সঙ্কটে শহর আর্সেনিক

বিপদ ঘণ্টা শুনেও ‘বধির’

কাকে বাদ দিয়ে কাকে ধরি। নয়ের দশকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষকেরা যখন বিষয়টি সামনে এনেছিলেন, তখন পুরসভা কিংবা রাজ্য সরকার, কেউই গবেষকদের দাবিতে আমল দেয়নি। তাই নেওয়া হয়নি সতর্কতামূলক ব্যবস্থাও।

Advertisement

দেবদূত ঘোষঠাকুর ও সোমনাথ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:২৭
Share:

কাকে বাদ দিয়ে কাকে ধরি।

Advertisement

নয়ের দশকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষকেরা যখন বিষয়টি সামনে এনেছিলেন, তখন পুরসভা কিংবা রাজ্য সরকার, কেউই গবেষকদের দাবিতে আমল দেয়নি। তাই নেওয়া হয়নি সতর্কতামূলক ব্যবস্থাও। তার জেরে মহানগরীর ভূগর্ভের জলস্তর যত নেমেছে, ততই নতুন নতুন এলাকায় নলকূপগুলি ভূগর্ভ থেকে তুলে এনেছে বিপজ্জনক মাত্রার আর্সেনিক।

পুরসভার নিজস্ব নথি বলছে, মহানগরীতে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত সত্ত্বেও ১৫টি বরোতেই জলস্তর কমছে। সাত ও আট নম্বর বরোতে জলস্তর নামার প্রবণতা এবং আর্সেনিক দূষণের মাত্রা সব থেকে বেশি। ৯, ১০, ১১ এবং ১২ ক্রমে অতিরিক্ত আর্সেনিকপ্রবণ হয়ে উঠছে বলে বেরিয়েছে সমীক্ষায়।

Advertisement

পুরসভা ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষা বলছে, বিবাদী বাগ, পার্ক স্ট্রিট, ভবানীপুর, গল্ফ গ্রিন, লেক গার্ডেন্স, টালিগঞ্জের পাশাপাশি বেলেঘাটা, রাজাবাজার, নারকেলডাঙা, বাইপাসের দু’পাশ, সার্দান অ্যাভিনিউ, গরফা, বাঁশদ্রোণী, নেতাজি নগর, বোড়াল, গড়িয়া বাজার এলাকাও আর্সেনিকপ্রবণ হয়ে উঠেছে।

এই অবস্থাতেও বিপদ লুকিয়ে রাখতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি নেই পুর কর্তৃপক্ষের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুযায়ী আর্সেনিক অধ্যুষিত এলাকায় প্রতি লিটার জলে আর্সেনিকের সহনমাত্রা থাকা উচিত ০.০১ মিলিগ্রাম। কিন্তু পুরসভা সেই সহনমাত্রা বেঁধে রেখেছে ০.০৫ মিলিগ্রামে। পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার যে সহনমাত্রা ঠিক করেছে, আমরা সেটাই মেনে চলেছি। ওরা সহনমাত্রা ০.০১ মিলিগ্রাম করলে আমরা তা মানব।’’

এক বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘‘এক সময়ে রাজ্য আর্সেনিক দূষণের হাল গোপন করায় এখন ফল ভুগতে হচ্ছে। কলকাতা পুরসভাও সেই
ভুলই করছে।’’

মহানগর সংলগ্ন সোনারপুর, বিষ্ণুপুর, বারুইপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা, রাজারহাট, নিউ টাউন, বাগুইআটিও আর্সেনিকপ্রবণ হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে বিপজ্জনক মাত্রার আর্সেনিক মিলছে। তা নিয়ে চিন্তিত দফতরের কর্তারা। আক্রান্ত এলাকায় আর্সেনিকমুক্ত জল কী ভাবে সরবরাহ করা যায়, তা খতিয়ে দেখছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন