Lok Sabha ELection 2019

এক যুগ পর সিপিএমের সেই পার্টি অফিস খুলল নন্দীগ্রামে

পার্টি অফিসের তালা খোলার আগে, রবিবার সকালে নন্দীগ্রামে মিছিল করে বামফ্রন্ট।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৯ ২০:৩৭
Share:

নন্দীগ্রামে সিপিএমের পার্টি অফিস। —নিজস্ব চিত্র।

জমি রক্ষা আন্দোলনের সেই ঝড় তোলা সময়ের পর কেটে গিয়েছে ১২ বছর। এত দিনে তালা খুলল নন্দীগ্রামে বন্ধ পড়ে থাকা সিপিএমের পার্টি অফিস সুকুমার ভবনের। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তমলুকে সিপিএম প্রার্থী হয়েছেন ইব্রাহিম আলি। তাঁর নির্বাচনী কাজ দিয়েই, এই পার্টি অফিসের নতুন করে ব্যবহার শুরু হল।

Advertisement

একটা সময় সিপিএমের এই জোনাল কমিটির অফিসই গোটা নন্দীগ্রামের শাসনের কেন্দ্র ছিল অভিযোগ করতেন বিরোধীরা। কিন্তু ২০০৭ সালে, নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের প্রবল ধাক্কায় পতন ঘটেছিল বামেদের দীর্ঘ দিনের এই দুর্গের। শুধু নন্দীগ্রামে সিপিএমের সবকটা পার্টি অফিসই বন্ধ হয়নি, নন্দীগ্রাম আন্দোলন টার্নিং পয়েন্ট হয়ে গিয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতেই।

এক যুগ বন্ধ সেই পার্টি অফিসের তালা খোলার আগে, রবিবার সকালে নন্দীগ্রামে মিছিল করে বামফ্রন্ট। সকাল ১০টা নাগাদ টেঙ্গুয়া মোড়ে জড়ো হন দলের সমর্থকরা। প্রার্থী ইব্রাহিম আলি ছাড়াও ছিলেন সিপিএমের রাজ্য নেতা রবীন দেব, নিরঞ্জন সিহি, নন্দীগ্রাম এরিয়া কমিটির দলীয় সম্পাদক মহাদেব ভুঁইয়া, যুব সম্পাদক দেবেশচন্দ্র ভুঁইয়া, আরএসপি-র জেলা সম্পাদক অমৃত মাইতি-সহ আরও অনেকে। নন্দীগ্রামের বাজার হয়ে জইরুল মোড় থেকে বাইপাস ধরে মিছিল। নন্দীগ্রাম বাস স্ট্যান্ডে ফিরে এসে তার পর মিছিল পৌঁছয় সুকুমার সেনগুপ্ত ভবনে।

Advertisement

আরও পড়ুন: কংগ্রেসকে ভোট দিলে বিজেপির সুবিধে, দেওবন্দে মুসলিমদের মহাজোটে ভোট দিতে আহ্বান মায়ার​

নিজে হাতে পার্টি অফিসের তালা খোলেন রবীন দেব। সেখানে দলীয় সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘শঙ্কর সামন্তকে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা পুড়িয়ে মারার পর থেকে ১২ বছর বন্ধ ছিল এই পার্টি অফিস। পার্টি অফিসে আগুন ধরানো থেকে ভাঙচুর চালানো, কম ক্ষতি করেনি তৃণমূল। কিন্তু তাতেও ভাঙতে পারেনি আমাদের। শ্রমজীবী মানুষের মন থেকে আমাদের মতাদর্শ মুছে দিতে পারেনি। ইব্রাহিম আলি এ বছর তমলুক থেকে আমাদের প্রার্থী হচ্ছেন। তাঁকে জেতাতে এই পার্টি অফিস থেকেই নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্ম হবে।’’

নন্দীগ্রামের সাধারণ মানুষের উদ্দেশে রবীন দেব বলেন, ‘‘জনগণের টাকাতেই এই অফিস তৈরি হয়েছিল। তাই জনগণের অধিকার আদায়ের দাবি নিয়েই এখান থেকে কাজ করব আমরা। আসন্ন নির্বাচনে আমাদের স্লোগান, বিজেপি হটাও দেশ বাঁচাও। তৃণমূল হটাও রাজ্য বাঁচাও। তোলাবাজি, হানাহানি এবং সাধারণ মানুষকে বিপথে পরিচালিত করার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব আমরা।’’

তমলুকের বামফ্রন্ট প্রার্থী ইব্রাহিম আলি বলেন, ‘‘এক সময় গণতন্ত্র নিয়ে বড় বড় কথা বলেছিলেন অধিকারী পরিবার। আজ সেই তাঁরাই নন্দীগ্রামে দমবন্ধ করা পরিবেশ তৈরি করে রেখেছেন। আজ মিছিল করে দেখলাম, নন্দীগ্রামের মানুষ মুক্ত বাতাস চাইছেন। মুক্তি চাইছেন অধিকারী পরিবারের দাসত্ব থেকে। তাঁদের সেই মুক্ত বাতাস ফিরিয়ে দিতেই লড়াইয়ে নামছি আমরা। তৃণমূল ও বিজেপিকে হারিয়ে তাতে সফল হব বলেই বিশ্বাস আমাদের।’’

আরও পড়ুন: সাংবিধানিক ক্ষমতাই প্রয়োগ করেছি, অভিযোগ দুর্ভাগ্যজনক, মমতাকে পাল্টা চিঠি কমিশনের​

তবে বাম নেতৃত্ব যদিও তৃণমূল বিরোধী লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন, নন্দীগ্রামে তাঁদের পার্টি অফিস খোলা নিয়ে খোঁচা দিতে শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। তাদের দাবি, গত কয়েক বছরে নন্দীগ্রাম-সহ এ রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় বিজেপির ভিত মজবুত হয়েছে। তাদের রুখতে তৃণমূল-ই ইচ্ছাকৃত ভাবে সিপিএমকে পার্টি অফিস খুলতে অনুমতি দিয়েছে বলে মত রাজ্য বিজেপি নেতাদের। কিন্তু তৃণমূল এবং বামফ্রন্ট, দু’পক্ষই সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।

(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন