সোমবার রানাঘাটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
নোট বাতিল, জাতীয় নাগরিক পঞ্জি, জিএসটি। গ্যাসের দাম, সংবিধান পরির্তনের আশঙ্কা, মূল্যবৃদ্ধি। এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম।
বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ যে দিন কৃষ্ণনগরে জনসভা করে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন, তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই রানাঘাটে এ রকম একের পর এক বিষয় উত্থাপন করে পাল্টা আক্রমণে গেলেন তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার দুপুর দুপুর আড়াইটে নাগাদ রানাঘাট শহরের বাণী সঙ্ঘের মাঠে তৃণমূল প্রার্থী রূপালী বিশ্বাসের সমর্থনে সভা করতে আসেন অভিষেক। সভায় হাজির ছিলেন বিধায়ক শঙ্কর সিংহ, রাজ্যের মন্ত্রী রত্না ঘোষ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুণ্ডু, বিধায়ক সমীরকুমার পোদ্দার, রানাঘাটের পুরপ্রধান পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়েরাও। রূপালী বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে প্রার্থী করেছেন। আমি আপনাদের কাছে আশীর্বাদ চাইতে এসেছি। জয়ী হয়ে আপনাদের পাশে থেকে কাজ করতে যাই।”
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
রানাঘাট ও তার কাছেই কুপার্স ক্যাম্প নোটিফায়েড এরিয়ার মতো পুরসভা ছাড়াও আশপাশের কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাও তৃণমূলেরই দখলে। ওই সব এলাকা থেকেই কর্মীরা সভায় এসেছিলেন। অভিষেক দাবি করেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই এক মাত্র নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছেন। তাঁকে ধমকে-চমকে কিছু করা যাবে না। এই বাংলাকে গেরুয়া করা যাবে না।’’
অভিষেক আরও দাবি করেন, ‘‘বিজেপি কেন্দ্রে আবার ক্ষমতায় এলে সংবিধান পালটে দেবে। তারা আর নির্বাচন করবে না। তাই তাদের দেশ থেকে হটাতে হবে।’’ প্রত্যাশিত ভাবে টানেন জিএসটি-র প্রসঙ্গও। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘ওরা সাধারণ মানুষের কথা বলে। বিস্কুটের উপরে ১৮ শতাংশ জিএসটি বসানো হয়েছে। অথচ সোনার উপরে বসেছে তিন শতাংশ।’’
রাজ্যের সীমান্ত লাগোয়া জেলায় গিয়ে বারংবার জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) বলবৎ করার এবং অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা। এ দিন শাহের কৃষ্ণনগরের সভাতেও তার ব্যত্যয় হয়নি। অভিষেক দাবি করেন, ‘‘এনআরসি চালু করে ওরা অসমে ৪২ লক্ষ নাগরিকের নাম বাতিল করেছে। এই রাজ্যে চালু হলে ১০ কোটির মধ্যে তিন কোটির নাম বাদ দেবে। সেই হিসাবে রানাঘাট লোকসভা এলাকায় সাড়ে তিন লক্ষ মানুষকে বিতাড়িত করবে।’’
নোট বাতিল করে মোদী সরকার মানুষকে বিপদে ফেলে দিয়েছে বলে দাবি করার সঙ্গেই মূল্যবৃদ্ধি নিয়েও সরব হয়েছেন অভিষেক। তাঁর দাবি, ‘‘মোদীর পাঁচ বছরের জামানায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। ওরা আবার ক্ষমতায় এলে তা নাগালের বাইরে চলে যাবে। গ্যাস দু’হাজার টাকা হয়ে যাবে। কিন্তু মমতার নেতৃত্বে কেন্দ্রে সরকার এলে সেটা ৪০০ টাকা হবে।’’
চড়া রোদের দুপুরে অপ্রত্যাশিত কিছু না হলেও সভায় ভালই ভিড় হয়েছিল। কাল, বুধবার নরেন্দ্র মোদী সভা করার আগে এটাই সেমিফাইনাল হয়ে গেল, বলছেন তৃণমূল কর্মীরা।