ভারতী ঘোষ। ফাইল চিত্র
মনোনয়ন জমা দেওয়ার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে সিআইডি জিজ্ঞাসাবাদ করল প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষকে।
দাসপুর সোনা প্রতারণা মামলায় অভিযুক্ত ভারতী এখন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী। আপাতত তিনি ডেরা বেঁধেছেন সেই দাসপুরের কলমিজোড়ে। বৃহস্পতিবারই মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ভারতী। আর শুক্রবারই সিআইডির তদন্তকারীরা পৌঁছে গিয়েছিলেন ভারতীর কলমিজোড়ের ভাড়া বাড়িতে। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত চলে জিজ্ঞাসাবাদ। মাঝে দুপুর ২টো থেকে ৩টে বিরতি।
সকাল থেকেই ভারতীর বাড়ির সামনে ছিল কর্মী-সমর্থকদের ভিড়। ১০টা ২০ মিনিট নাগাদ পৌঁছয় সিআইডির ২০ জনের দল। মিনিট দশেক পর শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ।
টানা জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে মাঝে মাঝে স্লোগান দিয়েছেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। প্রথম দফার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বারান্দায় বেরিয়ে আসেন বিজেপি প্রার্থী। দোতলার উপর থেকেই সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘যাঁরা এসেছেন তাঁরা সকলে কর্মচারী। তাই ঢুকতে বেরোতে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা নীচে দেখতে বলেছি।”
সোনা প্রতারণা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট আগেই জানিয়েছিল, এখনই গ্রেফতার করা যাবে না ভারতীকে। গত মঙ্গলবার ফের সেই মামলা ওঠে সুপ্রিম কোর্টে। রাজ্যে তরফে কপিল সিব্বল প্রাক্তন আইপিএসকে ফের জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চান। ভারতীর আইনজীবী জানান, এক পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত কী ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেবে। এরপর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন বিচারপতি। ওই রাতেই ভারতীর কলকাতার বাড়িতে নোটিস পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৮ এপ্রিল ভবানীভবনে তাঁকে ডেকে পাঠায় সিআইডি। ভারতীর আইনজীবী জানিয়ে দেন, ওই দিন তাঁর মক্কেলের মনোনয়ন থাকায় সিআইডির নোটিস গ্রহণ করেননি তাঁরা।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব মেটার পর সিআইডির আধিকারিকেরা যখন বেরিয়ে যাচ্ছিলেন তখন ফের শুরু হয় স্লোগান। ভারতী নিজে তদন্তকারীদের গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দেন। পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘আমার নাম, স্বামীর নাম, বাড়ি, আধার কার্ড, প্যান নম্বর জানতে চাওয়া হয়েছে, এসবের সঙ্গে মামলার কোনও সম্পর্ক নেই।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অফিসারেরা জানিয়েছেন, আজ, শনিবার ফের আসবেন। আমি বলেছি, আমার প্রচার রয়েছে।’’ ভারতীর আইনজীবী পিনাকী ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে জানানো হচ্ছে।’’ ভারতী বলেন, ‘‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় আমাকে আটকানোর আর কত চেষ্টা হয় তাই দেখছি।’’
সিআইডির এক কর্তা অবশ্য বলছেন, ‘‘মামলার তদন্তের স্বার্থেই সব রকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে। প্রতিহিংসার বিষয় নেই। ওঁকে (ভারতী) ভবানীভবনে আসার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি প্রচারে ব্যস্ত বলে তদন্তকারী অফিসাররা দাসপুরে গিয়ে জিজ্ঞসাবাদ করেছেন।’’
সিআইডির অফিসাররা বেরিয়ে যাওয়ার পর ভারতীকে নিয়ে মিছিল শুরু করেন দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। প্রার্থীর বাড়ি থেকে কলমিজোড় বাজার এবং সেখান থেকে বেলতলা বাজারে পৌঁছয় মিছিল।