ছবি: সংগৃহীত
চলতি নির্বাচনে প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার দাবি মানতে গিয়ে সাত বছরের পুরনো বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা বদলে দিয়েছিলেন বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে। তাতে সায় দিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেই অনুযায়ী গত ২৯ এপ্রিল চতুর্থ দফায় প্রায় প্রতিটি বুথেই আধাসেনা মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর তৎপরতা তেমন দেখা যায়নি বলে সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।
বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষক ও জেলা পুলিশ যে-ভাবে বাহিনী মোতায়েন করছে, তা নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে আপত্তি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর স্টেট ফোর্স কো-অর্ডিনেটর ওয়াইবি খুরানিয়া। তিনি সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-র দক্ষিণবঙ্গের আইজি। কেন্দ্রীয় বাহিনীর আপত্তি উড়িয়ে দিয়েই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষকের দাবি মেনে নিয়েছে।
বিবাদবিতর্ক ঠিক কী নিয়ে?
কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি, ২০১২ থেকে এক কোম্পানি বাহিনীর মধ্যে ৬৪ জন (আট সেকশন)-কে বুথ রক্ষার কাজে লাগানো হয়। বাকি এক সেকশন বা আট জন জওয়ান থাকেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডান্টের সঙ্গে। মূলত কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) এবং বুথের বাইরের অশান্তি মোকাবিলায় তাঁদের ব্যবহার করা হত। কিন্তু প্রতি বুথে বাহিনী মোতায়েনের দাবি ওঠায় জেলা পুলিশ এ বার একটি কোম্পানি থেকে ৭২ জন জওয়ানকেই বুথে রাখার প্রস্তাব দেয়। বিবেকও তা মেনে নিয়ে আধাসেনা মোতায়েন পরিকল্পনা বদলানোর সুপারিশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে। সেই অনুযায়ী গত ২৩ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়ে দেয়, ভোটের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডান্টদের সঙ্গে কোনও জওয়ান থাকবেন না। বুথে দিয়ে দেওয়া হবে সকলকেই।
এই সিদ্ধান্তের ফলে কুইক রেসপন্স টিমের ভার চলে যায় রাজ্য পুলিশের হাতে। বিষয়টি জেনে গত কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্তা খুরানিয়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে চিঠি লিখে জানান, যে-ভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে, তাতে ভোটের দিন কোনও জওয়ানই কোম্পানি কমান্ডারের হাতে থাকছেন না। ফলে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তা সামাল দেওয়া যাবে না।
গত ২৯ এপ্রিল ভোট-চতুর্থীতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর স্টেট ফোর্স কো-অর্ডিনেটরের আশঙ্কাই সত্যি হয়। এক কর্তার দাবি, ভূরি ভূরি অভিযোগ এলেও কেন্দ্রীয় বাহিনী রাস্তায় ছিল না। গোলমাল সামলানোর দায়িত্ব ছিল রাজ্য পুলিশের উপরে। কোথাও ঠিক সময়ে পুলিশ যায়নি, গেলেও পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঢিলেমি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিরোধী দলগুলি। ৬ মে পঞ্চম দফার ভোটে বুথের বাইরের অশান্তি মোকাবিলার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডারদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া দাবি উঠেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক অবশ্য এই বিষয়ে চূড়ান্ত কিছু জানায়নি।