ছবি: সংগৃহীত।
লিখিত অভিযোগ হয়নি। তবে ভোটের দিন কেশপুরে ভারতী ঘোষকে হেনস্থার ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই মামলা রুজু করল পুলিশ। ভারতীকে উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিশের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাতেও পৃথক স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া মানছেন, ‘‘পুলিশ একাধিক সুয়োমোটো মামলা রুজু করেছে। তদন্তও শুরু হয়েছে।’’
ভোটের কেশপুরে দিনভর অশান্তির কেন্দ্রে ছিলেন ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী ভারতী। সোমবার গোটা তল্লাট ছিল ঠান্ডা। নতুন করে কোথাও অশান্তি হয়নি। ভারতীও রবিবার সন্ধ্যা থেকে দাসপুরের বাড়িতেই ছিলেন। সোমবার সকালে এসেছিলেন ঘাটাল কলেজের স্ট্রংরুমে। সেখানে স্ক্রুটিনি চলাকালীন আগাগোড়ায় উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন আইপিএস। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কেশপুরে পুনর্নির্বাচনের দাবি তোলেন ভারতী। বলেন, “শুধু কেশপুর নয়, পিংলা ও পাঁশকুড়া পশ্চিমের বেশ কিছু বুথেও ব্যাপক ছাপ্পা হয়েছে। বিশেষ করে যেখানে বিজেপির কোনও এজেন্ট ছিল না। তাই ওই সব বুথে পুনরায় ভোট করানোর জন্য কমিশনে জানানো হয়েছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির খোঁচা, “ওঁর তো নিবার্চন কমিশনকে ধন্যবাদ জানানো উচিত। টাকা, শাড়ি ও বহিরাগত লোকজন নিয়ে ধরার পড়ার পরেও ওঁর প্রার্থিপদ বাতিল করেনি কমিশন।”
রবিবার কেশপুরে দফায় দফায় বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন ভারতী। গোটগেড়িয়া, কেশপুর সদর-সহ একাধিক এলাকায় অশান্তি হয়েছে। পুলিশকে লক্ষ করেও ইট ছোড়া হয়েছে। দোগাছিয়ায় তৃণমূলকর্মীদের বিক্ষোভ মাত্রা ছাড়ায়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ভারতীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ জওয়ানেরা শুরুতে লাঠিচার্জ করেন। পরিস্থিতি তেতে ওঠে। ভারতীর কনভয় লক্ষ করে ইটবৃষ্টি শুরু হয়। তখনই সিআইএসএফ জওয়ানেরা কয়েক রাউন্ড গুলি চালান। গুলিতে বক্তিয়ার খান নামে এক তৃণমূলকর্মী জখম হন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
গোটগেড়িয়া, কেশপুর সদরের ক্ষেত্রে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ‘দুষ্কৃতীদের’ বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। গোটগেড়িয়ায় ভারতীকে তৃণমূল কর্মীরা ধাক্কাধাক্কি করে বলে অভিযোগ। প্রাক্তন পুলিশ সুপার মাটিতে পড়ে যান। তাঁর নখ উপড়ে যায়। পরে বিজেপি প্রার্থীকে উদ্ধার করতে এসে পুলিশও বাধা পেয়েছিল, ইটবৃষ্টির মুখে পড়েছিল।
গুলিচালনার ঘটনায় জখম তৃণমূল কর্মী বক্তিয়ারের দাদা আলমগির খান রবিবারই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, এ ক্ষেত্রে অভিযোগ রয়েছে ভারতী-সহ বেশ কয়েক জন বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ৪-৫ রাউন্ড গুলি চলেছে। গুলি চালনার ঘটনায় অভিযোগকারী আলমগির খানের সঙ্গে কথা বলেছে পুলিশ। সুস্থ হলে জখম বক্তিয়ারের সঙ্গেও কথা বলা হবে। যাঁদের বিরুদ্ধে গুলি চালনার অভিযোগ, সেই সিআইএসএফ জওয়ানদের সঙ্গেও কথা বলবে পুলিশ। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘গুলি চালনার ঘটনার তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’