coronavirus lockdown

২১ মে থেকে খুলবে সব বড় দোকান, কারখানা খুলবে এক দিন অন্তর, ঘোষণা মমতার

প্রতিটি ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বিধি মানার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২০ ১৮:৩০
Share:

সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক থেকে

করোনা সংক্রমণের নিরিখে এলাকা চিহ্নিতকরণের কাজ রাজ্যের উপরেই ছেড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। রবিবার সেই মর্মে রাজ্যগুলিকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করলেন, এ রাজ্যের কন্টেনমেন্ট জোনকে তিন ভাগে ভাগ করা হচ্ছে। একগুচ্ছ ছাড়ের কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি। দোকান, হোটেল খোলায় ছাড় দেওয়া হয়েছে। এমনকি পথে নামবে অটোও। এক দিন অন্তর সরকারি ও বেসরকারি কারখানা খোলার ক্ষেত্রেও ছাড়পত্র দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে সাধারণ মানুষকে মাস্ক ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, স্যানিটাইজার ব্যবহার-সহ একাধিক সরকারি পরামর্শের কথা আরও এক বার মনে করিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধিনিষেধ না মানলে কড়া পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

এ দিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, করোনা সংক্রমণের নিরিখে বুথভিত্তিক ভাবে কন্টেনমেন্ট জোনকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমত, অ্যাফেক্টেড জোন, দ্বিতীয়ত, বাফার জোন ও তৃতীয়ত ক্লিন জোন। সেই সূত্রেই তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যে ৩১ মে পর্যন্ত লকডাউন চলবে। তবে আগের লকডাউনের থেকে এই লকডাউনের মধ্যে পার্থক্য আছে।’’ এর মধ্যেও রাজ্যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চলবে বলে জানিয়ে দেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, কন্টেনমেন্ট জোন ছাড়া রাজ্যের সব এলাকায় বড় ২১ মে থেকে বড় দোকান খুলবে। ২৭ মে থেকে জোড়-বিজোড় নীতি মেনে হকার্স মার্কেট খোলার কথাও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। তবে ফুটপাতের হকাররা নয়, ফুটপাতের উপরে যাঁরা ব্যবসা করেন তাঁদের দোকান খোলার সুযোগ দেওয়া হবে। সেলুন ও বিউটি পার্লারও খোলার অনুমতিও দিতে চলেছে রাজ্য সরকার। সেই সঙ্গে এক দিন অন্তর রাজ্য সরকারি ও বেসরকারি কারখানা খোলার কথাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে। হোটেল খোলার অনুমতিও দিচ্ছে রাজ্য সরকার। জমায়েত এড়িয়ে খেলা চালিয়েও যেতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বিধি মানার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি।

যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রেও একাধিক ছাড় দিয়েছে রাজ্য। ২৭ মে থেকে রাস্তায় নামতে চলেছে অটোও। তবে এ বার মাত্র ২ জন করে যাত্রী তোলা যাবে। ২১ মে থেকে আন্তঃজেলা বাসও চালু হতে চলেছে। সরকারি বাস পথে নামবে বলে ঘোষণা করেন মু্খ্যমন্ত্রী। জন সাধারণের সুবিধার্থে বেসরকারি বাসমালিকদেরও বাস চালাতে অনুরোধ করেছেন তিনি। এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন, ‘‘ এই মুহূর্তে রাজ্যের সামনে তিনটি জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রথমত করোনা। দ্বিতীয়ত পরিযায়ী শ্রমিক। তৃতীয়ত আমপান।’’ পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে আরও ১২০টি ট্রেন চাইব। মোট ২৩৫টি ট্রেন রাজ্যে আনা হবে। এক দিনে রাজ্যে ১০টি ট্রেন ঢুকবে। সব খরচ রাজ্য সরকার বহন করবে।’’ তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই ভিন্ রাজ্য থেকে আড়াই থেকে তিন লক্ষ মানুষ রাজ্যে চলে এসেছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: ২১ মে থেকে ‘এ-জোন’ বাদে রাজ্যের সর্বত্র বড় দোকান খুলবে

করোনা মোকাবিলায় মোদী সরকারের আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে তোপ দেগেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, ‘‘আমরা হিসাব করে দেখেছি রাজ্য খুব সামান্যই পাবে। কিন্তু তা পেতে গেলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় ধাক্কা লাগবে। তা হতে গেব না। মানুষের বিরুদ্ধে আমরা কোনও পদক্ষেপ করব না।’’

আরও পড়ুন: কলকাতা বন্দর হাসপাতালে করোনার থাবা, আক্রান্ত ৯, বন্ধ প্যাথোলজি বিভাগ

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই চোখ রাঙাচ্ছে আমপানের মতো সুপার সাইক্লোন। এই পরিস্থিতি এ দিনই বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে খবর, দিল্লিতে রাজ্যের রেসিডেন্ট কমিশনার কৃষ্ণ গুপ্তকে এই বৈঠকের বিষয়ে জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই বৈঠকের বিষয়ে সোমবার সকালে টুইট করে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে এ দিন মমতা বলেন, ‘‘ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট নিয়ে বৈঠক হচ্ছে। শুধুমাত্র রেসিডেন্সিশিয়াল কমিশনারকে ডেকে নেওয়া হয়েছে। এটা অসৌজন্যমূলক। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে হয়তো ভুল বোঝানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন