‘বাহিনী চলে যাবে, থাকব আমরাই’

নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পরে দশ দিন কেটে গেলেও অবশ্য এখনও কেন্দ্রীয় বাহিনী কোচবিহারে পৌঁছয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯ ০৬:১৪
Share:

প্রচারে: ঘুঘুমারিতে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র

কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করলে পাল্টা ফল পেতে হতে পারে—কার্যত এই ভাষাতেই বিজেপিকে ‘হুমকি’ দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। মঙ্গলবার কোচবিহারের ঘুঘুমারির গাঙ্গালেরকুঠিতে এক কর্মিসভায় তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী ক’দিন থাকবে? ভোটের পরে তাঁদের আবার চলে যেতে হবে। তার পরে আমাদেরই এক সঙ্গে থাকতে হবে। তাই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ভোটের দিন সকাল সকাল পরিচয় পত্র সঙ্গে নিয়ে ভোট দিন।” তারপরেই তাঁর মন্তব্য, ভোটের পরে বিজেপি কর্মীরা পালিয়ে যাবেন। রবীন্দ্রনাথের যুক্তি, “রাজ্য সরকারের উন্নয়নের সুবিধে নিয়েছেন সবাই। যিনি বিজেপি করেছেন, তাঁর পরিবারের কেউ সবুজ সাথীর সাইকেল গিয়েছে। কন্যাশ্রী পেয়েছেন। তাই বিজেপি কর্মীকে তাঁর পরিবারের লোকেরাই তাড়িয়ে দেবে। সে জন্যেই পালিয়ে যাবেন।”

Advertisement

মঙ্গলবার ভোট প্রচারে তুফানগঞ্জে গিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন রবীন্দ্রনাথবাবু। তিনি বিজেপি কর্মীদের মাঠে-ময়দানে করলার জুস খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন মন্ত্রী। এদিন ফের তিনি বিজেপি নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে দেওয়ায় নতুন করে বিতর্ক উঠে এসেছে। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “তৃণমূল নেতারা এখন ধমকানো-চমকানোর রাজনীতি করছেন। কারণ যেখানে যাচ্ছেন সেখানেই মাঠ ফাঁকা পাচ্ছেন। মানুষ নানা কাজের জবাব চাইছেন। তাই এ নিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে গিয়েই এমন মন্তব্য।” সেই সঙ্গে তাঁর আরও দাবি, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্য পুলিশকে দাঁড় করিয়ে রেখে ভোট লুঠ করেছে তৃণমূল। কেউই নিজের ভোট দিতে পারেননি। কেন্দ্রীয় বাহিনী তা করতে দেবে না। সবাই যাতে ভোট দিতে পারেন নির্বাচন কমিশনের নজরদাড়িতে সেই কাজ করবে তারা। তাতে উদ্বেগ বেড়েছে তৃণমূলে।

নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পরে দশ দিন কেটে গেলেও অবশ্য এখনও কেন্দ্রীয় বাহিনী কোচবিহারে পৌঁছয়নি। আজ, বুধবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর একটি দল কোচবিহারে পৌঁছনোর কথা। তার আগেই ওই বাহিনী নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়ে গিয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সব থেকে বেশি উত্তেজনা ছড়িয়েছিল দিনহাটায়। ওই এলাকায় একাধিক খুন ও জখমের ঘটনা ঘটে। গীতালদহ ও ওকরাবাড়ির মতো জায়গায় দফায় দফায় সংঘর্ষ গোটা রাজ্যের নজর কেড়েছিল। এ ছাড়া, মাথাভাঙা- ২ নম্বর ব্লকে এক তৃণমুল কর্মী খুনের ঘটনা ঘটে। সবমিলিয়ে যে এলাকাগুলি উত্তেজনাপ্রনণ সেখানেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হতে পারে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর। এই অবস্থায় তৃণমূল প্রচারে জোর দিয়েছে। রবীন্দ্রনাথ প্রতিদিনই একাধিক সভায় যোগ দিচ্ছেন। এদিনও সকাল সাড়ে ৮ টাতেই তিনি পৌঁছন তিনি গাঙ্গালেরকুঠিতে। সেখানে জমায়েত কর্মীদের সামনে রাজ্য সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের তালিকা তুলে ধরে ভোট চান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের জেলা সহ সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদ। তিনি নির্বাচন বিধি ভেঙে সেখানে নানা কাজের আশ্বাস দিয়ে ভোট চান।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন