তিনি পুলিশকে জানান। পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসককে দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে দেখা গিয়েছে হিম্মত পুরোপুরি সুস্থ। যদিও হিম্মতের কয়েকজন ‘ভাই’ জানান, দাদার বয়স ৫০-এর কাছাকাছি, বাইরের খাবার খান না। কিন্তু, পুলিশ বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, বিশেষ ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে বাইরের খাবার পরীক্ষা করে দেওয়া হয়ে থাকে। সোমবার দুপুরের দিকে থানায় কয়েকজন আত্মীয়া হিম্মতের সঙ্গে দেখা করার আর্জি জানান। পুলিশ অবশ্য হিম্মতের সঙ্গে দেখা হবে না বলে তাঁদের সরিয়ে দেয়।

এ দিন সন্ধ্যায় তদন্তকারীরা তাঁকে এক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, জমির কারবারে হিম্মতের সঙ্গে কারা জড়িত রয়েছে, চম্পাসারি মোড়ের সরকারি জমি দখল করে বাজার বসাতে কত টাকা তোলা হয়েছিল, তা জানার চেষ্টা শুরু করেছেন অফিসারেরা। যদিও হিম্মত বারবার দাবি করেছেন, তিনি নির্দোষ। সরকারি জমির খতিয়ান একজন বাসিন্দার নামে রয়েছে। তিনি কাকে কী বিক্রি করেছেন না রেখে দিয়েছেন তা তিনি জানেন না। পরে বাজারে ঘর কেনা ব্যবসায়ীরা তাঁর নাম জানিয়েছেন শুনে তিনি তা ঠিক নয় বলে দাবি করেছেন। আদালতে তাঁর আইনজীবী সব জানাবেন বলে হিম্মত পুলিশকে জানান।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানান, হিম্মত ব্যবসার মাথা হলেও জংশন-মাল্লাগুড়ি, চম্পাসারি, দুই মাইলে গতিবিধি রয়েছে এমন অন্তত ৪ জন ব্যক্তি তাঁর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। পুলিশ প্রাথমিকভাবে কলেজপাড়ার একজন, পানিট্যাঙ্কি মোড়ের একজন, জংশন এলাকার একজন ও চম্পাসারির একজনের সঙ্গে হিম্মতের ব্যবসা যোগসাজশ, লেনদেনের ব্যাপারে কিছু অভিযোগ পেয়েছে। তার সত্যতা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। পুলিশের এক কর্তা জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ মিললে কাউকেই ছাড়া হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন