—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে যে ১০টি বিধানসভায় সবচেয়ে বেশি ভোটার বাদ পড়েছেন তার মধ্যে ন’টিই কলকাতার। কোন কোন বিধানসভায় সবচেয়ে কম ভোটারদের নাম বাদ গিয়েছে, এমন ১০টি বিধানসভারও তালিকা প্রকাশ করেছে কমিশন।
গত ২৭ অক্টোবর রাজ্যে এসআইআরের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিল কমিশন। সে দিন পর্যন্ত রাজ্যে মোট ভোটার ছিলেন ৭ কোটি ৬৬ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫২৯। কমিশন সূত্রের দাবি, এনুমারেশন ফর্মে শুধুমাত্র সই থাকলেই খসড়া তালিকায় নাম তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে অনেকের নামই ভোটার তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। হয় মৃত, নয়তো ওই এলাকায় আর থাকেন না— এমন ভোটারদেরই খুঁজে খুঁজে বাদ দেওয়া হয়েছে। কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মোট বাদ যাওয়া ভোটারের সংখ্যা ৫৮ লক্ষ ২০ হাজার ৮৯৯।
কোন বিধানসভায় কত ভোটার বাদ গিয়েছে, তার পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে কমিশন। দেখা যাচ্ছে, উত্তর কলকাতাতেই সবচেয়ে বেশি ভোটারের নাম বাদ পড়েছে। অর্থাৎ, আগে ভোটার তালিকায় ছিল, অথচ খসড়া তালিকায় নাম নেই তাঁদের। সেই হিসাবের নিরিখে তালিকায় শীর্ষে রয়েছে উত্তর কলকাতার জোড়াসাঁকো বিধানসভা কেন্দ্র। এই কেন্দ্র থেকে বাদ পড়েছেন ৭২,৮৯৯ জন অর্থাৎ মোট ভোটারের ৩৬.৮৫ শতাংশ। তার পরেই রয়েছে উত্তর কলকাতারই চৌরঙ্গি বিধানসভা। ওই কেন্দ্রে বাদ পড়া ভোটারের সংখ্যা ৭৪,৫১০ (৩৫.৪৪ শতাংশ)। তালিকায় তিন নম্বরে রয়েছে হাওড়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র। কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এই কেন্দ্রে বাদ পড়া ভোটারের সংখ্যা ৬০,৪৩৬ (২৬.৯৬ শতাংশ)।
বাদ পড়া ভোটারের তালিকায় তার পরেই রয়েছে কলকাতা পোর্ট (৬৩, ৭১৭/২৬.১৭ শতাংশ), বালিগঞ্জ (৬৫,১৬৫/২৫.৫৪ শতাংশ), শ্যামপুকুর (৪২,৩০৪/২৪.০৬ শতাংশ), কাশীপুর-বেলগাছিয়া (৫৩,৩৬৫/২৩.৯৬ শতাংশ) এবং বেলেঘাটা (৫৬,৪৯৩/২২.৪২ শতাংশ)।
সবচেয়ে কম ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ যাওয়ার নিরিখে ১০টি বিধানসভার পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে কমিশন। সেই হিসাব অনুযায়ী, রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে কম ভোটার বাদ পড়েছে বাঁকুড়ার কোতুলপুর বিধানসভা কেন্দ্র। এই কেন্দ্রে বাদ পড়া ভোটারের সংখ্যা ৫,৬৭৮। শতাংশের হিসাবে ২.২১। ওই তালিকায় তার পরে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার। বাদ পড়া ভোটারের সংখ্যা ৬,৬৫১ (২.৪৬ শতাংশ)। এ ছাড়াও ওই তালিকায় রয়েছে সবং (৬,৯৭৬/২.৫ শতাংশ), করিমপুর (৬,৫৫৯/২.৫১ শতাংশ), পটাশপুর (৬,৪১৮/২.৫৫ শতাংশ), ভগবানপুর (৬,৮৫৩/২.৫৫ শতাংশ), মহিষাদল (৬,৬৮০/২.৫৮ শতাংশ), ময়না (৭,১০১/২.৬২ শতাংশ), কাঁথি উত্তর (৭,২৬৪/২.৬৯ শতাংশ) এবং চণ্ডীপুর (৭,১২০/২.৭২ শতাংশ)।
তালিকায় কোনও অভিযোগ বা ত্রুটি থাকলে কমিশনকে জানাতে হবে। তার ভিত্তিতে হবে শুনানি। তথ্যপ্রমাণ যাচাই করে চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করবে কমিশন। তা প্রকাশ করা হবে ২০২৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। ভোটারদের মোট তিনটি তালিকায় ভাগ করেছে কমিশন— নিজস্ব ম্যাপিং, প্রোজেনি ম্যাপিং এবং নন-ম্যাপিং। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় (রাজ্যে শেষ বার এসআইআর হয়েছিল ২০০২ সালে) যাঁদের নাম ছিল, তাঁরা নিজস্ব ম্যাপিংয়ের তালিকায় পড়ছেন। যাঁদের নাম ২০০২ সালের তালিকায় না-থাকলেও বাবা-মা বা আত্মীয়ের নাম আছে, তাঁরা প্রোজেনি ম্যাপিং তালিকায় রয়েছেন। এ ছাড়া, যাঁদের নিজেদের নাম বা আত্মীয়ের নামও ২০০২ সালের তালিকায় নেই। তাঁরা নন-ম্যাপিং তালিকাভুক্ত।