চেনা না নতুন মুখ, বাছতে সঙ্কট বামে

অন্যান্য বার তারা লড়ে ৩২ আসনে। এ বার বাকি আসন তারা সমঝোতার ভিত্তিতে ছেড়ে রাখতে চায় কংগ্রেসের জন্য।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

কঠিন সময়ে পুরনো পরীক্ষিত মুখেই ভরসা রাখতে চান নেতাদের একাংশ। অন্য একাংশের আবার মত, হারানোর এখন কিছুই নেই। পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর এটাই তাই আদর্শ সুযোগ। এই দুই মতের টানাটানিতে এ বার রাজ্যে লোকসভা ভোটের প্রার্থী বাছাই করতে গিয়ে সঙ্কটে পড়েছে বামেরা।

Advertisement

নীতিগত ভাবে সিপিএম ঠিক করে রেখেছে, ২০-২২টির বেশি আসনে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায় না। অন্যান্য বার তারা লড়ে ৩২ আসনে। এ বার বাকি আসন তারা সমঝোতার ভিত্তিতে ছেড়ে রাখতে চায় কংগ্রেসের জন্য। কিন্তু নিজেদের ঘরের প্রস্তুতির জন্য ৩২টি আসনেই প্রার্থী বেছে রাখতে চাইছে আলিমুদ্দিন। তিন শরিক দলও তাদের ভাগের ১০টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাইয়ে হাত দিয়েছে। এবং সেখানেই প্রকট হচ্ছে নতুন-পুরনোর দ্বন্দ্ব।

বাসুদেব আচারিয়া, অসীম দাশগুপ্ত, আবুল হাসনাত খান, মনোহর তিরকি, সুভাষ নস্কর, নুরুল হুদার মতো পুরনো সৈনিকদের এ বার আর ভোটের ময়দানে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা কম। সুজন চক্রবর্তী, শমীক লাহিড়ী, তড়িৎ তোপদার, শ্রীদীপ ভট্টাচার্যদেরও দলে বর্তমান দায়িত্বের কথা মাথায় রেখে লোকসভা ভোটে আর দাঁড় করাতে চায় না সিপিএম। কিন্তু জেলায় জেলায় কেন্দ্র ধরে ধরে সেই দলেরই যে সাধারণ সভা চলছে, সেখানে নিচু তলার কর্মীদের অনেকেই ‘অভিজ্ঞ প্রার্থী’ দাবি করছেন। তাঁদের বক্তব্য, একেবারে আনকোরা মুখ নিয়ে এই দুর্দিনের বাজারে লড়াই করতে নামলে আরও ভুল বার্তা যেতে পারে। তার চেয়ে শত প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও যাঁরা সংগঠনের সব দায়িত্ব সামলেছেন, সেই চেনা মুখেদেরই সামনে রাখা হোক।

Advertisement

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য মেনে নিচ্ছেন, ‘‘কাজটা কঠিন! দু’রকম দাবিই নেতা-কর্মীদের মধ্যে আছে। জেলা নেতৃত্বের কাছ থেকে এই জন্যই আসনপিছু একাধিক সম্ভাব্য নাম চাওয়া হয়েছে। তার পরে সব দিক বিবেচনা করে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।’’ আলিমুদ্দিনে কাল, বৃহস্পতিবার সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠক। কিছু জেলা ইতিমধ্যেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম আলিমুদ্দিনে পাঠিয়ে দিয়েছে। বাকি জেলাগুলিকেও রাজ্য কমিটির কাছে তালিকা জমা দিতে বলা হয়েছে।

দলের রাজ্য কমিটির এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘রাজ্য ও জাতীয় রাজনীতিতে এত কঠিন পরিস্থিতিতে নির্বাচনী লড়াই সাম্প্রতিক অতীতে কখনও করতে হয়নি। এই অবস্থায় আমাদের পক্ষে সেরা চমক হতে পারে নতুন, তরতাজা মুখদের এগিয়ে দেওয়াই।’’ আবার শরিক দলের এক বর্ষীয়ান নেতার যুক্তি, ‘‘একটা লোকসভা কেন্দ্র মানে সাতটা বিধানসভা আসন। নতুন কাউকে নিয়ে মানুষের কাছে পরিচয় করাতেই অনেকটা পরিশ্রম করতে হবে। তাই চেনা মুখদের একেবারে বাদ দিয়ে ফেলা কঠিন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement