প্রতীকী ছবি।
পশ্চিমবঙ্গের ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে সিদ্ধান্ত বদল ঘটছে বারবার। চতুর্থ দফার ভোটে পশ্চিমবঙ্গে ৫৫৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে বলে বুধবার জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না-কাটতেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল তারা। বৃহস্পতিবার কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পর্বে রাজ্যে বাহিনীর সংখ্যা হবে ৫৮০ কোম্পানি। এবং প্রয়োজনে আধাসেনা তৎপর হবে বুথের বাইরেও।
মঙ্গলবার তৃতীয় দফার নির্বাচনে মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলায় এক ভোটারের মৃত্যুর ঘটনা এই সিদ্ধান্তের অন্যতম কারণ বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের অভিমত।
কমিশন এ দিন পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দিয়েছে, নির্বাচনে ভোটারদের নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টিকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই বুথের পাশাপাশি সেক্টর অফিসেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ব্যবহার করতে চলেছে তারা। এমনকি বুথের ২০০ মিটারের বাইরে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেও প্রয়োজনে পদক্ষেপ করবেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। তেমনই পরিকল্পনা করছে কমিশন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কমিশনের হিসেবে ৫৮০ কোম্পানি বাহিনী দিয়ে ১১০% বুথে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব! তবে কমিশন-কর্তাদের ব্যাখ্যা, চতুর্থ দফার ভোটে ১০০% বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়ার সঙ্গেই কুইক রেসপন্স টিমে (কিউআরটি) বাহিনীর সংখ্যা বাড়ানো হবে। সেই অর্থে ১১০ শতাংশের কথা বলা হচ্ছে। তৃতীয় দফার ভোট মোটের উপরে শান্তিপূর্ণ থাকলেও এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলায়। অভিযোগ ওঠে, কেন্দ্রীয় বাহিনী কাছাকাছি থাকলেও সেখানে থেকে তারা ঘটনাস্থলে যায়নি। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা বলেছিলেন, ইভিএম পাহারাই তাঁদের মূল দায়িত্ব।
চতুর্থ এবং পঞ্চম দফায় রাজ্যের লোকসভা আসনগুলির পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে ভিডিয়ো-সম্মেলনে বৈঠক করেন উপ নির্বাচন কমিশনার তথা রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত সুদীপ জৈন। ভিডিয়ো-সম্মেলনে ছিলেন রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও) আরিজ আফতাব, কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রতিনিধি, রজ্যের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) এবং অন্যান্য পদস্থ কর্তা। ভগবানগোলার ঘটনায় কেন দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনী জওয়ানেরা ঘটনাস্থলে যাননি, তা নিয়ে সেই সম্মেলনে উষ্মা প্রকাশ করেন জৈন।
ওই বৈঠকেই কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, ভবিষ্যতে এই ধরনের কোনও পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আধাসেনাদের হাত গুটিয়ে থাকলে চলবে না। পদক্ষেপ করতে হবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের। উল্লেখ্য, ভগবানগোলার ঘটনার সময় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফের জওয়ানেরাই দায়িত্বে ছিলেন।
পাশাপাশি তৃতীয় দফার ভোটে বিভিন্ন এলাকার পথেঘাটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের কেন দেখা যায়নি, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। এই সব কারণে বাহিনীর সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। কোথাও গোলমাল হলে জওয়ানেরা যাতে তার মোকাবিলা করতে পারেন, সেটাও এর লক্ষ্য।