প্রতীকী ছবি।
পাহাড়ে রাজ্য সরকার যে ‘দমন নীতি’ চালাচ্ছে, কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে কমিশন গঠন করে তার তদন্ত করা হবে বলেই জানালেন দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা। যদিও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে কেন্দ্রীয় সরকার তদন্ত কমিশন গঠন করতে পারে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আমলা ও পুলিশকর্তাদের একাংশের মধ্যে। রাজুর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিনয় তামাং বলেন, ‘‘রাজ্যের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাইছে বিজপি। রাজ্যকে এড়িয়ে কেন্দ্র কোনও ভাবেই কমিশন করতে পারে না। তা ছাড়া পাহাড়ে যাঁরা অশান্তি করেছেন, আগুন জ্বালিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এত প্রমাণ পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে আছে যে, কমিশন হলেও তাঁরা ছাড়া পাবেন না।’’
বিজেপি একটা অভিযোগ বারবার তুলছে, পাহাড়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট করেছে বিনয়পন্থী মোর্চা ও রাজ্য সরকার। ১০৫ দিন বন্ধের প্রসঙ্গও তুলছেন দলের নেতারা। বিজেপির পাহাড় কমিটির সভাপতি মনোজ দেওয়ান বলেন, ‘‘কয়েকশো সাধারণ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা করেছে রাজ্য সরকার। বহু নিরীহ মানুষ এখনও জেল খাটছে। তার নিরপেক্ষ তদন্ত দরকার।’’ এক ধাপ এগিয়ে ‘নিরীহে’র তালিকায় বিমল গুরুং, রোশন গিরিদের নাম যুক্ত করেছেন বিমলপন্থী মোর্চার কার্যকারি সভাপতি লোপসাং লামা। রাজু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের মামলার ভয়ে পাঁচ হাজার লোক পাহাড় ছেড়ে জঙ্গল বা অন্যত্র পালিয়ে আছে। তাদের পরিবারের সদস্যরা অমানুষিক কষ্ট করে দিন কাটাচ্ছে। শুধু শাসক দলের সমর্থক নয় বলে হেনস্থা করা হবে, সেটা হতে পারে না।’’ তাঁদের এই প্রচারের বিরোধিতা করে বিনয় বলেন, ‘‘বিমল গুরুং যে জঙ্গলে নেই, স্যুট-বুট পরে বহাল তবিয়তে আছেন, সেটা তাঁর সঙ্গে জিএনএলএফের বৈঠকের দিনের ছবি থেকে স্পষ্ট।’’
রাজ্যের বিরুদ্ধে এমন কোনও কমিশন গঠন কি সত্যিই সম্ভব? রাজু বিস্তার কথার পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূলের দার্জিলিং জেলার ভারপ্রাপ্ত নেতা এবং রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘যিনি পাহাড়ের মানুষের দুঃখকষ্ট, তাঁদের সংস্কৃতি সম্পর্কে কিছু জানেন না, তাঁর কথার কোনও জবাব দেব না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূল পাহাড়ের মানুষের দুঃখকষ্ট বোঝে। তাদের উপরে কোনও দমন-পীড়ন চলুক, তা আমরা চাই না। তাই আমরা পাহাড়ের এক জন ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করেছি। বহিরাগতকে তিনি হারিয়ে দেবেন।’’
প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, বিশেষ পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ অনুমোদন ছাড়া কেন্দ্রীয় সরকার চাইলেই রাজ্যের বিষয়ে কমিশন গঠন করতে পারে না। তা হলে কেন কমিশন গঠনের কথা বলছেন বিজেপি প্রার্থী? পাহাড়ের একটি আঞ্চলিক দলের প্রার্থীর মতে, ‘‘রাজ্যের বিরুদ্ধে সাধারণ পাহাড়বাসীদের কিছু ক্ষোভ রয়েছে। সেই ক্ষোভকে নিজেদের পক্ষে টানতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব।’’