ময়নাগুড়ির সভায় নরেন্দ্র মোদী। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে কাউকে ছাড়া হবে না বলে ময়নাগুড়ির সভা থেকে হুঁশিয়ারি দিলেন নরেন্দ্র মোদী। ওই মামলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এত ভয় পাচ্ছেন কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুললেন তিনি।
শুক্রবার বিকেলে জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির সভায় পৌঁছন নরেন্দ্র মোদী। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে তাঁর ‘চায়ের সম্পর্ক’। কারণ, তিনি চাওয়ালা। আর উত্তরবঙ্গ চায়ের জোগানদার। এ ভাবেই ময়নাগুড়ির জনসভায় বক্তব্য শুরু করলেন নরেন্দ্র মোদী। তার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ শানিয়ে বললেন, ‘‘এক জন চাওয়ালাকে এত ভয় কিসের?’’
এ দিনের সভা থেকে তৃণমূল এবং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগছেন মোদী। তাঁর কথায়, ‘‘যে পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি নিয়ে গর্ববোধ হত, আজ সেখানে হিংসা ঢুকেছে। বাংলার সংস্কৃতি নষ্ট করে দিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূল সরকার এই মাটির বদনাম করে দিয়েছে।’’
শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দরে বিকেল ৩টে ১০ নাগাদ নামেন নরেন্দ্র মোদী। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে পৌঁছন ময়নাগুড়ি।
বাংলায় মোদী: প্রধানমন্ত্রী কে কতটা চেনেন? খেলুন কুইজ
বাংলার সরকার ভয় পেয়ে গিয়েছে। কলকাতায় বসে থাকা দিদি যে ভয় পেয়েছেন, তা মোদীর জন্য নয়, আপনাদের জন্য। আপনাদের শক্তি, আমার প্রতি ভালবাসা দেখে ভয়ে পেয়েছেন উনি: প্রধানমন্ত্রী। দিদির এত অন্যায়, অত্যাচার সত্ত্বেও এখানে যে শক্তি আপনারা দেখাচ্ছেন, তা দেখে আমি বুঝতে পারছি, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু কেন বাংলার মাটিতে জন্মেছিলেন: মোদী। জমায়েত নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর। আমি মমতাদিকেও জিজ্ঞাসা করতে চাই, আপনি কি তিন তালাক বিরোধী আইন সমর্থন করেন? নাতি তিন তালাক প্রথা চলতে দিতে চান? প্রধানমন্ত্রী। কংগ্রেস ভুলে যাচ্ছে যে, রাজীব গাঁধীর আমলেও একই ভুল করেছিল তারা। শাহবানু মামলা ঘিরে যে ভুল সেইসময় করেছিল কংগ্রেস, আবার সেই পথে পা বাড়াচ্ছে: মোদী। কংগ্রেস বলছে, ক্ষমতায় এলে তিন তালাক বিরোধী আইন বাতিল করবে। অর্থাত্ কংগ্রেস তিন তালাক চলতে গেবে, মুসলিম মা-বোনেদের সর্বনাশ হতে দেবে: প্রধানমন্ত্রী। বাংলায় দাদাগিরির সরকার চলছে। চিটফান্ড দুর্নীতির তদন্ত নিয়ে মমতার এত ভয় কেন? দুর্নীতিগ্রস্তদের বাঁচাতে আর কোথায় কোথায় ধর্না দেবেন? দুর্নীতিগ্রস্ত এবং দুর্নীতিগ্রস্তদের রক্ষাকারীদের বাঁচানোর মঞ্চে পরিণত করা হয়েছে কলকাতাকে: মোদী। মহাজোট হল মহাভেজাল, আজ ফের বললেন মোদী। কিন্তু ঠগবাজদের শিকার সব পরিবারকে আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, যাঁরা গরিব মানুষের টাকা লুটেছেন, এই চৌকিদার একজনকেও ছাড়বে না: প্রধানমন্ত্রী। চিটফান্ড কাণ্ডে সর্বস্ব খুইয়ে কত মানুষ আত্মহত্যা করেছেন। তাঁদের পরিবার আজ দিদিকে প্রশ্ন করছেন, ঠগদের জন্য এত দরদ কেন? কটাক্ষ মোদীর। যারা গরিব মানুষের কোটি কোটি টাকা লুটেছেন, মানুষের সঙ্গে বেইমানি করেছেন, আজ তাদের পাশে দিদি। গরিব মানুষের কষ্টের টাকা যারা লুটে নিয়েছে, তাদের সমর্থন করছেন দিদি: মোদি। ত্রিপুররা মতো পশ্চিমবঙ্গেও এ বার বিজেপি ক্ষমতায় আসবে: মোদী। দিদি দিল্লি যাওয়ার কথা বলছেন, এ দিকে সিন্ডিকেট রাজে নাজেহাল মানুষ। এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হন: প্রধানমন্ত্রী। বাংলায় ২৩ লক্ষের বেশি পরিবার পাকা ঘর পেয়েছে। জলপাইগুড়িতে ৫ হাজারের বেশি পাকা ঘর তৈরি হয়েছে: মোদী। সস্তায় রেশন, বিনামূল্যে ওষুধ দেয় কেন্দ্রীয় সরকার: মোদী। শ্রমিক এবং কৃষকদের জন্য বাজেটে কী কী প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে, তা মনে করালেন মোদী। তৃণমূল হল কমিউনিস্ট সরকার পার্ট-২। দিদির জমানায় অবাধে দাদাগিরি চলছে। বামেদের মতো খুনের রাজনীতি করছে তৃণমূল: মোদী। শিলিগুড়ি পৌর নিগমের সঙ্গে কী ব্যবহার করছে এ রাজ্যের সরকার, তা আপনারা সবাই জানেন: প্রধানমন্ত্রী। চা-ওয়ালাকে এত ভয় কিসের দিদির? কটাক্ষ মোদীর। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে আমার চায়ের সম্পর্ক: মোদী। আজ বাংলাকে হিংসার জন্য চেনে গোটা দেশ: প্রধানমন্ত্রী। যে পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি নিয়ে গর্ববোধ হত, আজ সেখানে হিংসা ঢুকেছে। বাংলার সংস্কৃতি নষ্ট করে দিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূল সরকার মাটিকে বদনাম করে দিয়েছে। আজ ওদের জন্য অসহায় বোধ করছেন মানুষ। তা সত্ত্বেও পরোয়া নেই তৃণমূলের: মোদী। বিরোধীরা মানুষের হয়রানির কথা ভাবেন না। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কাজ করছে: মোদী। উত্তরবঙ্গ তথা সারা বাংলার মানুষকে আমার প্রণাম ও ভালবাসা জানাই। জলপাইগুড়ির এই পবিত্র ভূমিকে আমার প্রণাম: প্রধানমন্ত্রী। বাংলায় ভাষণ শুরু করলেন মোদী। কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী। ময়নাগুড়ি পৌঁছে ফালাকাটা-সলসলাবাড়ি জাতীয় সড়ক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন মোদী। হেলিকপ্টারে চড়ে ময়নাগুড়ির সভাস্থলে পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।