বেপাত্তা: বেঙ্গল সাফারি পার্কে সচিন। ফাইল চিত্র
গত বছর পয়লা জানুয়ারি ডুয়ার্সের খয়েরবাড়ি রেসকিউ সেন্টার থেকে বেঙ্গল সাফারি পার্কে এসেছিল সচিন। পার্ক থেকে রাজ্য চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ, সকলেই এখন একবাক্যে বলছেন, প্রথম থেকেই সচিন ছিল ‘দুষ্টু ছেলে’। গত ছ’মাসে সে দু’বার বনকর্মীদের আক্রমণ করে। সেই সচিনই মঙ্গলবার সকাল থেকে বেপাত্তা। বছরের প্রথম দিন সাফারি পার্কে ভিড় উপচে পড়ার কথা। পার্কের দরজা খোলার আগে সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ বনকর্মীরা রুটিন নজরদারি চালাতে গিয়ে দেখেন, নির্দিষ্ট ঘেরাটোপে চিতাবাঘ সচিন নেই। তার সঙ্গী সৌরভ অবশ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে নিজের এলাকায়।
তার পর থেকে চলেছে চিরুনি তল্লাশি। কিন্তু রাত অবধি সচিনের কোনও খোঁজ নেই। একটি পক্ষের দাবি, সাফারি পার্ক লাগোয়া মহানন্দা অভয়ারণ্য, বৈকুণ্ঠপুর বনাঞ্চলের দিকে চলে যেতে পারে চিতাবাঘটি। পার্ক কর্তৃপক্ষের অবশ্য প্রাথমিক সন্দেহ, পার্কের যে ৯০ হেক্টর জঙ্গলে তৃণভোজীরা বিচরণ করে, সচিন সম্ভবত সেখানে লুকিয়ে আছে।
এই ঘটনা জানার পরই পার্ক বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তল্লাশিতে নামে দু’টি কুনকি হাতি। টোপ দিয়ে পাতা হয় ১০টি খাঁচা। পশ্চিমবঙ্গ চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের সদস্য সচিব বিনোদকুমার যাদব বলেন, ‘‘পার্কের আশপাশের রেঞ্জগুলিতেও খোঁজ চলছে। সাফারি পার্কের ডিরেক্টর এবং বন্যপ্রাণ শাখার এক ডিএফও-র নেতৃত্বে ঘুমপাড়ানি গুলি’র পাঁচটি দল নিয়ে বনকর্মীরা পার্কেই তল্লাশি চালাচ্ছেন।’’ বেঙ্গল সাফারির ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা রাজেন্দ্র জাখর বলেন, ‘‘চিতাবাঘটি কোথায় লুকিয়ে থাকতে পারে, সেই এলাকা মোটামুটি চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি।’’
যে ঘেরাটোপের লোহার বেড়া প্রায় ১২ ফুট উঁচু, যেখান থেকে গত তিন বছরে একটিও পশু পালায়নি, সেখান থেকে সচিন পালাল কী ভাবে? খবর পেয়ে আসেন রাজেন্দ্র জাখর এবং সহ-অধিকর্তা অসীম চাকি। সকলেই দেখতে পান, বেড়া লাগোয়া একটি গাছে চিতাবাঘ লোম লেগে রয়েছে। সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের তাই ধারণা, কোনও ভাবে গাছে উঠে সেখান থেকে লাফিয়ে বেড়া ডিঙিয়েছে সচিন।