ভেঙে চুরমার হয়েছেন তিনি। মিটিংয়ে-মিছিলে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। গর্জে উঠেছে তাঁর গ্রাম।
এ বার বিদ্যাসাগরের আত্মার শান্তি কামনায় পারলৌকিক ক্রিয়াদিও হল। আয়োজনে তাঁর শ্বশুরবাড়ির বর্তমান প্রজন্ম।
১৮৩৪ সালে ঘাটালের ক্ষীরপাই পুর-শহরের কাছারি বাজারে শত্রুঘ্ন ভট্টাচার্যের মেয়ে দীনময়ীর সঙ্গে বিদ্যাসাগরের বিয়ে হয়েছিল। সেই ভট্টাচার্য পরিবারেই বৃহস্পতিবার অরন্ধন পালন করা হয়। আর মূর্তি ভাঙার ‘পাপ’ দূর করতে শুক্রবার ছিল শ্রাদ্ধানুষ্ঠান।
কিলো দশেক কাঠ পুড়িয়ে হোম, গীতা পাঠ-সহ যাবতীয় নিয়ম মেনেই ঘন্টা তিনেক ধরে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হয়। নিমন্ত্রিত ছিলেন ৫০ জন। সকলের জন্য মিষ্টিমুখের আয়োজনও ছিল। বিদ্যাসাগরের শ্বশুরবাড়ির সদস্য গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, “কলকাতার বুকে বিদ্যাসাগরের নামাঙ্কিত কলেজে যে তাঁর মূর্তি এ ভাবে ভাঙা হতে পারে, তাআমরা দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি। এতে যে পাপ হয়েছে, তা দূর করতেই বিদ্যাসাগরের আত্মার শান্তি কামনায় আমরা পারলৌকিক ক্রিয়াদি করলাম।”
বিদ্যাসাগরের জন্মভূমি বীরসিংহ গ্রাম থেকে ক্ষীরপাইয়ে তাঁর শ্বশুরবাড়ির দূরত্ব কিলোমিটার সাতেক। গত মঙ্গলবার রাতে কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজে ঈশ্বরচন্দ্রের মূর্তি ভাঙার পরে গোটা বাংলার সঙ্গে সেখানেও নিন্দার ঝড় ওঠেছে। একই সঙ্গে বিদ্যাসাগরের আদর্শে আস্থা রাখে বীরসিংহ।
মনীষীর শ্বশুরবাড়ি অবশ্য জামাইয়ের আত্মার শান্তি কামনায় লোকায়ত পথেই আস্থা রাখছে। বলছে, মূর্তি ভাঙা তো অপঘাতে মৃত্যুরই শামিল। তাই শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হল চার দিনে।