ভোটকর্মীদের ‘আশ্বস্ত’ করতে গভীর রাত পর্যন্ত চেষ্টা চালাতে হল প্রশাসনিক কর্তাদের। নিরাপত্তা নিয়ে তাঁদের ভয় দূর করতে সমান ভাবে সক্রিয় থাকতে হল নবান্নকেও।
উপযুক্ত নিরাপত্তার দাবিতে উত্তর দিনাজপুরে কয়েক দিন আগে শুরু হয়েছে ভোটকর্মীদের ‘আন্দোলন’। এই ভোটকর্মীরা রাজ্য সরকারের কর্মী বা স্কুলশিক্ষক। সর্বোপরি সেই জেলা, যেখানে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রিসাইডিং অফিসার তথা শিক্ষক রাজকুমার রায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। ট্রেনের ধাক্কায় তিনি মারা গিয়েছেন বলে জানানো হলেও সরকারি কর্মচারীদের একটা বড় অংশ মনে করেন, ঘটনাটি স্বাভাবিক নয়। লোকসভা ভোট শুরুর মুখে উপযুক্ত নিরাপত্তা এবং সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়নের দাবি তুলছেন বিভিন্ন জেলার ভোটকর্মীরা।
পরিস্থিতির গুরুত্ব আঁচ করে গত ৮ এপ্রিল লিখিত ভাবে মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও)-এর দফতরকে জানাতে হয়েছিল, নির্বাচন কমিশনের নজরদারিতে সর্বত্র নিরাপত্তার উপযুক্ত ব্যবস্থা থাকবে। ভোটকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে কমিশন। সেই বিবৃতি সব জেলাশাসকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তার পরেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত প্রশাসনিক শীর্ষ কর্তাদের সক্রিয় থাকতে হয়েছে। বিভিন্ন জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলে ভোটকর্মীদের উদ্দেশে আশ্বাস দিয়েছেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। তাঁদেরই এক জনের কথায়, ‘‘অন্তত ছ’টি জেলায় পরিস্থিতি উদ্বেগজনক ছিল। ভোটকর্মীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে নিরাপত্তার আশ্বাস দিতে বলা হয়েছিল জেলাশাসকদের।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
প্রশাসনের শীর্ষ মহলের সন্দেহ, সংশ্লিষ্ট ভোটকর্মীদের পিছনে বিজেপি এবং সিপিএমের মদত রয়েছে। রাজ্যকে চাপে রাখতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এই কৌশল। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘সরকারি কর্মচারীরা যে-কোনও দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য। উপরন্তু নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ উপেক্ষা করলে প্রশাসন তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করতে পারে। তা জেনেও কার্যত আন্দোলন করছেন ওই ভোটকর্মীরা।’’
অন্য দিকে, আজ, বৃহস্পতিবার কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের জন্য প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী না-থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ। সংগঠনের রাজ্য কমিটির যুগ্ম সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী জানান, ভোটকর্মীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত বা কেউ আক্রান্ত হলে আন্দোলন হবে।