ভাত হল কিনা দেখছেন বনগাঁর প্রার্থী মমতা ঠাকুর। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
চায়ের দোকানে ঢুকে নিজে হাতে গরম চা ছেঁকে কেউ নেতা কর্মীদের খাওয়ালেন। কেউ আবার সোজা হেঁসেলে ঢুকে ভাতের হাঁড়িতে খুন্তি নাড়লেন। রবিবার সকাল থেকেই বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীরা এ ভাবেই প্রচারে মানুষের মন জয় করার চেষ্টা করলেন।
সকাল ৯টা নাগাদ ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়ি থেকে গাড়ি করে স্থানীয় চাঁদপাড়া এলাকায় দলীয় কার্যালয়ে এসে পৌঁছন বনগাঁ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। প্রার্থী এসে পৌঁছতেই ডাঙ্কা বাজিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান বিজেপি কর্মীরা। তাঁর গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেওয়া হয়। কার্যালয়ে মিনিট দশেক নেতা কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে শান্তনু প্রচারে বেরোন। যশোর রোডের পাশে একটি চায়ের দোকানে ঢুকে পড়েন তিনি। মহিলা দোকানি চা করছিলেন। তাঁর কাছ থেকে চায়ের পাত্র নিয়ে চা ছেঁকে তাঁর দলের নেতা কর্মীদের চা খাওয়ালেন। এরপরই যশোর রোড ধরে শুরু হয় পদযাত্রা। সঙ্গে কয়েকশো কর্মী সমর্থক হাঁটলেন। দলীয় পতাকার পাশাপাশি ছিল মতুয়াদের পতাকাও। চাঁদপাড়া বাজারে ঢুকে সকলকে হাতজোড় করে নমস্কার করলেন। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে হাত মেলালেন। এক মাছ বিক্রেতা মাছ কাটছিলেন। প্রার্থীকে আসতে দেখেই তিনি বালতিতে থাকা জল দিয়ে হাত ধুয়ে নিলেন। প্রার্থীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে আশ্বাস দিলেন, ‘‘আমরা আছি। চিন্তা করবেন না।’’ প্রার্থীর চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। বাজারের মধ্যে কিছু মহিলা মোবাইলে শান্তনুর ছবি তুললেন।
এ দিন সকাল থেকে তৃণমূল প্রার্থী, শান্তনুর জেঠিমা মমতা ঠাকুরও জোরদার প্রচার করেছেন। ১০টা নাগাদ তিনিও ঠাকুরবাড়ি থেকে গাড়ি করে বনগাঁর পাইকপাড়া এলাকায় আসেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, দেগঙ্গার বিধায়ক তথা স্থানীয় বাসিন্দা রহিমা মণ্ডল, জেলা পরিষদের সদস্য রমা বসু বিশ্বাস। প্রচারের ফাঁকে শিশু কোলে নিয়ে আদরও করলেন মমতা। গ্রামের মহিলাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আর্শীবাদ চাইলেন। মাথায় হাত রেখে কয়েকজন মহিলা মমতাকে আশ্বস্ত করে বললেন, ‘‘সব ঠিক আছে দিদিভাই, চিন্তা করবেন না।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এরই ফাঁকে সাংসদ তথা প্রার্থী ঢুকে পড়লেন একটি বাড়ির হেঁসেলের মধ্যে। আলো দাস নামে এক মহিলা উনুনে ভাত রান্না করছিলেন। মমতা তাঁর পাশে বসে জানতে চাইলেন কী রান্না হচ্ছে। আলো জানালেন, ভাতের সঙ্গে উচ্ছে, পেঁপে সিদ্ধ। সাংসদ খুন্তি দিয়ে ভাতের হাঁড়ি নেড়ে দেখলেন ভাত কতদূর হল। মমতার পরামর্শ, আর একটু পরেই ভাতটা নামিয়ে নেবেন। মমতা বলেন, ‘‘সময় পেলে বাড়িতে নিজে হাতে রান্না করি।’’
সিপিএম প্রার্থী অলকেশ দাস এ দিন সকালে গোবরডাঙা এলাকায় পদযাত্রা করেন। সঙ্গে ছিলেন কর্মী সমর্থকেরা। পথ চলতি মানুষ, দোকানি, যানচালকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিজের ভোট আবেদন করেন তিনি। প্রবীণদের নমস্কার করে আশীর্বাদ চান। সঙ্গে থাকা কর্মীরা পথচলতি মানুষের সঙ্গে প্রার্থীর পরিচয় করিয়ে দেন। এ দিন প্রার্থী একটি চায়ের দোকানে ঢুকে বসে দোকানি ও কয়েকজনের সঙ্গে গল্পও করেন। পদযাত্রা শেষে তিনি সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির একটি সম্মেলনে যোগ দেন। কংগ্রেস প্রার্থী সৌরভ প্রসাদও এ দিন হরিণঘাটা ও স্বরূপনগর এলাকায় প্রচার করেছেন।