শিলিগুড়ির কাওয়াখালির প্রধানমন্ত্রী সভায় কার্যত স্বীকার করে নিলেন, চা বাগানের জন্য কিছুই করতে পারেননি। ছবি এএফপি।
৮ ফেব্রুয়ারি ময়নাগুড়ির চূড়াভান্ডারের সভায় এসে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, উত্তরবঙ্গের সব চা বাগান খুলে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। দু’মাস পরে শিলিগুড়ির কাওয়াখালির সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি কার্যত স্বীকার করে নিলেন, চা বাগানের জন্য কিছুই করতে পারেননি। এর দায় অবশ্য রাজ্য সরকারের উপর চাপিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। বলেন, ‘‘অসমে আমাদের সরকার যে ভাবে চা বাগানের লোকেদের জন্য কাজ করছে সেই ভাবে এই রাজ্যেও কাজ করতে চাই। কিন্তু এখানে স্পিডব্রেকার দিদির জন্য কাজ করতে পারছি না।’’ এ দিন দিনহাটা সংহতি ময়দানের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘জোর করে মিথ্যা কথা বলছেন এক্সপায়ারি প্রধানমন্ত্রী। বিধানসভা ভোটের আগে ৭টি বন্ধ চা বাগান অধিগ্রহণের কথা ঘোষণা করলেও কিছুই করেননি।’’
প্রধানমন্ত্রী আশার কথা শোনাবেন, এই ভরসায় এ দিনের সভায় তরাই ও ডুয়ার্সের চা বলয় থেকে প্রচুর মানুষ এসেছিলেন। যদিও দিনের শেষে হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হয়েছে তাঁদের। তরাইয়ের গঙ্গারাম চা বাগান থেকে এ দিন সভায় যোগ দিতে এসেছিলেন মুনিরাম মুন্ডা। তিনি বলেন, ‘‘নেতারা আমাদের বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী অনেক কিছু ঘোষণা করবেন। আমাদের সুবিধা দেওয়ার কথা বলবেন। এ দিন সেগুলো কিছুই শুনলাম না। অনেক দিনের মজুরি, গ্র্যাচুইটি পাইনি। বছরের পর বছর পিএফ-ও জমা দিচ্ছে না মালিকপক্ষ। সেগুলো তো কিছুই বললেন না।’’ এ দিন মোদী বলেন, ‘‘আপনাদের এই চাওয়ালা চা বাগানের উন্নয়নের জন্য পুরোপুরি নিজেকে সমর্পণ করে দিয়েছে। আমি তৈরি আছি। শুধু স্পিডব্রেকার সরার অপেক্ষা করছি।’’
উত্তরে রাজ্যে সরকার গঠিত টি অ্যাডভাইজারি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান তথা পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘সারা জীবন অপেক্ষা করলেও আশা পূরণ হবে না। চা বাগানের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কোনও কাজ করেনি। রাজ্য সরকার বাগান শ্রমিকদের সমস্ত সুবিধা দিচ্ছে। বিভিন্ন প্রকল্পে তাঁদের খাদ্য থেকে স্বাস্থ্য, বিকল্প রোজগারের ব্যবস্থা করেছি আমরা। যা করার আমরাই করেছি। বিজেপি শুধু বক্তৃতা দেয়, কাজ করে না কিছুই।’’