পথে বাম-কংগ্রেস, ইস্তফার তরজায় বিজেপি-তৃণমূল

রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় আবার বাংলায় অশান্তির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করে তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:১০
Share:

—ফাইল চিত্র।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে আরও সক্রিয় ভাবে পথে নামছে বাম ও কংগ্রেস। তাদের মূল লক্ষ্য এখন, গোষ্ঠীগত পরিচয়ের বাইরে নিয়ে প্রতিবাদকে রাজনৈতিক চেহারায় ধরে রাখা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তির জন্য প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেই দায়ী করেছে রাজ্যের দুই বিরোধী দল। কিন্তু একই সঙ্গে বিরোধী নেতৃত্বের আবেদন, প্রতিবাদ হোক গণতন্ত্র ও সম্প্রীতির শিষ্টাচার মেনে।

Advertisement

রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় আবার বাংলায় অশান্তির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করে তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছেন। রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূলের নেতা ফিরহাদ হাকিম পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কেন পদত্যাগ করবেন না? একই প্রশ্ন বাম ও কংগ্রেস নেতাদেরও।

রাজ্য জুড়ে আগামী ১৬ ডিসেম্বর, সোমবার থেকে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের (সিএবি) বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছে বামেরা। কলকাতায় কেন্দ্রীয় মিছিল হবে ১৯ ডিসেম্বর। কংগ্রেসও জেলায় জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে আগামী ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। তার পরে হবে রাজভবন ঘেরাও অভিযান। বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন, নাগরিকত্বের সংশোধনী পুরোপুরি অসাংবিধানিক এবং ধর্মনিরপেক্ষতার কাঠামো বিরোধী। তাই লড়াই এখন সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষতার। বাম, কংগ্রেসের মতো রাজনৈতিক শক্তি এই প্রতিবাদ আন্দোলনের প্রথম সারিতে থাকলে বিজেপির পক্ষে তাতে ধর্মীয় রং লাগানো কঠিন হবে। এই পরিস্থিতি মাথায় রেখে জেলায় জেলায় কর্মী-সমর্থকদের সিএবি-বিরোধী প্রতিবাদে এবং সম্প্রীতি রক্ষায় শামিল থাকতে বলেছেন বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব।

Advertisement

আরও পড়ুন: প্রতিবাদ হোক শান্তিপূর্ণ উপায়ে, বার্তা বিশিষ্টদের

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র শুক্রবার বলেছেন, ‘‘সমগ্র দেশে আগুন জ্বালানোর জন্য দায়ী দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সরকারকে অবিলম্বে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন প্রত্যাহার করে জাতি-ভাষা-ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে নাগরিকত্ব দিতে হবে।’’ পাশাপাশিই তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের সরকারকে এনআরসি-র প্রথম ধাপ এনপিআর-এর কাজ শুরু করা থেকে বিরত থাকতে হবে। রাজ্যের মানুষের প্রতি আবেদন শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পথে প্রতিবাদ জানান, সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় রাখুন।’’

জেলায় জেলায় প্রশাসনিক দফতরের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি নেওয়ার জন্য জেলা নেতৃত্বকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে তাঁর নেতৃত্বে প্রদেশ কংগ্রেস রাজভবন ঘেরাও অভিযান করবে। রাজ্য জুড়েই চলবে ‘সংবিধান বাঁচাও, ভারত বাঁচাও’ কর্মসূচি। প্রদেশ কংগ্রেসের কমিউনিকেশন শাখার চেয়ারম্যান অমিতাভ চক্রবর্তী জানান, প্রতি কর্মসূচিতেই বামফ্রন্টের নেতৃত্বকে আমন্ত্রণ করা হবে।

বিজেপির বিজয়বর্গীয় এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘সাংবিধানিক পদে বসে আপনার বক্তব্যের পরেই অনুপ্রবেশকারীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করল। এর পরে এক মিনিটও কি আপনার মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকার অধিকার আছে?’’ জবাবে ফিরহাদ বলেছেন, ‘‘মানুষের ভোটে জিতে দু’বার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনও ভয় দেখিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার মানুষ উনি নন। বরং, বিজয়বর্গীয়ের মতো বর্গীরা হানা দিয়ে বাংলাকে ধ্বংস করতে চাইছে। ভারত জ্বলছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহের পদত্যাগ কেন চাইছেন না বিজয়বর্গীয়?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন