মায়ের কাজ আংশিক সেরেই ‘দিদি’র সভায় অনুব্রত

গত ১৩ এপ্রিল সকালে বোলপুর শহরের নিচুপট্টির বাড়িতে মারা যান তৃণমূলের জেলা সভাপতির মা পুষ্পরানি মণ্ডল। বয়স হয়েছিল ৯৫।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৪৬
Share:

একজোট: দলনেত্রীর সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডল, শতাব্দী রায়, অসিত মাল। সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র

ব্যক্তি জীবন থেকে দলকেই বরাবর প্রাধান্য দিয়েছেন তিনি। মায়ের শ্রাদ্ধের দিনও ছবিটা বদলাল না। মুণ্ডিত মস্তকে অনুব্রত মণ্ডল হাজির হলেন সিউড়িতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী জনসভায়। আসলে বীরভূম জেলায় দলের কাণ্ডারী যে তিনিই!

Advertisement

গত ১৩ এপ্রিল সকালে বোলপুর শহরের নিচুপট্টির বাড়িতে মারা যান তৃণমূলের জেলা সভাপতির মা পুষ্পরানি মণ্ডল। বয়স হয়েছিল ৯৫। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। সে দিন দলের কাজে কলকাতায় ছিলেন অনুব্রত। খবর পেয়ে দ্রুত বাড়ি ফেরেন। বুধবার ক্ষৌরকর্ম ছিল। বৃহস্পতিবার ছিল শ্রাদ্ধানুষ্ঠান। ঘটনাচক্রে এ দিনই সিউড়ির চাঁদমারি ময়দানে ছিল তৃণমূল নেত্রীর জনসভা। বড়দা ও ছোট ভাই মায়ের শ্রাদ্ধের কাজে থাকলেও অনুব্রত ঠিক চলে যান সিউড়ির সভায়। তাঁর নিজের কথায়, ‘‘শ্রাদ্ধের কাজ সম্পূর্ণ করে আসতে পারিনি। মা-কে (প্রতিকৃতি) পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে মনে মনে বললাম, ‘মা, আজ দিদির সভা। আমাকে যেতেই হবে’।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘অবশ্য দলকে বড় করে দেখার অনুপ্ররণা মায়ের কাছেই পেয়েছি।’’

মায়ের কথা বলতে বলতে বারবারই স্মৃতিমেদুর হচ্ছিলেন শাসক দলের এই দাপুটে নেতা। বলছিলেন, ‘‘বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় রোজ মাকে প্রণাম করে যেতাম। অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল। মা জিজ্ঞাসা করতেন, কোথায় যাচ্ছি। কয়েক মাস ধরে প্রচুর সভা করেছি। মা বলতেন, তোমার শুভ হোক। তাই কষ্ট নিয়েও দলের কোনও কাজ থেকে বিরত থাকিনি।’’ এ দিনও ঠিক সেটাই করেছেন অনুব্রত।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

দলের জেলা সভাপতিকে দীর্ঘদিন কাছ থেকে দেখার সুবাদে তাঁর এই কাজ স্বাভাবিক বলেই মনে হচ্ছে বীরভূমে অনুব্রতের দুই সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ ও মলয় মুখোপাধ্যায়ের। দু’জনেই বলছেন, ‘‘কেষ্টদা দলঅন্ত প্রাণ। তেমনই মা অন্তপ্রাণ ছিলেন। কিন্তু, সবার উপরে ওঁর কাছে দল। তাই মায়ের মৃত্যুর পরেও শোক চেপে নদিয়া ও বীরভূম মিলিয়ে কম পক্ষে এক ডজন সভা করেছেন।’’ এ দিনও মঞ্চে তাঁদের কেষ্টদাকে দেখে তৃণমূলকর্মীদের বোঝার উপায় ছিল না, তিনি সদ্য মায়ের পারলৌকিক ক্রিয়া সেরে এখানে এসেছেন। সারাক্ষণ মমতার কাছে কাছে থেকেছেন। মাঝেমধ্যেই দু’জনকে দেখা গিয়েছে, আলোচনায় ব্যস্ত থাকতে। দলনেত্রীর প্রতিটি নির্দেশ শুনেছেন বাধ্য ভাইয়ের মতো।

দলের কাছে কেষ্ট কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা নির্বাচনী সভা শেষে মমতার একটা কথা থেকেই স্পষ্ট। সভা শেষের মুখে অনুব্রতকে উদ্দেশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেষ্ট তোমার পিছনে ওরা (বিজেপি)লাগবে। চমকাবে ধমকাবে। বাঘের বাচ্চার মতো লড়াই করবে। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement