Lok Sabha Election 2019

#প্রধানমন্ত্রীহিসেবদাও: ভিডিয়ো ধারাবাহিক শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তোলার চেষ্টায় তৃণমূল

পেশাদারী মুন্সিয়ানায় তৈরি ভিডিয়ো। দৈর্ঘ মাত্র এক মিনিট ৭ সেকেন্ডের। কিন্তু তাতেই স্বয়ংসম্পূর্ণ এক তথ্যচিত্র যেন!

Advertisement

ঈশানদেব চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৯ ১৪:২৬
Share:

#প্রধানমন্ত্রীহিসেবদাও— এই শিরোনামে শনিবার দুপুর ১২টায় ভিডিয়োটা প্রকাশ করেছে তৃণমূল। ছবি ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।

সাদা-কালো ফ্রেম, ধূসর বাস্তবতা। চোখে-মুখে একরাশ বিষাদ নিয়ে হরিয়ানার প্রত্যন্ত প্রান্তের তরুণী প্রিয়া শোনাচ্ছেন নিজের স্কুলছুট হয়ে যাওয়ার আখ্যান। কত মেয়েকে অকালে পড়া ছাড়তে হল, হিসেব আছে? জিজ্ঞাসা প্রিয়ার। ঠিক সেখানেই ধূসর মুছে গিয়ে ফুটে উঠছে রং। হুগলির গ্রামে সবুজ পাড়, সাদা শাড়ির ঝুমুর উঠে বসছে সাইকেলের সিটে টুপ করে। মাকে হাত নেড়ে স্কুলের পথে চাপ দিচ্ছে প্যাডেলে।

Advertisement

পেশাদারী মুন্সিয়ানায় তৈরি ভিডিয়ো। দৈর্ঘ মাত্র এক মিনিট ৭ সেকেন্ডের। কিন্তু তাতেই স্বয়ংসম্পূর্ণ এক তথ্যচিত্র যেন!

#প্রধানমন্ত্রীহিসেবদাও— এই শিরোনামে শনিবার দুপুর ঠিক ১২টায় ভিডিয়োটা প্রকাশ করল তৃণমূল। দলের সমস্ত ফেসবুক পেজ, টুইটার হ্যান্ডল, ইউটিউব চ্যানেল, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ-সহ যাবতীয় সোশ্যাল মিডিয়া শাখায় একযোগে ছাড়া হল এই ভিডিয়ো। শুক্রবার সামনে আসা তৃণমূলের র‌্যাপ ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল যে গতিতে, শনিবার প্রকাশিত ভিডিয়ো তার চেয়েও বেশি তত্পরতায় ছড়িয়ে দিচ্ছে দলের আইটি সেল।

Advertisement

মাত্র এক মিনিট ৭ সেকেন্ডের ভিডিয়ো, তার মাধ্যমে তৃণমূল তুলে ধরার চেষ্টা করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘বেটি পঢ়াও, বেটি বচাও’ কর্মসূচির ‘ব্যর্থতা’। তার বিপরীতে তুলে ধরা হয়েছে বাংলার সেই ছাত্রীদের আখ্যান, যাদের স্কুলে পৌঁছনোর পথকে সুগম করে তুলেছে সবুজসাথী প্রকল্পের সাইকেল। এই বৈপরীত্যের ছবি তুলে ধরেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে হিসেব চাওয়া হচ্ছে, জনসাধারণকে হিসেব চাইতে বলা হচ্ছে।

এই একটা ভিডিয়োই তৃণমূলের সম্বল, এমন ভাবলে খুব ভুল হবে। ‘প্রধানমন্ত্রী হিসেব দাও’ হ্যাশট্যাগে আসলে এ দিন ভিডিয়ো সিরিজ লঞ্চ করল তৃণমূলের ডিজিটাল টিম। আগামী ৫০ দিনে প্রায় রোজ এই হ্যাশট্যাগেই নতুন নতুন ভিডিয়ো প্রকাশ করতে থাকবে বাংলার শাসকদল। প্রত্যেকটা ভিডিয়োয় নতুন নতুন প্রশ্নের মুখে দাঁড় করানো হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে।

তৃণমূলের এই ভিডিয়ো ধারাবাহিক প্রথম দিনেই বেশ আগ্রহের জন্ম দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সিরিজের প্রথম পর্বের সাফল্য দেখে দলের আইটি সেলের হাসি চওড়া। কিন্তু প্রায় ৫০ দিন ধরে ভিডিয়ো ধারাবাহিক চালানো তো মুখের কথা নয়! এত প্রস্তুতি নেওয়া হল কবে? রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা তথা দলের আইটি সেলের অন্যতম অভিভাবক ডেরেক ও’ব্রায়েন বললেন, “প্রস্তুতি চার মাস ধরে নেওয়া হয়েছে। সামগ্রিক পরিকল্পনাটা দলনেত্রীরই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক পেজ এবং টুইটার হ্যান্ডলের ফলোয়ারের সংখ্যা যত, পূর্ব ভারতে সোশ্যাল মিডিয়ায় তত ফলোয়ার আর কারও নেই। আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ডিজিটাল মাধ্যমটাকে খুব ভাল ভাবে বোঝেন। বোঝেন বলেই এই রকম প্রচারের কথা তিনি ভাবতে পেরেছেন।”

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ডেরেক আরও জানালেন, তৃণমূল এ বার ৩৬০ ডিগ্রি প্রচারের পরিকল্পনা নিয়েছে। দেওয়াল লিখন, পোস্টারিং, ছোট মিছিল, পথসভা, বড় মিছিল, ব্লক স্তরের সভা, বড় জনসভা, অডিও-ভিস্যুয়াল প্রচার, ডিজিটাল প্রচার-সহ প্রচারের মোট ১২টা মাধ্যমকে বেছে নেওয়া হয়েছে। সব ক’টি মাধ্যমেই সর্বশক্তিতে ঝাঁপাবে তৃণমূল। তরুণ ভোটারদের কথা মাথায় রেখে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে ডিজিটাল প্রচার।

তৃণমূলের ভিডিয়ো সিরিজের প্রথম পর্ব বুঝিয়ে দিল আরও একটা কথা— প্রচারের অভিমুখ এ বার আর শুধু বাংলাকেন্দ্রিক নয়, আঙ্গিকটা সর্বভারতীয়। এত দিন পর্যন্ত প্রচারে শুধু রাজ্য সরকারের ‘সাফল্যের’ কথাই তুলে ধরত তৃণমূল। এ বার প্রথমে তুলে ধরা হবে কেন্দ্রের ‘ব্যর্থতার কাহিনি’, তার প্রেক্ষিতে সামনে আনা হবে এ রাজ্যের পরিস্থিতির কথা। কয়েক দিন আগে প্রকাশিত নির্বাচনী ইস্তাহারেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, লড়াইয়ের আঙ্গিকটা এ বার সর্বভারতীয়।

(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেবাংলায় খবরজানতে পড়ুন আমাদেররাজ্যবিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন