প্রার্থীর আগে ‘কমরেড’, বিজেপি যাচ্ছে কমিশনে

ক’দিন আগেই ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষের প্রচারে গিয়ে কর্মী-সমর্থকদের ভিড়ের মাঝেই শুনেছিলেন ‘লাল সেলাম’ স্লোগান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:৩৫
Share:

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে এই ছবিই।

দেওয়ালে লেখা বিজেপি প্রার্থীর নাম। পাশে রংচঙে পদ্ম। তবে প্রার্থীর নামের আগে সবুজ কালিতে লেখা কমঃ (কমরেড)! যেমনটা বামপ্রার্থীর নামের আগে থাকে।

Advertisement

ক’দিন আগেই ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষের প্রচারে গিয়ে কর্মী-সমর্থকদের ভিড়ের মাঝেই শুনেছিলেন ‘লাল সেলাম’ স্লোগান। এ বার ঝাড়গ্রামের পদ্ম-প্রার্থীর কুনার হেমব্রমের সমর্থনে লেখা ওই দেওয়ালের ছবি ছড়িয়েছে সমাজ মাধ্যমে । জঙ্গলমহলের জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।

এই কাণ্ড ঘটল কী করে? বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথীর দাবি, ‘‘ওটা আমাদের কোনও দেওয়াল লিখনই নয়। ঝাড়গ্রাম আসনে কুনারের জয় নিশ্চিত। সেটা বুঝেই তৃণমূলের লোকেরা সাজানো দেওয়াল লিখনের ছবি সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করেছে। কোথায় এমন দেওয়াল লেখা হয়েছে আমরা তার হদিস পাইনি। কমিশনকে বিষয়টি জানাব।’’ আর কুনার নিজে বলছেন, ‘‘নানা ভাবে আমাকে হেয় করার চেষ্টা হচ্ছে। মানুষ নির্বাচনে এর জবাব দেবেন।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ভারতী যে দিন বিজেপি কর্মীদের মাঝে ‘লাল সেলাম’ শুনেছিলেন, সে দিনও তৃণমূলের দিকেই আঙুল তুলেছিলেন ঘাটালের বিজেপি নেতৃত্ব। তবে ঝাড়গ্রামের দেওয়াল লিখনের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদার ব্যাখ্যা, ‘‘জঙ্গলমহলে সিপিএমের লোকেরাই বিজেপি-র হাত শক্ত করছেন। সিপিএমের সেই সব কমরেড পুরনো অভ্যাসে এ সব লিখে থাকতে পারেন।’’ যদিও সিপিএমের জেলা সম্পাদক পুলিনবিহারী বাস্কের দাবি, ‘‘আমাদের ভোটারদের বিভ্রান্ত করতেই বিজেপি তাদের প্রার্থীর নামের আগে কমরেড লিখছে।’’

সারা রাজ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জঙ্গলমহলেও বামেদের বহু কর্মী-সমর্থক এখন গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। বিশেষ করে গত পঞ্চায়েত ভোটের আগে-পরে সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের প্রবণতা দেখা গিয়েছিলেন। ফলে, বিজেপি-র অন্দরে গুঞ্জন, তাঁদের কেউ এ রকম দেওয়াল লিখতেই পারেন। তেমন কিছু ঘটেছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও দলের এক সূত্রে খবর।

ঝাড়গ্রামের বিজেপি কুনার হেমব্রমের সমর্থনে দেওয়াল লেখা নিয়ে আগেও এক দফা বিতর্ক হয়েছে। ৫৭ বছরের কুনার বিজেপি-র আদিবাসী মোর্চার ঝাড়গ্রাম জেলাসভাপতি। খড়গপুর আইআইটি-এর এই প্রাক্তনী ১৯৮৯-১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ভারত সরকারের ন্যাশনাল বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন লিমিটেড (এনবিসিসি)-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। পরে চাকরি ছেড়ে ঝাড়গ্রামেই কনসালটেন্সি ফার্ম খুলেছেন। নয়াগ্রামের এক দেওয়ালে কুনারের নামের আগে ডা: লেখা নিয়ে বিতর্ক বাধে। কুনার নিজেই জানিয়েছিলেন তিনি পিএইচডি নন। তখন অবশ্য বিজেপি-র জেলা সভাপতি সুখময় স্বীকার করেছিলেন, একটা দেওয়াল লেখায় কো‌নও ভাবে ভুল হয়ে গিয়েছিল। পরে তা শুধরেও নেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন