গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
চিটঠি আয়ি হ্যায়!
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডারে সভা করতে আসছেন ৮ ফেব্রুয়ারি। অর্থাৎ মাঝে আর মোটে দু’দিন। বিজেপির লক্ষ্য, মোদীর জনসভায় অন্তত এক লক্ষ লোকের জমায়েত করতে হবে। কিন্তু কর্মিসভাগুলির যা চেহারা, তাতে কপালে ভাঁজ জেলা এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। তাই ঠিক হয়েছে, দলের সংগঠনের উপরে পুরোপুরি ভরসা না রেখে জেলার সব বাড়ি গিয়ে চিঠি দিয়ে আমন্ত্রণ জানানোর নির্দেশ দিলেন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
বাড়িতে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছলে মোদীর সভা নিয়ে আমজনতার মধ্যে ‘আগ্রহ’ তৈরি হবে বলে দাবি করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। হাতে যে দু’দিন আছে, তাতে ক’টা বাড়িতে যাওয়া সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলেই।
মোদীর সভা নিয়ে মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির পান্ডাপাড়ার একটি সিনেমা হলে এ দিন কর্মিসভা ডাকে বিজেপি। তাতে দলের সব শাখা সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ডাকা হয়। সভা শুরুর পরে হলের অর্ধেকের বেশি আসন ফাঁকাই ছিল বলে দাবি জেলা বিজেপির একাংশের। ময়নাগুড়ির মিছিলেও এ দিন জমায়েত কপালে ভাঁজ ফেলেছে বিজেপি নেতাদের। এই অবস্থায় বাড়ি বাড়ি চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রহরা: ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভার মঞ্চ বাঁধা চলছে। প্রহরায় পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।
বিজেপি সূত্রে দাবি, একই সঙ্গে অবশ্য পাশের জেলা কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং দার্জিলিং থেকে এই সভায় লোক আনা হবে। কিন্তু কোথা থেকে কত লোক আনা হবে, তা-ও চূড়ান্ত করে সংশ্লিষ্ট জেলা জানানো যায়নি বলে খবর।
বিজেপির একটি সূত্রের বক্তব্য, সাধারণত ভিড়ের ক্ষেত্রে আয়োজক জেলার উপরেই বেশি ভরসা করতে হয়। জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, মালবাজার-সহ জেলার বিভিন্ন শহর এবং জনপদ মোদীর ছবি-হোর্ডিং দিয়ে সাজানো শুরু হয়েছে। তার পরেও, এ দিন ময়নাগুড়ির মিছিল এবং জলপাইগুড়ির সভায় সমর্থকদের ভিড়ের নমুনা আশঙ্কা জাগিয়েছে, বলছে দলই। এ দিন জলপাইগুড়ির সভায় ঢোকার আগে বিজয়বর্গী তাই বলেন, “তৃণমূল বাস মালিকদের হুমকি দিচ্ছে। যাতে তাঁরা বিজেপি কর্মীদের বাস ভাড়া না দেন।”
সেই দাবি অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। দলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “হুমকির রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাসী নই। আগামী শুক্রবার কম ভিড় হতে পারে তা টের পেয়ে এখন থেকেই হুমকির কাঁদুনি গাইছে নেতারা।”
বিজেপির তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, ময়নাগুড়ির মিছিল শুধু একটি এলাকা নিয়ে হয়েছে, বাইরে থেকে কাউকে আনা হয়নি। জলপাইগুড়ির কর্মিসভায় শুধুমাত্র বিভিন্ন শাখা সংগঠনের নেতাদের সামিল করা হয়েছে বলে খবর। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বাপি গোস্বামী, “কত লোক হচ্ছে ,তা আগামী শুক্রবার মাঠেই প্রমাণ হবে। তৃণমূল বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমর্থকদের হুমকি দিয়ে সভায় যেতে নিষেধ করছে। তার ফল উল্টো হবে।’’