আলোচনা খারিজ, বয়কটেই বিরোধীরা

বয়কটের নীতিকে তুলোধোনা করে বুধবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বিরোধীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, যা বলার, ভিতরে থেকেই বলা উচিত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:১৯
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারি উড়িয়ে দিয়েই বয়কটের পথে থাকল বিরোধী বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস। তার পাশাপাশিই, কংগ্রেস সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী কী মন্তব্য করেছেন, রাজ্য নেতাদের কাছে সেই ব্যাপারে খোঁজ নিল এআইসিসি।

Advertisement

বয়কটের নীতিকে তুলোধোনা করে বুধবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বিরোধীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, যা বলার, ভিতরে থেকেই বলা উচিত। অধিবেশনের শেষ দিনে বৃহস্পতিবার প্রশ্নোত্তর-পর্ব শেষ হতেই ‘চাষিরা ফসলের দাম পাচ্ছেন না’, এই নিয়ে আলোচনার দাবি জানায় বাম ও কংগ্রেস। ফসলের দাম ও পাটচাষিদের সমস্যা নিয়ে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী একটি মুলতুবি প্রস্তাব পাঠও করেন। কিন্তু স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় আলোচনার অনুমতি না দেওয়ায় ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বাম ও কংগ্রেস বিধায়কেরা। তাতেও স্পিকার কর্ণপাত না করায় সারা দিনের মতো বিধানসভা বয়কট করে বেরিয়ে যান তাঁরা। বিরোধীদের প্রশ্ন, তাঁরা তো ভিতরে থেকেই আলোচনা চেয়েছিলেন। ফসলের দাম নিয়েও যদি বিধানসভায় আলোচনা করা না যায়, তা হলে ভিতরে থেকে তাঁরা কী করবেন?

বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্র-রাজ্য বন্ধুত্ব হচ্ছে। আমরা জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিলাম। তাতে কেন্দ্রের সমালোচনাও তো করতাম। তবে রাজ্যের জন্যই তো আলু, পটলের দাম বাড়ছে। অথচ কোনও আলোচনাই করতে দেওয়া হল না।’’ তাঁর প্রশ্ন, বিরোধীরা কি সরকারের স্তাবকতা করতে বিধানসভায় এসেছে? বিধানসভা চত্বরে সুজনবাবুও বলেন, ‘‘ডেঙ্গিতে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছেন। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। চাষিরা পাটের দাম পাচ্ছেন না। ফসলের দাম পাচ্ছেন না। অথচ এ সব নিয়ে বিধানসভায় আলোচনার কোনও সুযোগই নেই!’’

Advertisement

বিরোধী দলনেতা জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় কী ভাবে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে, তার বিশদ তথ্য তাঁরা প্রয়োজনে কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনকে জানাবেন। যদিও স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, প্রশ্নোত্তর, জিরো আওয়ার-সহ নানা ক্ষেত্রেই বিরোধীদের যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আর মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে মান্নানের মন্তব্য, ‘‘আপনার জন্ম হয়েছে বিজেপি-র ঘরে। আমাদের কাঁধে চড়ে ক্ষমতায় এসেছেন। আবার বিজেপি-র ঘরে চলে যেতে পারেন। আপনার রক্তচক্ষুকে ভয় পাই না!’’

মান্নান-সহ রাজ্য নেতাদের কাছ থেকে মুখ্যমন্ত্রীদের আগের দিনের মন্তব্যের বিষয়ে খোঁজ নিয়েছেন এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক সি পি জোশী। জাতীয় স্তরে তৃণমূল তাদের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে বেঁকে বসতে পারে, এই সম্ভাবনা নিয়ে এআইসিসি বিশেষ কোনও উদ্বেগ দেখায়নি।

রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবশ্য বিরোধীদের অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি-কে মানুষ ত্যাগ করেছেন। ওদের এখন অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বাইরে এসে চেঁচামেচি করতে হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement