Lok Sabha Election 2019

ভোটে দেদার ‘ছাপ্পা’, সংঘর্ষের ঘটনার পরেও নির্বাচন কমিশন বলছে চতুর্থ দফা ‘শান্তিপূর্ণ’ই

তবে নির্বাচন কমিশনের দাবি, রাজ্যে চতুর্থ দফার ভোট শান্তিপূর্ণই হয়েছে। সোমবার ভোট শেষে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব বলেন, “কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৯ ২১:২৩
Share:

সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবের সঙ্গে রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) সিদ্ধনাথ গুপ্ত-সহ কমিশনের আধিকারিকরা। —নিজস্ব চিত্র।

চতুর্থ দফায় প্রাণহানির কোনও ঘটনা না ঘটলেও, রাজ্যের আট কেন্দ্রে সকাল থেকেই দেদার ছাপ্পা ভোটের অভিযোগে সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। নানুর, বারাবানি, জেমুয়া, বহরমপুর, নলহাটিতে দফায় দফায় উত্তজনা ছড়িয়েছে। ঝামেলায় জড়িয়েছে তৃণমূল-বিজেপি। বারাবনিতে উত্তেজিত জনতার বিরুদ্ধে আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়র গাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে। বীরভূমের তৃণমূলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে ‘নজরবন্দি’ করলেও, সারা দিনই তিনি ছিলেন স্বমহিমায়। ফোনে প্রিসাইডিং অফিসারকে তিনি চমকেছেন বলেও অভিযোগ।

Advertisement

তবে নির্বাচন কমিশনের দাবি, রাজ্যে চতুর্থ দফার ভোট শান্তিপূর্ণই হয়েছে। সোমবার ভোট শেষে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব বলেন, “কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। তার প্রেক্ষিতে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া ভোট শান্তিপূর্ণই ভাবেই মিটেছে। পঞ্চম দফার ভোটে ১০০ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।”

কিন্তু কমিশনের ‘শান্তিপূর্ণ’ ভোটের যুক্তি মানতে নারাজ বিরোধীরা। বিজেপি, কংগ্রেস এবং বামেদের অভিযোগ, প্রায় ৯৮ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে বললেও, বাস্তবে তা হয়নি। কোথাও কেন্দ্রীয় বহিনীকে ঘুমোতেও দেখা গিয়েছে। কোথাও আবার বাহিনীর সামনেই ছাপ্পা চলেছে। কমিশন রিপোর্ট তলব করে আর প্রিসাইডিং অফিসারকে বদলি করে দায় ঝেড়েছে বলে তাদের অভিযোগ।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বামেদের তরফে রবীন দেব বলেন, ‘‘পুনর্নির্বাচনের দাবি করে কী লাভ? রায়গঞ্জে কয়েকশো বুথে নির্বাচনের দাবি জানানোর পরেও, মাত্র ৩টি বুথে ভোট হচ্ছে।’’ তবে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার পুনর্নির্বাচনের দাবিতে সরব হন। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চম দফার ভোটের আগে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রিভিউ মিটিং হওয়া উচিত। পুলিশ-প্রশাসনকে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে দেওয়া হচ্ছে না।’’ কমিশনের ভূমিকাতে সন্তুষ্ট নন কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্যও।

আরও পড়ুন: ৪০ তৃণমূল বিধায়ক যোগাযোগ রাখছেন! দাবি মোদীর, ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগ তৃণমূলের

এ দিন বিভিন্ন জায়গায় শুধু অশান্তিই হয়নি, বীরভূমের পারুই এবং দুবরাজপুরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে গুলি চালানোরও অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে আরিজ আফতাব বলেন, “দু’টি ঘটনাতেই গ্রামবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর করা হচ্ছে। সিআরপিএফের তরফেও পাল্টা অভিযোগ দায়ের হয়েছে।”

বারাবনির ১৯৯ নম্বর বুথে বাবুল সুপ্রিয় নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে ঢুকে পড়েন বলে অভিযোগ। ওই বুথের প্রিসাইডিং অফিসারকে হুমকি দেওয়া হয় বলেও নালিশ আসে কমিশনে। ওই ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করেছে কমিশন। বারাবনি থানায় বাবুলের বিরুদ্ধে এফআইআরও হয়েছে। ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, বিজেপির আর এক নেতা বীরভূমের দুধকুমার মণ্ডলের বিরুদ্ধেও। তিনি মযূরেশ্বরে একটি বুথে মোবাইল ফোন নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন। তাঁকে শো-কজ করা হয়। কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবেকেও একই অভিযোগে শো-কজের চিঠি ধরানো হয়েছে বলে কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে।

আরও পডুন: ‘বেলা করে বেড-টি দিল যে!’ দেরিতে ঘুম ভাঙায় গোলমালের খবর পাননি মুনমুন

কমিশনের নোডাল অফিসার তথা রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) সিদ্ধনাথ গুপ্ত বলেন, “মোট ৬টি এফআইআর হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ১৪৫ জনকে।”

এ দিনও ‘ভোটকর্মী ঐক্য মঞ্চের’ তরফে আলতাফ আহমেদ এবং স্বপন মণ্ডল দেখা করেন নির্বাচন কমিশনে। তাঁরা ভোটকর্মীদের নিরাপত্তার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর বণ্টন ব্যবস্থা এবং ভোট সন্ত্রাস মুক্ত করার দাবি জানান। পঞ্চম দফায়, তা না হলে নির্বাচনের কাজ থেকে বিরত থাকারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভোটকর্মীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন