বরুণের দিদির বিরুদ্ধে তিন কোটির মামলা

সুটিয়া গণধর্ষণ কাণ্ডের অন্যতম সাক্ষী বরুণ বিশ্বাসের খুনের পিছনে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাত থাকতে পারে বলে একাধিক বার জনসমক্ষে সরব হয়েছিলেন বরুণের দিদি প্রমীলা রায়। মন্ত্রী মানহানির মামলার হুঁশিয়ারি দেন। মঙ্গলবার বিধাননগর এসিজেএম আদালতে সেই মামলা শুরু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

সুটিয়া শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:০২
Share:

সুটিয়া গণধর্ষণ কাণ্ডের অন্যতম সাক্ষী বরুণ বিশ্বাসের খুনের পিছনে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাত থাকতে পারে বলে একাধিক বার জনসমক্ষে সরব হয়েছিলেন বরুণের দিদি প্রমীলা রায়। মন্ত্রী মানহানির মামলার হুঁশিয়ারি দেন। মঙ্গলবার বিধাননগর এসিজেএম আদালতে সেই মামলা শুরু হয়েছে।

Advertisement

গত ১৫ মার্চ বিধাননগর উত্তর থানায় মন্ত্রী নিজের প্যাডে চিঠি লিখে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার আগে অভিযোগ করেছিলেন গাইঘাটা থানাতেও। মন্ত্রীর আইনজীবী জয়দেব দাস জানান, আগামী ১৫ মে প্রমীলাদেবীকে আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। ৩ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়বাবু।

প্রমীলাদেবী অবশ্য নিজের বক্তব্যে এখনও অনড়। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মুখ বন্ধ করতেই এ সব করা হচ্ছে। তবে ভাইকে খুনের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলবে। এত দিন যে সব কথা সভামঞ্চে বলতাম, তা এ বার আদালতে বলার সুযোগ পাব।’’

Advertisement

জয়দেববাবু জানান, ২০১৪ সালের ১১ নভেম্বর গাইঘাটার ফুলসরার পাঁচপোতা গ্রামে ‘আক্রান্ত আমরা’-র মঞ্চ থেকে প্রমীলাদেবী অভিযোগ তোলেন, বরুণকে খুনের পিছনে মন্ত্রীর হাত আছে। বনগাঁ লোকসভার উপনির্বাচনের আগে ১১ ফেব্রুয়ারি একটি রাজনৈতিক দলের মঞ্চ থেকেও একই অভিযোগ করেন তিনি। কিন্তু অভিযোগ দায়ের করতে এত সময় নিলেন কেন মন্ত্রী? জ্যোতিপ্রিয়বাবু জানান, এর আগে দু’বার আইনজীবীর চিঠি পাঠানো হয়েছিল প্রমীলাদেবীর কাছে। কোনও উত্তর না মেলায় থানায় অভিযোগ জানান তিনি।

২০১২ সালের ৫ জুলাই গোবর়ডাঙা স্টেশনের বাইরে দুষ্কৃতীরা গুলি করে খুন করে কলকাতার মিত্র ইন্সটিটিউশনের (মেন) শিক্ষক বছর আটত্রিশের বরুণকে। ২০০০ সাল নাগাদ গাইঘাটার সুটিয়ায় একের পর এক বাড়িতে ঢুকে মহিলাদের ধর্ষণ করেছিল সুশান্ত চৌধুরী ও তার দলবল। ওই ঘটনার প্রতিবাদ করে আন্দোলনে নামেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ‘প্রতিবাদ মঞ্চের’ সামনের সারিতে ছিলেন বরুণ। সুশান্ত-সহ সাতজন দুষ্কৃতী ধরা পড়ে, তাদের সাজাও হয়। কিন্তু গণধর্ষণ কাণ্ডে আরও কিছু মামলা এখনও বিচারাধীন। তারই অন্যতম সাক্ষী ছিলেন বরুণ। তাঁকে খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে সিআইডি জানায়, দমদম সেন্ট্রাল জেলে বসে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী সুশান্তই খুনের ছক কষেছিল। বরুণকে খুনের অভিযোগে ধরা পড়ে আরও ছ’জন।

কিন্তু বরুণকে খুনের পিছনে আরও কোনও ‘পাকা মাথা’ থাকার অভিযোগ তোলে বরুণের পরিবার। সিবিআই তদন্তের দাবিও জানান তাঁরা। প্রমীলা-সহ পরিবারের অন্য সদস্যদের অভিযোগ, স্থানীয় একটি নদী সংস্কারের টাকা নয়ছয় করা নিয়ে শাসক দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন বরুণ। সে জন্যই সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে।

প্রতিবাদী মঞ্চের সভাপতি ননীগোপাল পোদ্দার অবশ্য বলেন, ‘‘যে বিষয়ে কোনও তথ্য-প্রমাণ নেই, তা নিয়ে কিছু বলতে চাই না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন