—প্রতীকী চিত্র।
বীরভূমের আদিবাসী স্কুলছাত্রী নিখোঁজ হওয়ার পরেই এক বার অভিযুক্ত স্কুলশিক্ষককে পাকড়াও করেছিল পুলিশ। যদিও জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ছাড়া পাওয়ার পরেই আইনজীবী অনিন্দ্য সিংহের দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্কুলশিক্ষক। সেই সময় অভিযুক্ত এমন কিছু প্রশ্ন করেছিলেন, এমন কিছু কথা বলেছিলেন, যা তাঁর মনে সন্দেহ বাড়িয়ে তুলেছে বলে জানালেন আইনজীবী। এই যুক্তিতে তিনি স্কুলশিক্ষকের মামলা থেকেও সরে দাঁড়ালেন।
গত ২৮ অগস্ট নিখোঁজ হয় ওই স্কুলছাত্রী। পরিবারও থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে। এর পর ১ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত সন্ধান পান পরিবারের লোকেরা। অভিযোগ, তাঁকে মারধরও করা হয়। পুলিশই তাঁকে উদ্ধার করে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, তখন থেকেই আর স্কুলমুখো হননি অভিযুক্ত। ছাত্রী নিখোঁজ হওয়ার ২০ দিন পর তার বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার হতেই আবার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এখন তিনি পুলিশি হেফাজতেই রয়েছেন।
গ্রেফতারির পর রামপুরহাট আদালতে হাজির করানো হয়েছিল অভিযুক্ত স্কুলশিক্ষককে। সেই সময় তাঁর হয়ে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবী অনিন্দ্য। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ ওঁকে প্রথম বার ছেড়ে দেওয়ার পর উনি কলকাতা হাই কোর্টের এক আইনজীবীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই আইনজীবীর সূত্রেই ওই শিক্ষক এসেছিলেন আমার কাছে। সেই সময় উনি আমার কাছে কিছু অদ্ভুত প্রশ্ন করেছিলেন। জানতে চেয়েছিলেন, পচাগলা দেহ মিললে পুলিশ ওঁকে ধরতে পারবে কি না। পচাগলা দেহ থেকে ডিএনএ পরীক্ষা সম্ভব কি না। এ সব প্রশ্ন আমার মনে সন্দেহ বাড়িয়ে তুলেছিল। এই ঘটনা যদি আমার পরিবারে ঘটত, আমি কি মামলা লড়তে পারতাম? এ সব ভেবেই আমি মামলা থেকে সরে দাঁড়ালাম।’’
দেহের একাংশ উদ্ধারের পরে চার দিন পেরিয়েছে। এখনও মেলেনি বীরভূমের নিহত স্কুলছাত্রীর দেহের অবশিষ্টাংশ। পুলিশ সূত্রের দাবি, ছাত্রীর দুই পা ও দুই হাত উদ্ধার করা যায়নি।
পুলিশ সূত্রের খবর, পরিবারের ও গ্রামবাসীর দাবি মেনে তদন্তকারী অফিসারকে সরানো হয়েছে। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট এসডিপিও-কে। গ্রামবাসীর অভিযোগ ছিল, পুলিশ গোড়া থেকে ঠিক মতো তদন্ত করেনি। তারা সক্রিয় হলে অভিযুক্তকে আরও আগে ধরা যেত। ছাত্রীর দেহও আগেই পাওয়া যেত। পুলিশের দাবি, ছাত্রীকে অপহরণ ও নিখোঁজের মামলা শুরু হলেও কারও নামে অভিযোগ ছিল না। তাই ওই শিক্ষককে বেশি দিন আটক করে রাখা যায়নি। বীরভূমের পুলিশ সুপার আমনদীপ এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘অভিযুক্তকে প্রথমে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে পাকাপোক্ত প্রমাণ হাতে পেয়েই তাকে ধরা হয়৷ আগের তদন্তকারী অফিসারের হাত থেকে তদন্তভার এসডিপিওকে দেওয়া হয়েছে৷ বিশেষ সরকারি আইনজীবীও নিয়োগ করা হচ্ছে। দ্রুত ময়না-তদন্তের রিপোর্ট আনানো হবে।’’