প্রতীকী ছবি।
এক দিন আগেই পুলিশ ক্যাম্পে বোমাবাজি এবং গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের বাকচা। ঘটনায় গ্রেফতার হন ময়না দক্ষিণ মণ্ডলের বিজেপি সহ-সভাপতি অলক বেরা-সহ তিন বিজেপি কর্মী। বুধবার তাঁদের তমলুক আদালতে তোলে পুলিশ। বিচারক ধৃতদের পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। কিন্তু ভোটের আগে এলাকার এই পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত শাসক দল তৃণমূল। তাদের বক্তব্য, নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিঘ্নিত হলে ভোটেও তার প্রভাব পড়তে পারে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ময়নার বাকচা গ্রামের মধ্যপল্লিতে টিউবওয়েল বসানোকে কেন্দ্রে করে গত সোমবার সকালে তৃণমূল এবং বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ বাধে। সে সময় স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য মিনু মাজির স্বামী বাণেশ্বর মাজিকে বিজেপি সমর্থকেরা মারধর করে বলে অভিযোগ। এ নিয়ে বিজেপি সমর্থকদের বিরুদ্ধে ময়না থানায় অভিযোগ দায়ের করে তৃণমূল। ওই রাতে তমলুকের এসডিপিও’র নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী অভিযুক্তদের ধরতে গেলে বিজেপি সমর্থকেরা তাদের লক্ষ্য করে ব্যাপক বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। বাকচা হাইস্কুল সংলগ্ন পুলিশ ক্যাম্পেও বোমা ছোড়া এবং পুলিশের পাঁচটি গাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। আহত হন চণ্ডীপুর থানার ওসি ইমরান মোল্লা-সহ কয়েকজন পুলিশ কর্মী।
ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অলক এবং বিজেপি’র দুই কর্মী মহাদেব বাড়ই, মিলন মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশকে খুনের চেষ্টা, খুনের হুমকি, সশস্ত্র জমায়েত হয়ে আক্রমণ, পুলিশের কাজে বাধা, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, লুঠপাঠ ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। ওই তিনজন ছাড়া অন্তত ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
দলীয় নেতা-কর্মী গ্রেফতারের প্রতিবাদে আজ, বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি’র তমলুক জেলা সাধারণ সম্পাদক নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতাদের নির্দেশে পুলিশ আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করছে। এর প্রতিবাদে পুলিশ সুপারের অফিসের সমানে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে।’’
তবে বিজেপি’র অভিযোগ অস্বীকার করে ময়না ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুব্রত মালাকারের বক্তব্য, ‘‘বিজেপি অস্ত্র, বোমা নিয়ে আমাদের কর্মীদের আক্রমণ করছে। অভিযুক্তদের ধরতে গেলে পুলিশকেও আক্রমণ করছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি মানুষকে সন্ত্রস্ত করে এলাকা দখল করতে চাইছে। ভোট করাতে গেলে তো এলাকায় শান্তি ফেরানোর প্রয়োজন। পুলিশের কাছে আমার সেই আর্জিই করছি। শান্তি যে ফিরবে, সে নিয়ে রাজ্য পুলিশের উপরে আমাদের ভরসা রয়েছে।
এ দিকে, সোমবার রাতের পর থেকেই বাকচা এলাকায় বাড়তি পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। তমলুকের এসডিপিও সব্যসাচী সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘বাকচার পরিস্থিতি এখন শান্ত। এলাকার নিরাপত্তার জন্য সব রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’