ভোট পর্বেও ১০০ দিনের কাজ দিতে ঢালাও আর্জি

কাজ প্রকল্পে কাজ চাওয়ায় খামতি নেই। কাজ চেয়ে পঞ্চায়েতে আবেদনের সংখ্যা সামান্য কমলেও যত আবেদন জমা পড়েছে, তা কম উল্লেখযোগ্য নয়।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৪৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

তুলনায় আবেদন কিছুটা কম। কিন্তু বৃহত্তম গণতন্ত্রের মহাযজ্ঞেও ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে কাজের আশায় আবেদনের বিরাম নেই!

Advertisement

লোকসভার ভোট ঘোষিত হয়েছে ১১ মার্চ। সেই থেকে সারা দেশেই বলবৎ রয়েছে আদর্শ আচরণবিধি। সরকারি কর্মী থেকে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের অধিকাংশই নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত। তার পরেও দেখা যাচ্ছে, মার্চ-এপ্রিলে ভোটের মরসুমেও ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে কাজ চাওয়ায় খামতি নেই। কাজ চেয়ে পঞ্চায়েতে আবেদনের সংখ্যা সামান্য কমলেও যত আবেদন জমা পড়েছে, তা কম উল্লেখযোগ্য নয়। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, একই প্রবণতা মধ্যপ্রদেশে, রাজস্থানের মতো রাজ্যেও। ফলে প্রশাসনিক মহলেই একাংশের প্রশ্ন, ভোটের বাজারে তো কাজ প্রায় বন্ধ, তবু এত আবেদন জমা পড়ছে কী ভাবে? আবেদনকারীরা কাজই বা পাচ্ছেন কোথা থেকে?

রাজ্যের এক শীর্ষ পঞ্চায়েতকর্তা বলেন, ‘‘নির্বাচনী আচরণবিধিতে ১০০ দিনের কাজ আটকায় না। ফলে নিয়ম মেনেই কাজ চলছে। তুলনায় কম কাজ হচ্ছে।’’ কিন্তু পঞ্চায়েত স্তরেও কর্মী, জনপ্রতিনিধিদের প্রায় সকলেই তো এখন ভোটের কাজে ব্যস্ত। তা হলে ওই প্রকল্পে কাজের ব্যবস্থা করছেন কারা? ওই কর্তার জবাব, ‘‘জেলা পরিষদে ১০০ দিনের কাজের শাখা অনেকটাই স্বাধীন ভাবে কাজ করে। আগাম পরিকল্পনা করা থাকে। তাই পঞ্চায়েতগুলির কাজ দিতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পঞ্চায়েত দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশ ভোটের মধ্যে আবেদনকারীদের কাজের ব্যবস্থা করে দিতে উৎসাহী। ফলে যাঁরা ভোটের কাজ করছেন, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পও তাঁদের দায়িত্বের তালিকায় রয়েছে।

কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সূত্র অনুযায়ী মার্চ ও এপ্রিলে বাংলায় প্রায় সাত লক্ষ ১৫ হাজার পরিবার ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ চেয়েছে। এপ্রিলে যখন রাজ্যের দু’দফার ভোট শেষ, তখনও কাজ পেতে আগ্রহী পাঁচ লক্ষ ৭৫ হাজার মানুষ। ভোটের মাসেই কাজ চেয়েছেন তাঁরা। কর্তাদের মতে, ১৫ দিনের মধ্যে কাজ দিতে না-পারলে ভাতা দিতে হয় আবেদনকারীদের। তাই অনেক ক্ষেত্রে কাজ দিতে না-পারলেও কাজ দেওয়ার ‘অফার’ দিয়ে রাখতেই হচ্ছে।

রাজ্যের পরিসংখ্যানে অবশ্য চমকে ওঠার কারণ নেই বলে দাবি করছেন পঞ্চায়েতকর্তারা। ১০০ দিনের কাজে বাংলার মতোই

এগিয়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ইত্যাদি রাজ্য। ওই রাজ্যগুলির রুক্ষ জমিতে মাটি কাটার কাজ করার আগ্রহ প্রবল। মধ্যপ্রদেশেও মার্চ-এপ্রিলে ২১ লক্ষের বেশি এবং রাজস্থানে

প্রায় ৫৪ লক্ষ পরিবার কাজ চেয়ে আবেদন করেছে। যদিও তাদের সকলের জন্য কাজের ব্যবস্থা করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট রাজ্য।

বাংলার ক্ষেত্রে গড়ে প্রতি মাসে সাত লক্ষ পরিবার কাজ চেয়ে থাকে। ভোটের মরসুমে তা প্রায় অর্ধেক হয়েছে। কিন্তু মানুষের কাজ চাওয়ার বিরাম নেই। পঞ্চায়েতকর্তাদের দাবি, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের কাঠামোটি পোক্ত বলেই এখানে সেই সব আবেদন সামলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন