সিউড়ির রাস্তায় অনুব্রত মণ্ডলের রোড-শো। নিজস্ব চিত্র
নকুলদানা, শলাকা পেরিয়ে পোলভোট হয়ে এ বার ‘চোর’। তাঁকে থামায় কে? অনুব্রতর এ বারের নিদান, ‘‘বাড়িতে চোর এলে হাত-পা ভেঙে দিন।’’
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল আপাত নিরীহ শব্দগুলির মাধ্যমে হুমকি, চাপা সন্ত্রাস ছড়াতে চাইছেন বলে বিরোধীরা সেই কবে থেকে দাবি করে আসছে। একাধিকবার কমিশনের শো-কজের মুখেও পড়তে হয়েছে। তার পরেও তিনি বেপরোয়া। বুধবার রাজনগরের জনসভায় অনুব্রত বলেন, ‘‘সাবধান। সন্ধ্যাবেলায় চোর আসছে। রাত ১২টার পরেও চোর আসছে। চোর এলেই বেড়িয়ে (পিটিয়ে) হাত-পা ভেঙে দিন। যাতে চুরি করতে না পারে। তার পরে যা বোঝার আমরা বুঝে নেব।’’
কারা চোর, ঝেড়ে কাশেননি অনুব্রত। দলের নীচু তলার কর্মীরা আড়ালে মেনেছেন, ‘‘চোর বলতে ভোট চোরেদের কথাই বলতে চেয়েছেন দাদা। নিশানায় তাই বিজেপি।’’
রাজনগরের সভা শেষে অনুব্রত সিউড়িতে মহামিছিলে পা মেলান। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অনুব্রত অবশ্য দাবি করেন, ‘‘আমি বলেছি, সন্ধ্যা বা রাতে চোর ঢুকলে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দিতে। কারণ, চুরি করার অধিকার কারও নেই।’’ কী চুরি হয়েছে, কে চুরি করছে, এ সবের উত্তরে অনুব্রতর হেঁয়ালি, ‘‘কী চুরি করছে, সেটা তো আপনারা বুঝতেই পারছেন। দু’এক দিন পরেই দেখতে পাবেন, প্রচুর মানুষের হাত-পা ভাঙা।’’
নাম না করলেও নিশানায় যে তাঁদের দলই, বুঝতে পারছেন বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়। তিনি বলছেন, ‘‘ভোট চুরি আমাদের করতে হবে না। মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভোট দেবেন। ওরা ভয় পেয়েই চুরির কথা ভাবছে। কখনও রাতের অন্ধকারে পতাকা খুলে নিচ্ছে, দেওয়ালে কালি লেপে দিচ্ছে। কখনও সরাসরি আক্রমণ করে বসছে। পঞ্চায়েতের মতো লোকসভাতেও একই সন্ত্রাস তৈরি করতে চাইছে। আমরা প্রশাসনকে জানাব।’’