মঞ্চে ওঠার আগে, খণ্ডঘোষে। নিজস্ব চিত্র
সারা বাংলা যখন সকালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন পালন করে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন, তখন বিজেপি বাঁকুড়ার রাস্তায় ‘জয় শ্রীরাম, মোদী-মোদী’ বলে চিৎকার করছে, বিজেপি বিশ্বকবিকে সম্মান জানাতে শেখেনি—বৃহস্পতিবার দুপুরে খণ্ডঘোষের উখরিদ কলেজের মাঠে এ ভাবেই বিজেপিকে কটাক্ষ করলেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষ্ণুপুর লোকসভার প্রার্থী সৌমিত্র খাঁয়ের নাম না করে ‘গদ্দার’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গনগনে রোদের জন্যে সভাস্থল ছাউনি দিয়ে ঘেরা ছিল। মোতায়েন ছিল আটশও পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ার। বেলা দেড়টা নাগাদ অভিষেক মঞ্চে ওঠার সময়েও অবশ্য মহিলা আসনের দিকটা ফাঁকাই ছিল। অভিষেক বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, “নির্ধারিত সময়ের আগেই সভা করতে চলে এসেছি।’’ দলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথকেও বলতে শোনা যায়, একে প্রচন্ড গরম, ধান কাটার মরসুম, তার উপর রমজান মাস চলছে। যদিও তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, এক দিকে ব্লকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। পাশাপাশি আলিপুর গ্রামের দলীয় কর্মী খুনের প্রভাবও এ দিনের সভায় পড়েছে।
সভার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, “আমরা এ দিন কবিগুরুর জন্মদিন পালন করি। বাংলার কৃষ্টি-সংস্কৃতি মেনে এ দিন সকালে সাধারণত সভা করি না। কিন্তু আজ সকালেও বিজেপি বাঁকুড়া শহরে সভা করেছে। বিজেপির পতাকা নিয়ে, জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিয়ে মোদীর সভায় যাচ্ছে। আপনি প্রমাণ করতে চাইছেন, কবিগুরুর চেয়েও আপনি ঊর্ধ্বে।’’ বাঁকুড়ার সভায় ৪-৫ হাজারের বেশি লোক হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
খণ্ডঘোষ এক সময় সিপিএমের শক্ত ঘাঁটি ছিল। এখনও প্রচার, সভা-মিছিলে সিপিএম রয়েছে। সিপিএমকে একহাত নিয়েও অভিষেক বলেন, “বিজেপির দোসর সিপিএম। বিজেপির বিরুদ্ধে সিপিএম কোনও কথা বলছে না।’’ বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁকেও কটাক্ষ করেন তিনি। অভিষেক বলেন, ‘‘২০১৪ সালে যাঁকে সাংসদ করেছিলাম, মনে করি আর যাই হোক, তাঁর সাংসদ হওয়ার যোগ্যতা নেই। পঞ্চায়েতে লড়ে বুথ সভাপতি হওয়ার যোগ্যতা নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদারতা দেখিয়েছিলেন।’’ তাঁর কথায়, “বাঁকুড়া, পুরুলিয়াটা আমি দেখি। আজ থেকে খণ্ডঘোষের সার্বিক উন্নয়নের দায়িত্বতা আমার কাঁধে তুলে নিলাম। জোড়া ফুলে ভোট দিন, আমার কাছ থেকে উন্নয়ন বুঝে নেবেন।’’
খণ্ডঘোষের বিজেপির পর্যবেক্ষক বিজন মণ্ডলের পাল্টা দাবি, ‘‘ফাঁকা সভা দেখেই বোঝা যাচ্ছে কি উন্নয়ন হয়েছে। ভোটের ফলেই বোঝা যাবে মানুষ কার সঙ্গে আছেন।’’ বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁয়ের সঙ্গে বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।