উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন।— নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের ভোট পরিস্থিতি একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে। পশ্চিমবঙ্গের সব বুথকে অতি স্পর্শকাতর ঘোষণার দাবিতে সরব হয়েছে বিজেপি। পাশাপাশি কংগ্রেস-বামেরাও একই সুরে অভিযোগ করে আসছে, এ রাজ্যে আইনশৃঙ্খালার অবনতি ঘটেছে। তাদের আরও দাবি, সব বুথে যথেষ্ট সংখ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে শনিবার দিল্লি থেকে কলকাতায় এসে রাজ্যের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে ‘বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স’-এ বৈঠকে বসেন উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন।
ওই বৈঠকে তৃণমূলের তরফে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার, সিপিএমের রবিন দেব, কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্য-সহ মোট ৯টি দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সব দলের সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলেছেন উপ নির্বাচন কমিশনার। এ দিনের বৈঠকে বিরোধীরা এক সুরে অভিযোগ জানিয়েছে, অতীতে এ রাজ্যে ভোটের সময় হিংসার ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যের সব বুথকে অতি স্পর্শকাতর ঘোষণা করতে হবে। পাশাপাশি নিরাপত্তার জন্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীও চাই।
বৈঠক শেষে বিরোধীদের কটাক্ষ করে পার্থবাবু বলেন, “রাজ্যে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি থাকা সত্ত্বেও বিরোধীরা নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে ছলচাতুরির আশ্রয় নিচ্ছে। কখনও কোর্টে যাচ্ছে। কখনও দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাচ্ছে।” তাঁর কথায়: “তৃণমূল চায় সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। রাজ্যের বুথকে অতি স্পর্শকাতর ঘোষণা করার দাবি মানে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে চরম অপমান করা।”
অন্য দিকে প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “মানুষ ভোট দিতে চায়। সব বুথকেই স্পর্শকাতর হিসেবে ঘোষণা করা হোক। গুন্ডা-গদ্দার দিয়ে যাতে ভোট না হয়, তা নির্বাচন কমিশনকে ব্যবস্থা নিতে হবে। অনেকে নকুলদানার গল্প শোনাচ্ছে। আমরা ও সব দেখতে চাই না।”
আরও পড়ুন: ‘ম্যায় ভি চৌকিদার’! নতুন স্লোগানে রাহুলকে পাল্টা মোদীর
এ দিনের সর্বদলীয় বৈঠকের আগে শুক্রবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) আরিজ় আফতাব আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের সব জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং রাজ্যের প্রসাশনিক কর্তাদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে বৈঠক করেন। কমিশন সূ্ত্রে খবর, জেলার রিপোর্ট নিয়ে খুব একটা খুশি হতে পারেনি কমিশন। এ বিষয়টি তিনি উপ নির্বাচন কমিশনারকে জানিয়েছেন। আইনশৃঙ্খার বিষয়ে সুদীপ জৈন নিজেই রাজ্যের পুলিশ এবং প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। মুখ্যসচিব মলয় দে, স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য, ডিজি বীরেন্দ্র, এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) সিদ্ধনাথ গুপ্ত, কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা সেই বৈঠকে থাকবেন।
আরও পড়ুন: ‘তৃণমূলের এক জনই প্রার্থী, তিনি মমতা’, কর্মিসভায় বললেন অভিষেক
বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের দাবি, ‘‘সব বুথকে অতি স্পর্শকাতর ঘোষণা করতে হবে। পুলিশের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে যেন ভোট না হয়। তৃণমূল পাড়ার ক্লাবের থেকেও ছোট। ওরা ভয় পেয়েছে। এখনও নির্বাচন বিধি ভঙ্গ হচ্ছে চিঠিপত্র ভিডিয়ো ক্লিপিংস আমরা জমা দিয়েছি।’’
(মালদহ, দুই দিনাজপুর, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং সহ উত্তরবঙ্গের খবর, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা খবর পড়ুন আমাদের রাজ্য বিভাগে।)