শ্রদ্ধা-জ্ঞাপন: বুধবার খড়্গপুরে চাচাকে স্মরণ। নিজস্ব চিত্র
একাধিকবার বিধায়ক হয়েছেন তিনি। হয়েছেন মন্ত্রীও। সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সবাই তাঁকে ভালবাসতেন। মৃত্যুর এক বছর পরেও তাঁকে সম্মান জানাতে মুছে গেল রাজনৈতিক ভেদাভেদ।
তিনি জ্ঞানসিংহ সোহন পাল। চাচা নামেই তিনি বেশি পরিচিত। গত বছর ৮ অগস্ট কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে প্রয়াত হন তিনি। একবছর পরেও চাচা এখনও রেলশহরের ‘মিথ’ই।
চাচার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে বুধবার কংগ্রেসের পক্ষ থেকে গোলবাজার রামমন্দিরে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। খড়্গপুর পুরসভার পক্ষ থেকে মন্দিরতলা শ্মশানে চাচার স্মৃতিসৌধের সামনে আয়োজন হয়েছিল অনুষ্ঠানের। অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন শহরের বহু মানুষ। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি হাজির হয়েছিলেন কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরাও। চাচার স্মৃতিসৌধে ফুল-মালা দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন সকলে।
কংগ্রেসের উদ্যোগে আয়োজিত রক্তদান শিবিরেও আসেন তৃণমূল, সিপিএম, সিপিআই থেকে বিজেপির নেতা-কর্মীরা। উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের শহর সভাপতি অমল দাস, মহিলা নেত্রী হেমা চৌবে, ছাত্র পরিষদের রাজ্য নেতা অরিত্র দে, জেলা সভাপতি উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। ছিলেন খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার, তৃণমূলের শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডে, বিজেপির বিধায়ক প্রতিনিধি প্রেমচাঁদ ঝাঁ, সিপিএম নেতা অনিল দাস প্রমুখ। দু’টি অনুষ্ঠানেই ছিলেন চাচার ভাইপোর স্ত্রী ধরমজিত কৌর, নাতি হরমিত সিংহ। অনুষ্ঠানে চাচার স্মৃতিচারণা করেন সকলেই।
কংগ্রেসের শহর সভাপতি অমলবাবু বলেন, “আমরা সকলকেই ডেকেছিলাম। দলমত নির্বিশেষে সকলেই এসেছেন। শহরে এই সৌজন্যই চাচা চাইতেন। এমন দৃশ্যে চাচার আত্মা শান্তি পাবে।” পুরপ্রধান প্রদীপবাবু বলেন, “চাচার সৌজন্য তাঁকে জননেতা করেছিল।” এ দিন শিবিরে প্রায় ১০০ জন রক্তদান করেন। রক্ত দিয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর ভেঙ্কট রামনাও। আবার শিবির পরিচালনায় দেখা গিয়েছে অনেক সাধারণ মানুষকেও। খড়্গপুর ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স অর্গানাইজেশনের সদস্য বিজন দত্ত বলেন, “আমি তো এখানে আমাদের সংগঠন নয়, চাচার টানে এসে শিবিরে সহযোগিতা করছি।” চাচার নাতি হরমিত সিংহও বলছিলেন, “চাচা এটাই চাইতেন সকলে মিলেমিশে থাকুক। সকলকে ভালবাসতেন। ওঁর মৃত্যুদিবসে সেই দৃশ্য দেখে আমরা খুশি।