Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Mayawati

কংগ্রেসকে ভোট দিলে বিজেপির সুবিধে, দেওবন্দে মুসলিমদের মহাজোটে ভোট দিতে আহ্বান মায়ার

কংগ্রেসের প্রতি মায়াবতীর আক্রমণ ছিল আরও তীব্র। আর তার জন্য কংগ্রেসের ‘ন্যায়’ প্রকল্পকেই নিশানা করেন তিনি।

দেওবন্দে মহাজোটের প্রথম সভায় অজিত সিংহ, অখিলেশ যাদব এবং মায়াবতী। নিজস্ব চিত্র।

দেওবন্দে মহাজোটের প্রথম সভায় অজিত সিংহ, অখিলেশ যাদব এবং মায়াবতী। নিজস্ব চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
সাহারানপুর শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৯ ১৬:৪৮
Share: Save:

উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি-বহুজন সমাজ পার্টির মহাজোটের প্রথম জনসভায় কংগ্রেস এবং বিজেপিকে এক যোগে আক্রমণ করলেন মায়াবতী। দেওবন্দের সভায় বিজেপিকে হারাতে মুসলিম সম্প্রদায়কে মহাজোটের পক্ষে ভোট দেওয়ার ডাক দিলেন তিনি। তাঁর যুক্তি, কংগ্রেসকে ভোট দিলে ভোট ভাগাভাগির সুবিধে পেয়ে যাবে বিজেপি। তাই বিজেপিকে হারাতে হলে মহাজোটকে ভোট দেওয়াই এক মাত্র রাস্তা।

কখনও মায়াবতী, কখনও অখিলেশ। উত্তরপ্রদেশে মহাজোটের দুই জোড়া ফলা আক্রমণের জন্য বেছে নিয়েছিলেন কংগ্রেস আর বিজেপি, এই দুই শক্তিকেই। দেওবন্দে নিজেদের প্রথম সভায় অখিলেশ বললেন, ‘‘কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে কোনও ফারাক নেই। তারা একই আয়নার দু’দিকের দুই প্রতিবিম্ব।’’ একই সঙ্গে সমাজের পরিবর্তনের জন্য কংগ্রেসের কোনও সদিচ্ছা নেই, স্রেফ ক্ষমতার জন্য কংগ্রেস সব কিছু করে বলে তোপ দাগেন অখিলেশ।

কংগ্রেসের প্রতি মায়াবতীর আক্রমণ ছিল আরও তীব্র। আর তার জন্য কংগ্রেসের ‘ন্যায়’ প্রকল্পকেই নিশানা করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতি মাসে ৬০০০ টাকা। আমরা সেখানে সরকারি এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’’ কংগ্রেস শাসনে কিছুই করা হয়নি, এই দাবি করে কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতির রাজনীতিকে তুলোধনা করেন মায়া। এই প্রসঙ্গে তুলে আনেন ইন্দিরা গাঁধীর ‘গরিবি হঠাও’ প্রকল্পের কথা। তাঁর কথায়, ‘‘রাহুলের ঠাকুমাও গরিবি দূর করতে ২০টি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু কিছুই হয়নি।’’

আরও পড়ুন: ভোর থেকে কমল নাথ ঘনিষ্ঠদের বাড়িতে আয়কর দফতরের তল্লাশি, উদ্ধার বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা

মায়াবতীর জোরাল আপত্তিতেই সপা-বসপা মহাজোটের বাইরে রাখা হয়েছিল কংগ্রেসকে। তাঁর প্রেক্ষিতেই উত্তরপ্রদেশে প্রায় সব আসনেই লড়ার সিদ্ধান্ত নেয় কংগ্রেস। ভোটের প্রচারে প্রিয়ঙ্কা গাঁধীকে নামিয়ে উত্তরপ্রদেশে নিজেদের অবস্থান আরো শক্ত করার চেষ্টা করছে তারা। কংগ্রেস এবং মহাজোটের মধ্যে ভোট ভাগাভাগি হলে, সেই সুবিধে পেতে পারে বিজেপি, এমন একটা সম্ভাবনা দানা পাকাচ্ছে উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে। তাই কংগ্রেসকে কোণঠাসা করতেই মরিয়া হয়ে উঠছেন মায়াবতী, সেই নজির মিলল দেওবন্দের সভায়।

সাহারামপুর লোকসভা কেন্দ্রের দেওবন্দে জনসংখ্যার একটা বড় অংশ মুসলিম সম্পদায়ের মানুষজন। এখানেই আছে মুসলিমদের ধর্মীয় শিক্ষার অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম। সেই দেওবন্দেই গত ২৫ বছরে এই প্রথম এক সঙ্গে সভা করল সমাজবাদী পার্টি আর বহুজন সমাজ পার্টি। মুসলিম ভোট কাটাকুটি রুখতে মুসলিমদের মহাজোটের পক্ষে ভোট দেওয়ার ডাক দিলেন মায়া। মহাজোটের সভায় অখিলেশ যাদব এবং রাষ্ট্রীয় লোক দল সুপ্রিমো অজিত সিংহকে পাশে বসিয়ে মায়ার দাবি, ‘‘আমি স্পষ্ট ভাষায় জানাচ্ছি, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ছে মহাজোটই। মহাজোট যাতে না জিততে পারে, সেই চেষ্টাই করে চলেছে কংগ্রেস। এই নির্বাচনে বিজেপির সহযোগিতা করছে কংগ্রেস।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বিজেপিকে সুবিধে করে দিতেই এই সাহারানপুরে শেষ মুহূর্তে এক জন মুসলিম প্রার্থীকে দাঁড় করিয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু এখানকার মুসলিমরা জানেন, আমাদের প্রার্থী অনেক আগেই ঠিক করা হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

উত্তরপ্রদেশে এ বারের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে সংখ্যালঘু মুসলিম ভোট। এই রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ১৯ শতাংশ এই সম্প্রদায়ের মানুষ। বিশেষজ্ঞদের হিসেবে, এই ভোটের ৮০ শতাংশই পেয়ে থাকে সমাজবাদী পার্টি। বাকি ভোট যায় কংগ্রেসের দিকেই। সেই ভাগাভাগি আটকাতেই এখন মরিয়া মায়াবতী।

একই সভায় মহাজোটের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপিকেও তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন মায়াবতী। তিনি বলেন, ‘‘ঘৃণার রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার জন্যই বিজেপিকে হারতে হবে। বিশেষ করে ওদের ‘চৌকিদার’ প্রচার। বড় এবং ছোট চৌকিদাররা যতই চেষ্টা করুক, বিজেপির পরাজয় নিশ্চিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE