বালুরঘাট কেন্দ্রের প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের হয়ে আজ, মঙ্গলবার ইটাহার ও বুনিয়াদপুরে সভা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনদিন পর, শুক্রবার ফের অর্পিতার হয়ে বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুরে প্রচারে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী। সব মিলিয়ে এক প্রার্থীর হয়ে চার চারটি প্রচার খোদ মুখ্যমন্ত্রীর। জেলার রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন, তাহলে কি বালুরঘাট নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুধু মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে নয়, ইতিমধ্যেই যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়ে কুশমণ্ডিতে সভা করানো হয়েছে। পাশাপাশি, অর্পিতার মনোনয়নের দিন থেকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, পুর্ণেন্দু বসু, গৌতম দেব, ব্রাত্য বসুর মতো একঝাঁক মন্ত্রী জেলা জুড়ে লাগাতার প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। একটিমাত্র কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রী থেকে রাজ্যের অন্য মন্ত্রীদের দিয়ে এতগুলি সভা করার প্রয়োজন হচ্ছে কেন, সেই প্রশ্ন ঘুরছে। তাহলে কি দলনেত্রী জেলা নেতৃত্বের উপরে ভরসা পাচ্ছেন না?
এই কেন্দ্রে দ্বিতীয়বারের জন্য অর্পিতাকে প্রার্থী করেছেন মমতা। অন্যদিকে, বামেরা প্রার্থী খুঁজে না পেয়ে রণেন বর্মণকে প্রার্থী করেছে। গত লোকসভায় তৃতীয় স্থানে থাকা বিজেপির ভোট শতাংশ কিছুটা বাড়লেও আজও সংগঠন পোক্ত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে গতবার চার লক্ষের বেশি ভোট পাওয়া তৃণমূল শিবির এবার কিসের ভয় পাচ্ছে? এর পিছনে জেলা নেতৃত্বের দিকেই আঙুল উঠছে। অর্পিতাকে ফের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণার শুরু থেকেই বেঁকে বসেন দলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র। এ নিয়ে মমতার সঙ্গে তাঁর মতানৈক্যও হয়। পরে অবশ্য মমতার হস্তক্ষেপে বিপ্লব অর্পিতার হয়ে প্রচারে সম্মত হন। জেলার রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, এর পরেও বিপ্লব-অনুগামীরা এখনও সেইভাবে অর্পিতার হয়ে প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েনি। সেটাই চিন্তায় ফেলেছে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে। মমতা সেই কারণেই এখানে বাড়তি মনোযোগ দিচ্ছেন। যদিও দলের জলা নেতা তথা মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা বলেন, ‘‘প্রচারে কোন নেতা নামলেন বা নামলেন না, তা বড় কথা নয়। দলনেত্রী একা থাকলেই যথেষ্ট।’’ অন্যদিকে, তাঁর উপর ‘ভরসা’ না থাকার বিষয়টি মানতে চাইলেন না বিপ্লব। তিনি বললেন, ‘‘ইলেকশন মানে যুদ্ধ। আর যুদ্ধ জিততে গেলে কিছু কৌশল নিতে হয়। এটা এই বছরের প্রচার কৌশল।’’ তাঁর বক্তব্য, প্রথমে একটু ক্ষোভ-বিক্ষোভ ছিল। তবে এখন আর কোনও ক্ষোভ নেই কারও। তাঁর আরও বক্তব্য, রাজ্য নেতৃত্ব দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরের, বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুরের সভায় মাঠ ভরাতে দায়িত্ব পড়েছে তাঁর উপরেই।
যদিও জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের অন্য একাংশের কথায়, আচমকা এত যে তেড়েফুঁড়ে নেমেছেন, এটা কিসের লক্ষণ তা সকলেই বোঝেন।