ছবি: পিটিআই।
সকালেই নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করেছিলেন অমিত শাহ। সন্ধেবেলাই সক্রিয় হয়ে বাংলার জন্য ৩২৪ ধারা প্রযোগ করল নির্বাচন কমিশন।
বিরোধীরা এত দিন বলছিলেন, প্রচারে এ যাবৎ বিস্তর কুকথা বললেও মোদী আর অমিত শাহের কোনও দোষ খুঁজে পায়নি নির্বাচন কমিশন। সেই অমিত শাহই আজ ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ নির্বাচন কমিশন তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ তুললেন। বললেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখা সত্ত্বেও তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না কমিশন। রাজ্যে ছ’টি পর্বের ভোটে সন্ত্রাস হওয়া সত্ত্বেও নীরব দর্শক হয়ে আছে তারা।’’
বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনায় হিতে বিপরীত হয়েছে বুঝে আজ তড়িঘড়ি ক্ষত মেরামতে নামে বিজেপি। সকালে সাংবাদিক সম্মেলন করে গোটা ঘটনায় তৃণমূলকে দায়ী করার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে সরব হন শাহ। বলেন, ‘‘গোটা দেশে এক ভাবে নির্বাচন হচ্ছে আর পশ্চিমবঙ্গে আর এক ধাঁচের নির্বাচন হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।’’ রাজনৈতিক শিবির বলছে, মূর্তি ভাঙার দায় এড়াতেই কমিশনের ঘাড়ে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার কৌশল নিতে চেয়েছে বিজেপি। বোঝাতে চেয়েছে নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতার কারণেই গত কালের ওই হাঙ্গামা ঘটেছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
উল্টো দিকে আজ তৃণমূল নেতারাও দিল্লিতে কমিশন কর্তাদের হাতে কলকাতার সংঘর্ষে বিজেপির ভূমিকার ভিডিয়ো ‘প্রমাণ’ তুলে দেন। পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ নির্বাচনী কমিশনার সুদীপ জৈন বিজেপির এজেন্ট হয়ে কাজ করছেন বলে কমিশন কর্তাদের কাছে অভিযোগে জানায় তৃণমূল শিবির। বৈঠক থেকে বেরিয়ে সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘গত কালের হাঙ্গামার জন্য যে বিজেপি দায়ী, সেই ফুটেজ জমা দিয়েছি। শেষ পর্বের নির্বাচনে বিজেপি রাজ্যে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চাইছে।’’
গত কালের ঘটনার পরেই মমতার প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করার দাবি তুলে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নির্মলা সীতারামন, মুখতার আব্বাস নকভিরা। কমিশন এ নিয়ে পদক্ষেপ করবে কি না সেই প্রশ্নের উত্তরে অমিত বলেন, ‘‘মনে হয় না নির্বাচন কমিশন কোনও ব্যবস্থা নেবে। কমিশন পক্ষপাতিত্ব করছে।’’ এর পরই সন্ধেবেলা কমিশন সক্রিয় হয়ে ওঠে।
আজ পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে সরব হন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহও। শাহের বিরুদ্ধে এফআইআর করার সিদ্ধান্তকে ‘গণতন্ত্রের জন্য উপহাস’ বলে মন্তব্য করে রাজনাথ বলেন, ‘‘রাজ্য তার প্রশাসনকে অপব্যবহার করে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করছে।’’ পশ্চিমবঙ্গের ছ’টি দফার ভোটে হিংসা নিয়ে কমিশনের রিপোর্ট চেয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সূত্রের খবর, আজ রাজ্য কমিশনের পক্ষ থেকে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে একটি রিপোর্ট পাঠানো হয়। যার ভিত্তিতে প্রাথমিক ভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে জবাব দেয় কমিশন।