ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনীতিতে প্রবেশ এবং এগিয়ে আসা নিয়ে এ বার বিশদ ব্যাখ্যা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জানালেন, রাজনীতিতে পারিবারিক পরম্পরায় তাঁর আপত্তি নেই। বরং তাতে উৎসাহ দেখিয়ে রবিবার তিনি বলেন, ‘‘আমি তো তাই চাই। কারণ নেতা আকাশে তৈরি হবে না। দিল্লি থেকেও আসবে না।’’
রবিবার বেলপাহাড়ির সভায় অভিষেকের রাজনীতিতে প্রবেশের প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সে নিজে আসতে চায়নি। আমি বলেছি, তোমরা না এলে কে করবে রাজনীতি?’’
রাজনীতিতে নতুন প্রজন্মের আগ্রহ নিয়ে চর্চা চলছে বহু দিন ধরেই। আবার এই প্রশ্নেই বারবার বিতর্কও হয়েছে। এসেছে ‘পরিবারতন্ত্রে’র প্রসঙ্গ। এ দিন ঝাড়গ্রামের নতুন প্রজন্মকে আহ্বান জানিয়ে মমতা বলেন, ‘‘আমরা পরিবারের ভাই বোনেরা শুরু থেকেই রাজনীতিতে আছি। এক জনকে নিয়ে এসেছি।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমরা তো এক দিন রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাব। ভাল ছেলেমেয়েদের রাজনীতিতে আসা উচিত।’’
জঙ্গলমহলে নেতা-সংগঠকের অভাব রয়েছে তৃণমূলের। এই সূত্রেই পরিবারের সদস্যদের রাজনীতিতে আসার কথা উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘‘ইন্দিরা গাঁধী যখন হেরে গেলেন, সে সময় আমি কলেজে রাজনীতি করি। পাড়ার বাইরে মিছিল করতে গেলে সিপিএম ভয় দেখাত। তখন বাড়ির ভাইবোনেরা মিছিল করতাম। নেতা হওয়ার জন্য নয়।’’ তার পরেই অভিষেকের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘সিপিএম আমাকে মেরে মাথা ফাটিয়ে, হাত ভেঙে দিয়েছিল। তখন রক্তমাখা ছবি দেখতে পেত অভিষেক।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, তখন থেকেই ঘরের ভিতর ঝাণ্ডা নিয়ে মিছিল করতেন অভিষেক। রাজনীতির মানসিকতা সে ভাবেই তৈরি হয়েছিল তাঁর। শহরের পাশাপাশি গ্রাম-গঞ্জ থেকেও ভাল ছেলেমেয়েদের রাজনীতিতে আসা প্রয়োজন বলে তিনি জানান।
এ বারের ভোটেও পরিবারতন্ত্র নিয়ে তরজা চলছে। রাহুল গাঁধীকে নিশানা করে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একাধিকবার এই অভিযোগ তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী-সহ বিজেপি নেতৃত্ব। সেই সূত্রে এ রাজ্যেও ‘বুয়া-ভাতিজা’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করেছেন তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য এই প্রশ্নকে অপ্রাসঙ্গিক বলে চিহ্নিত করে বলেন, ‘‘আমি তো পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সীদেরও বলি, ছেলেমেয়েদের রাজনীতিতে আনুন। শুভেন্দু অধিকারীও তো শিশির অধিকারীর ছেলে। ও তো নেতা হয়েছে।’’