সংসদে বাংলাই, ভারতীকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ দেবের

এলাকার সাংসদ হিসেবেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে সংসদে বিতর্কে অংশ নিয়েছিলেন বিদায়ী সাংসদ দেব। কথা বলেছিলেন বাংলায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পিংলা ও পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৯ ০৩:৪৮
Share:

জবাব: পিংলার কর্মিসভায় দেব। শনিবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

তিনি বাঙালি। বাংলা থেকে বাঙালির ভোটে জিতে সংসদে যাওয়ার প্রত্যাশী। কিন্তু লোকসভায় বাংলায় বক্তৃতা করাতে তাঁর ঘোর আপত্তি। তাঁর অভিমত, “পার্লামেন্ট হল ইংরেজি বলতে পারা শিক্ষিত লোকের জায়গা।’’ সেখানে বাংলা ভাষাকে ঠাঁই দিতে তিনি নারাজ।

Advertisement

এমনই এক ‘শিক্ষিত’ ইংরেজিপ্রেমী প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষকে ঘাটালে প্রার্থী করেছে বিজেপি। বিজেপি সম্পর্কে ইতিমধ্যেই হিন্দি বলয়ের দল বলে প্রচার প্রতিষ্ঠিত। অসমে এনআরসি-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে দলের গায়ে ‘বাঙালি বিদ্বেষী’ তকমাও পড়েছে। এ বার সংসদে বাংলা বলা উচিত নয় বলে ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন।

এলাকার সাংসদ হিসেবেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে সংসদে বিতর্কে অংশ নিয়েছিলেন বিদায়ী সাংসদ দেব। কথা বলেছিলেন বাংলায়। সে প্রসঙ্গ টেনেই শুক্রবার ভারতী কটাক্ষ করেন, “পার্লামেন্ট হল ইংরেজি বলতে পারা শিক্ষিত লোকেদের জায়গা। যদি তিনি ইংরেজি বলতে না পারেন, তবে আমাকে ডাকতে পারেন।”

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

শনিবার পিংলার দুজিপুরে কর্মি সম্মেলনে দেব পাল্টা বলেন, “আমি গর্ব বোধ করি যে আমি বাঙালি, বাংলায় কথা বলেছি। যদি আপনাদের আশীর্বাদে আবার জিতি, তবে আবার পার্লামেন্টে বাংলাতেই কথা বলব।’’ বিকেলে পাঁশকুড়ায় প্রচারে গিয়েও দেবের মন্তব্য, ‘‘একজন বাঙালি হয়ে যদি বাংলায় কথা বলতে অসুবিধা হয়, তবে তো বাঙালি হওয়াই উচিত নয়।”

ভারতী কিন্তু অনড়ই। তাঁর যুক্তি, ‘‘যেখানে যাব সেখানে তেমনই হতে হবে। সংসদে মানুষের কথা বলতে গেলে হয় হিন্দি, নয় ইংরেজিতে বলাই নিয়ম। কেউ যদি এ সব জায়গায় বাংলায় বলে নিজের পিঠ চাপড়ে বলেন, ‘আমি বাঙালি’, আমি তাঁকে অনভিজ্ঞ বলব।’’ যদিও ভারতীর দলই তাঁর এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত নয়। দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘সংসদে মাতৃভাষায় বক্তৃতা করা যাবে না এমন কোথাও বলা নেই।’’

এ দিন দেবকে দেখতে চড়া রোদেও ভিড় জমেছিল পিংলায়। তবে বিকেলে পাঁশকুড়ায় দেব যখন মঞ্চে যান তখনও সভাস্থল পুরো ভরেনি। কেন? তৃণমূলের একাংশই মনে করাচ্ছেন, পুরপ্রধান নন্দকুমার মিশ্রের অনুগামীদের সঙ্গে ব্লক নেতা কুরবান শা-র ঘনিষ্ঠদের বিরোধ বহু দিনের। তা ছাড়া, কাউন্সিলর আনিসুর রহমান বিজেপিতে যাওয়ার পরে পাঁশকুড়ায় সমীকরণ বদলেছে। এই সব অঙ্কেই এ দিন মাঠ পুরো ভরেনি বলে তৃণমূলের এক সূত্রের দাবি। নন্দ মিশ্র যদিও বলছেন, ‘‘দেবকে সকলে কাছ থেকে দেখতে চায়। তাই গোটা ভিড়টাই ছিল মঞ্চের কাছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন