ভোট-ষষ্ঠীতে আগামী ১২ মে দক্ষিণবঙ্গের মোট আটটি কেন্দ্রে নির্বাচন হবে। ওই আট আসনের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের ধারায় মামলার সংখ্যা ও ধনসম্পদের পরিমাণের নিরিখে শীর্ষে রয়েছে ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্র। ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের ধারায় মামলা রয়েছে সব চেয়ে বেশি। আবার ওই কেন্দ্রেরই তৃণমূল প্রার্থী এবং চলচ্চিত্র তারকা দেব ওরফে দীপক অধিকারীর সম্পদের পরিমাণ সর্বাধিক।
প্রাক্তন আইপিএস অফিসার ভারতীর নির্বাচনী হলফনামা বলছে, তাঁর বিরুদ্ধে ১১টি মামলা রয়েছে এবং সব মিলিয়ে গুরুতর অপরাধের ২৪টি ধারা দেওয়া হয়েছে। বস্তুত, মোট মামলার নিরিখে ৮৩ জন প্রার্থীর মধ্যে প্রথমে রয়েছেন ভারতীর দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি মেদিনীপুরের প্রার্থী। তবে মামলার সংখ্যায় তিনি এগিয়ে থাকলেও গুরুতর অভিযোগের মামলা বেশি ভারতীর বিরুদ্ধেই। দিলীপের বিরুদ্ধে গুরুতর ধারা রয়েছে মাত্র তিনটি। ভারতীর ২৪টি। তাঁর আইনজীবীর দাবি, এ-সবই মিথ্যা মামলা।
মঙ্গলবার আটটি কেন্দ্রের ৮৩ জন প্রার্থীর হলফনামা বিশ্লেষণ করে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ ইলেকশন ওয়াচ এবং এডিআর। তাদের রিপোর্ট বলছে, এই দফায় রাজ্যের অন্যতম দুই ধনী প্রার্থী দেব ও ভারতী মুখোমুখি লড়ছেন। দেবের সম্পদের মূল্য ৩১ কোটি টাকার বেশি। ভারতীর ১৮ কোটি টাকার বেশি। ধনী ও নির্ধন প্রার্থীর বিচিত্র সমাবেশ এই দফায়। হলফনামা অনুযায়ী পুরুলিয়ার এসইউসি প্রার্থী রঙ্গলাল কুমারের মোট সম্পদের পরিমাণ ৫০০ টাকা এবং বাঁকুড়ার সিপিআইএমএল রেড স্টার প্রার্থী সুখচাঁদ সরেনের মোট সম্পদের পরিমাণ ৮০০ টাকা!
এই পর্যায়ে রয়েছেন বিষ্ণুপুরের একদা তৃণমূল সাংসদ এবং বর্তমানে বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। তাঁর বিরুদ্ধে ছ’টি মামলা রয়েছে। এই পর্যায়ে আট জন তৃণমূল প্রার্থীর মধ্যে চার জনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। ঝাড়গ্রামের তৃণমূল প্রার্থী বিরবাহা সরেনের বিরুদ্ধে বধূ-নির্যাতন এবং বাঁকুড়ার প্রার্থী তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নারদ মামলায় অভিযোগ রয়েছে।
তবে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে মামলার শতাংশের হিসেবে এগিয়ে সিপিএম। তাদের পাঁচ জন প্রার্থীর মধ্যে চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। শতাংশের বিচারে ৮০%। বিজেপির ৭৫% প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা আছে। তাদের আট প্রার্থীর মধ্যে অভিযুক্ত ছ’জন।
পশ্চিমবঙ্গ ইলেকশন ওয়াচের রাজ্য কো-অর্ডিনেটর উজ্জয়িনী হালিম জানান, এই দফায় মোট ১৬ জন প্রার্থী কোটিপতি। আবার এই দফাতেই ৪৩ জন প্রার্থী আয়কর রিটার্ন দাখিল করেননি। এই দফায় সব দলের প্রার্থীদের সম্পদ যোগ করলে এক-এক জনের গড় সম্পদ দাঁড়ায় এক কোটি টাকার বেশি। এই পরিস্থিতিতে ৪৩ জনের আয়কর রিটার্ন দাখিল না-করাটা কিন্তু ভাল লক্ষণ নয়।