আলাপ: রায়গঞ্জে বিয়ে বাড়িতে প্রচারে মহম্মদ সেলিম। —নিজস্ব চিত্র
যত কাণ্ড যেন চৈনগরেই। রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের হেমতাবাদ ব্লকের সীমান্ত ঘেঁষা ওই এলাকার বাসিন্দাদের ভোট টানতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে সাড়া পড়েছে। আগের দিন প্রচারে গিয়ে বাসিন্দা, দলীয় কর্মীদের হেঁশেলে ঢুকে আড্ডা জমান কংগ্রেেসর দীপা দাশমুন্সি। তার পরে প্রচারে আসেন বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরীও। শনিবার বাম প্রার্থী মহম্মদ সেলিম কখনও দুধের শিশুকে মায়ের কাছ থেকে কোলে তুলে নিয়ে আদর করলেন, কখনও বিয়ে বাড়ির মণ্ডপে, আমবাগানে ছোট ছোট সভা করলেন বাসিন্দাদের নিয়ে।
গোরুরা এলাকায় আগের দিন কংগ্রেস প্রার্থী প্রচার সেরেছেন। ওই গ্রামেরই অসমিনা খাতুনের রবিবার বিয়ে। এ দিন সেলিম তাঁদের বাড়ির উঠোনে বাঁধা বিয়েবাড়ির মণ্ডপে ছোট সভা করতে বসেন। বিয়েতে আসার জন্য বাম প্রার্থীকে নিমন্ত্রণও করেন অসমিনা। সেলিম তাঁকে আশীর্বাদ করেন। সেখানেই অসমিনার আত্মীয় জসমিনা বিবির দুই যমজ সন্তান আবদুল্লা এবং অাসমাকে কোলে নিয়ে আদর করেন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হুমকি, ভয় দেখানোর অভিযোগ ওঠে। অনেকেই ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ। বকেদা খাতুন, সলেমন আলির মতো গোরুরার অনেকেই অবশ্য জানান, সেই ভয় ধীরে হলেও কাটছে। সেলিম বলেন, ‘‘কাছাকাছি কোথাও কেন্দ্রীয় বাহিনীর শিবির করে রুট মার্চ করানো দরকার। বাসিন্দারা ভোট দিতে চাইছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটাধিকার না দিতে পারার প্রতিশোধ তাঁরা নেবেন।’’ এ দিন সেলিম সীমান্তের মানিকপাড়া, গোরুরা, আসমানহাট, মাকরহাট, মহিষাগাঁও চষে ফেলেন। কখনও বাইকে, কখনও গাড়িতে কাঁটাতার ঘেঁষা রাস্তা দিয়ে গাড়ি ছুটিয়েছেন। সেখান থেকে তিনি আসমানহাটে যান। পথে দলের স্থানীয় কর্মী প্রবীণ তফিজুল হুসেনকে দেখে গাড়ি থেকে নামেন। ওয়মানহাতে আমবাগানে সভা করতে যাচ্ছেন বলে জানান। গাড়ি থেকে দলের পতাকা বার করে তফিজুলের সাইকেলে লাগিয়ে দেন।
সীমান্ত ঘেঁষা চৈনগর এবং নওদা গ্রাম পঞ্চায়েতে অন্তত ৩০ হাজারেরও বেশি ভোট রয়েছে। সেই ভোট ব্যাঙ্ক বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর অন্যতম লক্ষ্য হয়ে উঠেছে। ছোট ছোট সভায় সেলিম তুলে ধরছেন দাড়িভিট কাণ্ড থেকে মালদহের আফরাজুলের খুন হওয়ার ঘটনা। দাড়িভিট-কাণ্ডের কথা তুলে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলকে বিঁধছেন, আবার ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে নৃশংস ভাবে খুন হওয়া অফরাজুলের ঘটনা তুলে বিজেপি সরকারকে তুলোধোনা করছেন।