দ্বন্দ্ব থামাতে মরিয়া চেষ্টা বিজেপির

জলুবাবু নিজে মন্তব্য করেছিলেন যে, তিনি কৃষ্ণনগরে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দলীয় কোন্দল এতে স্পষ্ট হওয়ায় শেষে জলুবাবুর হস্তক্ষেপেই বিষয়টির সমাধান হয়। সর্বসমক্ষে নতুন প্রার্থীকে আশীর্বাদ করেন জলুবাবু।

Advertisement

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৯ ০৬:৪৯
Share:

কৃষ্ণনগরে কল্যাণ চৌবে বিজেপির প্রার্থী হওয়ার পরেই প্রবীণ নেতা সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় ওরফে জলুবাবুর শিবিরের ক্ষোভের মুখে তাঁকে পড়তে হয়। —ফাইল চিত্র।

লোকসভা ভোটের একেবারে মুখে কৃষ্ণনগরের দলীয় প্রার্থীকে কেন্দ্র করে দলের অন্তর্কলহ বার বার সামনে এসে পড়ায় অস্বস্তিতে রয়েছে বিজেপি। এখন আপ্রাণ সেই ক্ষত মেরামত করতে চাইছেন দলের জেলা নেতৃত্ব।

Advertisement

কৃষ্ণনগরে কল্যাণ চৌবে বিজেপির প্রার্থী হওয়ার পরেই প্রবীণ নেতা সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় ওরফে জলুবাবুর শিবিরের ক্ষোভের মুখে তাঁকে পড়তে হয়। জলুবাবু নিজে মন্তব্য করেছিলেন যে, তিনি কৃষ্ণনগরে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দলীয় কোন্দল এতে স্পষ্ট হওয়ায় শেষে জলুবাবুর হস্তক্ষেপেই বিষয়টির সমাধান হয়। সর্বসমক্ষে নতুন প্রার্থীকে আশীর্বাদ করেন জলুবাবু।

তার পর কিছু দিন কাটতে না কাটতেই ফোর নয়া বিতর্ক। গত রবিবার জেলা বিজেপির কয়েক জন প্রবীণ নেতা সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিযোগ করেন, কল্যাণ চৌবেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে দিচ্ছেন না দলের বর্তমান জেলা নেতৃত্ব। কল্যাণ তাঁদের ফোন ধরছেন না, কথা বলছেন না। অভিযোগকারী নেতারা একদা জেলায় দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। এবং জেলায় বিজেপির ভিত শক্ত করতে তাঁদের অবদান অনেক। চৌবেকে সাহায্য করতেও তাঁরা রাজি। কিন্তু এখনকার কিছু নেতা প্রার্থীর থেকে তাঁদের আলাদা করে রাখছেন, তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁরা দাবি করেন। তাঁদের কথায়, ‘‘এতে ক্ষতি হবে বিজেপির-ই।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এর পরেই ফের বিজেপি-কে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ করে দলের ভাবমূর্তি ধরে রাখতে আসরে নামতে হয়েছে। কারণ, কৃষ্ণনগরে এ বার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা। মহুয়া মৈত্র প্রতিপক্ষ হিসাবে বেশ জোরদার। এই অবস্থায় কল্যাণ নিজে বলেছেন, ‘‘আমার ফোনে প্রতিদিন গড়ে আড়াইশো মিসড কল থাকে। তার মানে এই নয় যে, আমি সেই ফোনগুলো ইচ্ছে করে ধরিনি। আসলে সেই সময় আমি অন্য কোনও কলে কথা বলছিলাম। সেই নম্বরে পরে কলব্যাক করার আগেই ফের অন্য ফোন এসে পড়ছে। ওঁদের নম্বর জোগাড় করে আমি নিজে ওঁদের সঙ্গে কথা বলব।”

তাঁকে ঘিরে যে ভাবে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব সামনে এসে যাচ্ছে তা কি ভোটের ফলাফলে প্রভাব ফেলবে? জবাবে ভারতের জাতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক কল্যাণ বলেন, “দলের এবং সর্বস্তরের মানুষের যে ভালবাসা পেয়েছি তা অভূতপূর্ব। অস্বীকার করার উপায় নেই যে, প্রথমে আমাকে এখানে অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। কিন্তু এখন তাঁরাই বলছেন আমি জলুবাবুর যোগ্য উত্তরসূরী। এখন আমরা সবাই এক হয়ে তৃণমূলের অপশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করছি।” দলের যে নেতারা রবিবার অভিযোগ করেছিলেন তাঁদের প্রসঙ্গে কল্যাণবাবুর মন্তব্য, “যাঁরা এখন দলীয় কাজের মধ্যে নেই তাঁদের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ হয়নি। খুব তাড়াতাড়ি তাঁদের সঙ্গে নিয়েই আমরা লড়াইটা এক সঙ্গে করব।”

নদিয়া উত্তর মণ্ডলের সভাপতি মহাদেব সরকারও বলেন, ‘‘জেলা বিজেপিতে কল্যাণ চৌবেকে নিয়ে কোনও বিরোধ নেই। কেউ ওঁকে নিয়ন্ত্রণ করছে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন